কবিতা

স্বর্গীয় প্রেম

আদিল সাদ

যখনই ভাবতে শিখলাম ভবঘুরে নেশা,
আমায় সন্ন্যাসী করে দিল,
কোনো কবিতা হয়ে,
একটি ভাঙা গড়া নদীর নৈঃশব্দে।
স্রোতের টানে আঁকড়ে আঁকড়ে,
বুকে জড়িয়ে রাখতো,
কোনো নির্বাসিত জীবনের অমরত্ব
ভালোবাসার স্বর্গীয় প্রেম।

আজ নির্বাসিত জীবনে এই প্রেমই
যুগলবন্দী কোন হৃদয়ের প্রেরণা,
কোনো নদীর স্বচ্ছ জলের মতো
ভালোবাসার স্বর্গীয় প্রেমের উপমা।
আমার প্রেম, আমার ঈশ্বর,
আমার ধর্ম, আমার ভালোবাসা,
আমার আসক্তি, ভক্তিতে, উক্তিতে,
বচন-প্রবচনকে বিশ্বাসী করে।
হয়তো কেউ এসে নিষ্ঠুর নিবিড়
শূন্যতা ঘিরে লিখে দিয়ে যায়,
এক একটি কষ্টের নীল কবিতা।

 

 

নিঃশব্দের শেকড়

মুন্সী আবু বকর

প্রাচীন এক চত্বরে
একাকী দাঁড়ায় সময়
হাঁসফাঁস করা আধুনিকতার বাইরে
নিজের ছায়া নিজেই গাছের
মতো বহন করে।

জলহীন নলকূপের পাশে
সময় নয়, এক দর্শন শ্বাস নেয়
সরলতার আলো,
প্রকৃতির কাঁধ
অভিমানহীন সহনশীলতা।

পরিবর্তন আসে,
হিম হয়ে গলে যায় অতীত।
কিন্তু শেকড়েরা
নিভৃত মৃত্তিকায়
এখনও নিঃশব্দে বেঁচে থাকে।

 

অসুখ

আহাম্মদ উল্লাহ

অসুখে মরে অশ্বত্থ;
গায়ে ছড়িয়ে অমরবেল, মিসলেটো।
গুল্মলতা মরে স্বর্ণলতার
জ্বরে সৌন্দর্য সোহাগে।
অসুখে মরে যুবক, দীঘল নির্ঘুম রাতে
বালিকার স্মরণে।
ঘর ভেঙে ঘর বাঁধে হাসিমুখে
নীলের নিচে।

জ্বর নেমে গেল ঔষধে তেতো মুখ,
পায়চারি প্রকোষ্ঠ বারান্দায় ;
ঘুম ভাঙে অর্ধরাতে
প্রবল ঝড়োমেঘ জোছনায়।
বেহালার সুর, তানপুরা মৃদু
বৈরাগী স্বভাব সুর
খঞ্জন হয়ে রাঙা করে বুক।

অসুখ বাড়ে ফসলে,
পরজীবি সোহাগে
রাঙা পোকা আর অতি সাধারণে।

অসুখ বাড়ে সংসার পাঠে
সমতলে মাঠে,
গৃহ নির্মাণে।

 

মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে

রূপক বরন বড়ুয়া

বড় অবাধ্য আগাছার লতাপাতা
ফলফুল দেবার মুরোদ নেই
শুধু জড়িয়ে জড়িয়ে চুষে খায়
বৃক্ষের রস, ফলবতী গাছ।

কী অপ্রতিরোধী! জট খুললে
ফুঁসে ওঠে ভেতরে ভেতরে
শাণায় দাঁত, তারপর সুযোগ পেলে
মূলের গভীর কাটে।

এখন সবখানে ছেয়ে যাচ্ছে, এরা
তার তলে আঙিনায় সাপের মহড়া
দারুণ ক্ষমতা ! ছিন্নমূল
সরিয়ে রাখে; ঈশের মূল।

মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে মূর্তিমান পাপ
সৃষ্টির কাননে মেলছে অশনির ছায়া

রোদ খুঁজছে সবুজের
গেরস্থালি, গর্জন, সেগুন।