স্মৃতির অনুভব
বজলুর রশীদ
শুনশান নাড়িপোতা মাটির ঘ্রাণ,
হাওয়ায় ভেঙে ভেঙে ছড়িয়ে থাকা ভুলের চিঠি,
কে, কবে, কোথায় লুকিয়ে রেখেছে
অস্পষ্ট কিছু ছবি;
খেয়াল করতেই দেখি-
হারিয়ে যাচ্ছে আলো -দূরের কাছের,
দূরে কোথাও দৃষ্টির পথ হেঁটে যায়,
কোথাও মানুষ নেই সাদা মনের,
কেউ উঁচু কেউ নিচু! শুধু ভাবি,
মানুষ গড়ার মধ্যে কোনো প্রশ্ন নেই তো!
চলে যাওয়ার আগে ঘুরে তাকাই আবার,
আলোরা কি সত্যিই হারিয়ে যায় এভাবেই!
হাওয়ায় ভেসে যাওয়া স্মৃতির অনুভব…
মশাল
নান্নু পারভেজ
এই অশুদ্ধতা শেষ পর্যন্ত প্রতীকী চিহ্ন হবে
মনে হয় যেন পার হয়ে যাচ্ছে সীমানা।
ফিরে আর আসবে না এই শীতের প্রকোপ
বসন্তের আগমনী বার্তা তোমাকে জানায় সম্ভাষণ।
ললাটের চিহ্নটা প্রতীকী রাখতে চাই না
অশুদ্ধতা হতে শুদ্ধতার মধ্যে করতে চাই বসবাস।
নিশ্চিত জেনে নাও আবার ফিরবে ইচ্ছের
পায়রাগুলো বসবে জলের ওপর।
পানকৌড়ির মতো খাদ্য অন্বেষণে চলে যাবে
এক মহাদেশ হতে অন্য মহাদেশে।
মনে হবে দীর্ঘ মিছিলে হাঁটতে হাটতে চলে যাচ্ছি
নক্ষত্রলোক।
তুমি তখন মশাল জেলে বসে আছো
আমার প্রতীক্ষায়।
প্রতীক্ষার মিছিলে ধ্বনিত হবে ধ্বনিত হচ্ছে
শোনা যাচ্ছে বিজয়ের গান।
অমুদ্রিত অনুরাগ
সাইয়্যিদ মঞ্জু
আপনি পাগল নাকি !
হ্যাঁ আমি পাগল
জীবন সমীকরণে কেবলি একটি নিরন্তর দীর্ঘশ্বাস
চাপা পড়ে রোজ হৃদয় গহীনে
অমুদ্রিত ভালোবাসা সৃতির চিঠির ভাঁজে ভাঁজে
আত্মগোপনেই আছে নিষ্ফল প্রেমিক…
ঈশ্বর-মানুষ
অলোক আচার্য
রোদ নিভে গেলে
মানুষও ঈশ্বর হয়; ঈশ্বর মানুষ
যারা বলেছিল
এই পথে হেঁটে আসতে; এখানে মৃত্যু নেই!
অমরাবতীর অমৃতে ভাসে বেহুলার ক্ষরণ
তবু সে চায় গাঙুরের জল; টুপটাপ বৃষ্টির মতোন!
নগরে সাদা ফুলে প্রিয় ফাল্গুনী বসন্ত
মিসির হাছনাইন
নগরে সাদা ফুলে প্রিয় ফাল্গুনী বসন্ত
তোমাকে খুব যতন করে কুড়িয়ে নিবো,
বেদনায় ঝরে যাওয়ার আগে না ছিঁড়ে
গন্ধ শুঁকে রেখে দিবো হৃদয়ের বোয়াম ভরে।
জীবনের প্রতিটা দিন চিঠি লিখি প্রিয়তমা,
অগোছালো জ্যোৎস্নায় অসহায় গাছটা মারা গাছে!
শেষ ইচ্ছেটা বলতে পারে নি অকস্মাৎ শীত বিদায়ে
আমি তোমারে লিখি,, নগরের সাদা কালো সুখ আহ্লাদ
যে পাখিটা দেখেছিলাম নাম জানি না ঠিক, কোন
গাছে যে তার ঘর ছিল, তোমায় নিবো সেই অরণ্যে
নগরে সাদা সাদা ফুলে প্রিয় ফাল্গুনী বসন্ত
ভালোবাসার পূর্ণতায় নীলপদ্মে প্রেম জন্মে
সাদা পাপড়ির চোখ জলে টলমল সরোবর
পোড়া আগুনের ভাষা
বশির আহমেদ
গর্হিত অন্ধকারে হেঁটে যাচ্ছে আলোর সময়!
আমি বৃক্ষের জীবন পাঠ করি অথবা পাখির,
সবুজের পাঠশালায় মানুষের পদচিহ্ন খুঁজি।
কত শতাব্দী কেটে গেছে আলো অন্ধকারে,
পথে পথে মানুষের আকৃতি দেখি অথচ মানুষ দেখি না।
অবাসযোগ্য শহর
মৃত্যুর কোরাস গাইতে গাইতে দিগ্বিদিক শহরের
কালো কাক,
চারিদিকে দমন পীড়ন,
চক্রান্তের মৃদু বাতাস ফিসফিস করে পাড়ায় পাড়ায়,
কারো বোঝার ক্ষমতা নেই পোড়া আগুনের দার্শনিক ভাষা।
পুঁজি
জাকির সেতু
কেন যেন চোখ বুজে হাসি,
মিথ্যা অভিনয়টাকে বড্ড ভালোবাসি,
কেন যেন একা একা ঘুরি চারদিক,
সংগোপনে খুঁজে পাই লোক একাধিক ।
প্রিয়তমা দূরে থাকো সুখে থাকো তুমি,
রাতের গল্প আছে মানবে কি শুনি,
বিবর্ণ দিনগুলো জমা থাকে বুকে,
কষ্টগুলো সঙ্গী করে ঘুরি ধুকেধুকে,
দেখার কেউ নেই সান্তনা খুঁজি,
ছোট ছোট স্বপ্ন হয় যেন পুঁজি ।
অধর
সুব্রত চৌধুরী
তোমার উষ্ণ অধর ছুঁলেই
তুমি গুটিয়ে যাও লজ্জাবতীর মতন,
মুখাবয়বে খেলা করে বেনীআসহকলা।
আর তা দেখে আমি কী যে পুলকিত হই !
কেমন করে প্রকাশ করি বলো?
ইন্দ্রধনু আমার খুব প্রিয়
তোমার মুখাবয়বে আমি
আজীবন দেখতে চাই
বেনীআসহকলা।
তোমার উষ্ণ অধর আমি ছোঁবই ছোঁব।