করোনাকালীন পরিস্থিতিতে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির বিল ‘মরার উপর খারার ঘাঁ’ বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক উদ্যোগের প্রধান উপদেষ্টা ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন। তিনি আজ ২১ জুন (রোববার) এ মত প্রকাশ করেন।
এ সময় সুজন বলেন, বিশ্বব্যাপী চলমান করোনা ভাইরাসের মহামারী বাংলাদেশেও তার ভয়াল আঘাত হেনেছে। সরকার সাধারণ ছুটির মাধ্যমে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে যার ফলে সাধারণ জনগণের একটি উল্লেখযোগ্য অংশের আয় রোজগার প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে। মানুষ জীবন মৃত্যুর মাঝখানে অবস্থান করে দিন যাপন করছে। এমতাবস্থায় সরকার জনগণের উপর বাড়তি খরচের চাপ কমাতে তিন মাসের জন্য সেবা সংস্থাসমূহের বিল আদায় বন্ধ রেখেছিল। সরকারের এই ঘোষণায় জনগণ দুর্যোগকালীন সময়ে অনেকটা স্বস্তিতে ছিল। হঠাৎ করে বিভিন্ন সেবাসংস্থা কর্তৃক ৩০ জুনের মধ্যে সকল প্রকার বকেয়া বিল সম্পূর্ণ পরিশোধ করার জন্য চাপ সৃষ্টি করছে নচেৎ গ্রাহকের বিশেষ করে বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করারও হুমকি প্রদান করছে।
এছাড়া এর আগেও পোস্টপেইড মিটারগুলোতে বিভিন্ন মাসের বিলের সাথে গড়বিলের নামে মাত্রাতিরিক্ত বিল প্রদান করা হয়েছে। মিটার পরিদর্শন না করেই বিল প্রস্তুত করার কারণে সমস্যাগুলো সৃষ্টি হয়েছে বলেও মত প্রকাশ করেন তিনি।
এতে করে নগরীর পোস্টপেইড মিটারের আওতাধীন লাখো গ্রাহক সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়েছে। দেখা যাচ্ছে যে অধিকাংশ গ্রাহকের কাছে প্রতি মাসের বিলের তুলনায় তিন থেকে চার গুণ বেশি বিল প্রদান করা হয়েছে যা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক এবং অগ্রহণযোগ্য। অথচ এর আগে তারা গ্রাহকের গড়বিলের সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিলেও তা রক্ষা করে নাই। এতে গ্রাহকদের মধ্যে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়ছে যা করোনা মহামারীকালীন সময়ে ‘মরার উপর খারার ঘাঁ’র মতে।
আজ সকালে বিদ্যুৎ এবং ওয়াসার চিফ ইঞ্জিনিয়ারের সাথে ফোনে বিস্তারিত আলোচনা করেন সুজন। তিনি বর্তমান পরিস্থিতিতে নগরবাসীর আর্থিক দুরবস্থার কথা বিবেচনা করে তিন মাসের বিল একসাথে গ্রহণ করার পরিবর্তে সম্পূর্ণ বিলকে কিস্তি আকারে প্রদান করার সুযোগ দানের জন্য দাবি জানান। এছাড়া গ্রাহকের গড়বিলকে সংশোধন করে দ্রুততার সাথে সমাধান করার বিনীত আহবান জানান।
তিনি বিলের বিপরীতে কোনো প্রকার সারচার্জও কর্তন না করার অনুরোধ জানান। তাছাড়া অন্যায়ভাবে কোন গ্রাহকের লাইন কর্তন করা হলে নাগরিক উদ্যোগ দর্শকের ভূমিকা পালন করবেন না বলেও মত প্রকাশ করেন তিনি।
বিদ্যুৎ এবং ওয়াসার চিফ ইঞ্জিনিয়ার বলেন, করোনা ভাইরাস সৃষ্ট পরিস্থিতিতে সংক্রমণ এড়াতে মিটার রিডারদের গ্রাহকদের বাড়িতে না যাওয়ার নির্দেশনা ছিলো। ইতিমধ্যে অনেক মিটার রিডার করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ওয়াসার একজন মিটার রিডার করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। এ পরিস্থিতিতে মিটার পরিদর্শন না করে বিল প্রস্তুত করার কারণে গ্রাহকদের নিকট অতিরিক্ত বিল প্রদান করা হয়েছে সে কারণে দুঃখ প্রকাশ করেন তারা।
তাছাড়া যদি কোন গ্রাহক মনে করেন তার মিটারের বিপরীতে অতিরিক্ত বিল প্রদান করা হয়েছে সেক্ষেত্রে সেই গ্রাহককে সরাসরি সংশ্লিষ্ট অফিসে গিয়ে বিলটি সংশোধন করে জমা দেওয়ার পরামর্শ দেন তারা। চিফ ইঞ্জিনিয়াররা বলেন, করোনাকালীন পরিস্থিতিতে কোনো গ্রাহকের পকেট থেকে অন্যায়ভাবে টাকা আদায় করা হোক, সেটা কখনোই সেবা সংস্থাসমূহ চাইবে না। চিফ ইঞ্জিনিয়াররা গ্রাহকদেরকে আতঙ্কিত না হয়ে কষ্ট করে হলেও বিলসমূহ পরিশোধ করার সবিনয় অনুরোধ জানান।
এছাড়া করোনার কারণে কোনো গ্রাহক যদি যথাসময়ে বিল পরিশোধ করতে ব্যর্থ হন সেক্ষেত্রে সারচার্জবিহীনভাবে গ্রাহকের বিল পরিশোধের ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস প্রদান করেন তারা। বিজ্ঞপ্তি
Uncategorized