উৎপাদন কমলেও খরচ বাড়ছে
বিদ্যুৎ সংকটে চট্টগ্রামের ইস্পাত কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। দেশের বড় ইস্পাত কারখানাগুলোর অবস্থান চট্টগ্রামে। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড ও মিরসরাই এলাকার ইস্পাত কারখানায় দুই দিন ধরে উৎপাদন কম-বেশি ৩০ শতাংশ ব্যাহত হচ্ছে।
বিদ্যুৎ বিপর্যয়ে বিপাকে শিল্পখাত। প্রতিদিন লোডশেডিংয়ের কারণে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে ছোট-বড় অনেক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। উৎপাদন সচল রাখতে চালাতে হচ্ছে জেনারেটর। সে জন্য জ্বালানি তেল কিনতে বাড়তি খরচ হচ্ছে। দিনে পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না। জেনারেটরের তেল কিনতে কিনতে কারখানার মালিকেরা ফতুর হয়ে যাচ্ছেন।
লোডশেডিং বেড়ে যাওয়ায় জেনারেটর চালিয়েও উৎপাদন পুরোপুরি সচল রাখা যাচ্ছে না। প্রচ- গরমে শ্রমিকেরা অস্থির হয়ে পড়ছেন। তাতে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। পরিস্থিতির শিগগিরই উন্নতি না হলে ব্যবসা-বাণিজ্যে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
একবার বিদ্যুৎ চলে গেলে পুনরায় উৎপাদন শুরু করতে বেশ কিছুটা সময় লাগে। তাতে কর্মঘণ্টার অপচয় হয়। বারবার লোডশেডিংয়ের কারণে কাঁচামাল নষ্ট হওয়ার ঘটনাও ঘটছে। আবার ঘনঘন লোডশেডিংয়ের কারণে কারখানার যন্ত্রপাতিও নষ্ট হচ্ছে।
লোডশেডিংয়ের কারণে কারখানায় উৎপাদন কার্যক্রম সচল রাখতে তাঁরা জেনারেটর ব্যবহারে বাধ্য হচ্ছেন। এতে ডিজেল বেশি লাগছে। বিশ্ববাজারে ডিজেলের দাম কমেছে। তাই আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে স্থানীয়ভাবে ডিজেলের মূল্য পুনর্নির্ধারণ করা হলে সবাই উপকৃত হবেন।
ডলার ও জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি এবং গ্যাস-বিদ্যুতের সংকটের কারণে ব্যবসার খরচ ব্যাপক হারে বেড়ে গেছে। এ পরিস্থিতিতে করোনাকালের মতো ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন করে প্রণোদনা দরকার। সেটি না হলে অর্থনীতির পুনরুদ্ধার হবে না।
স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণের মাধ্যমে বিদ্যুৎ খাতে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে এই সরকারের আমলে। সরকার বলছে বিশ্বব্যাপী জ্বালানিসংকট এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা বাজারের ব্যাপক ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার কারণে অপ্রত্যাশিত এই লোডশেডিং। আমদানি নির্ভর জ্বালানিকেই দুষছেন এই সংকটের জন্য।
চলমান লোডশেডিংয়ের কারণে সারা দেশে সবাই ক্ষতিগ্রস্ত। সবার মনে প্রশ্ন কবে কমবে লোডশেডিং? জনজীবনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে হবে শিগগির। একদিকে তাপদাহ ও অন্যদিকে লোডশেডিং। দেশের মানুষ সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছে, যা কাক্সিক্ষত নয়। পরিস্থিতি প্রশমন ও লাঘবে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে যা যা করা দরকার তা করতে হবে সরকারকে।