ফাগুনের আমন্ত্রণে কমলার অব্যয়
মিসির হাছনাইন
ফাগুনের আমন্ত্রণে সেজেগুজে ফুলগুলো
ফুটলো যখন, একা একটা মানুষ দেখলো:
পৃথিবীতে ভালোবাসা নেমেছে বাসন্তী রঙের
খুলে রাখা বুকের স্পর্শ কত নরম সে ব্যথা
বাতাসে উড়ে গেছে, নিঃশ্বাসের কাছাকাছি
সে ঠোঁট মনে পড়ে কবিতায় লেখা ভুল চুম্বন
নগর কেমন শাড়ির ভাঁজে ঢেকেছে নাভি!
পলাশের বনে কোন পুরুষ হারিয়েছে রূপ
বয়স্ক শীতে আঁকিবুঁকি কত লক্ষ শিশির?
ফাগুনের বিরক্ত আকাশ সব করেছে বন্দি
কে গো তুমি ফুল সুন্দরী একা একাই মরো,
চেয়ে দেখো ঝরা ফুলদের পোড়া পারফিউম
বুক ভর্তি বিশ্বাসে বসন্ত নগরে কমলার অব্যয়..
উৎপল
বশির আহমেদ
মাথার ওপর রোদের কুচকাওয়াজ,
ঝরাপাতার দুঃখ সেলায় দক্ষিণা বাতাস।
চোখের ভেতর নেতানো নদী,
নৈঃশব্দ্যের শোকসভা ভেঙে দিয়ে শুকনো
গাছে জেগে ওঠে ফাল্গুনের রিয়েলিজম।
প্রকৃতির গন্ধ পেলে আমি
পাখি হয়ে যাই অথবা মানুষ!
দুঃখ নদীর বুকে ফুটে ওঠে উৎপল,
বিষাদের মেঘ ভেসে ভেসে
মিশে যায় দূরের পাহাড়।
এভাবে হারায়ো না নিজেকে
মাজহারুল ইসলাম
অনিন্দিতা,
জানি, জেগে আছো।
রাতের মশারি ভেদ করা জ্যোৎস্না গায়ে মেখে
জানালার ফাঁক গলে
বড়ো চোখে চেয়ে আছো এখন ও
সারাদিনের ক্লান্তি দু চোখে মেখে
নুয়ে পড়া পৃথিবী দিব্যি ঘুমিয়েছে,
মৃত্তিকার বুকে মাথা রেখে ঘুমিয়েছে নির্জন পাথাড় ।
তোমার চিন্তার বন্দরে
ভিড় ঠেলে জেগে ওঠা আনাড়ি ভাবনারা
ধারালো দাঁতে কুটকুট কেটে চলে
বুনন শাড়ির আঁচল ।
রাতশেষে সুবেহ-সাদিকে যদি ঘুম চলে আসে
তুমি জেগেই থেকো
অপচয়ে ফুরিয়ে যেয়ো না
এভাবে হারায়ো না নিজেকে।
বসন্তের উৎসব হয়ে বাঁচো
নাহিদ সরদার
নিভে যাওয়ার
সব রকম প্রস্তুতি সেরে
জ্বলে উঠেছিলে প্রেম রঙ;
বাতাসের আভাস রেখে বুকে।
নিভে যাওয়া আগে পোড়ালে তুমুল।
ঝরাপাতার মতো নাড়িয়ে
দোষ কাঁধে উড়ে গেল বসন্ত বাতাস।
আর তুমি
নতুন পাতার রঙ।
বসন্তের উৎসব হয়ে বাঁচো।
যাপিত জীবন
সনজিত দে
যাপিত জীবন কখনো থেমে থাকে না
হাজারো কষ্টের নদী পার হতে হয়
যেমন সকাল বেলার মিঠেল রোদের উষ্ণতা
তপ্তদুপুরে কল্পনাই করা যায় না।
কিছু মানুষ অথচ সে তপ্তরোদে
কতই খাটুনি খেটে যাচ্ছে।
ভাগ্য নামের সোনার হরিণের দেখা মেলে না
দিন যায় রাত যায় এমনি করে
সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে-
মানুষ দৌড়াতে দৌড়াতে জীবন সায়াহ্নে এসে
আর দৌড়াতে পারে না, ম্রিয়মান হয়ে পড়ে শরীর
হাজারো মানুষের ভিড়ে আপন হয়ে
কেউ কাছে আসে না।
কেউ পাশে বসে না
মুখে মাস্ক পরে পাশ দিয়ে হেঁটে যায় আপনজনেরা।
তারপরের কাহিনি অজানা থেকে যায়
কেউ জানে না স্রষ্টা ছাড়া ।