মাটির মানুষ
বিটুল দেব
অর্ধেক জীবন হেলাফেলায় শেষ হয়েছে
আর অর্ধেক পৃথিবী থেকে পাবো কি না
কোনো গ্যারান্টি নেই;
সীমারেখা নেই অল্প প্রজ্ঞায় পা-িত্যের।
এই মর্মব্যথায় সারাক্ষণ জ্বলে পুড়ে নিদ্রা ভেঙে
দেখে পাঠকের মুখ, দেখে সহকারীর সহজ জীবন।
জেগে উঠেছে… পাথর চাপা উদ্ভিদের মতো
তোতাপাখির বিদ্যা বিসর্জন দিয়ে
গাম্ভীর্যের গভীরতায় গড়ে ওঠে
সরল সাদা মাটির মানুষ।
কত সহজে হাতছাড়া হয়ে গেছে সময়
যা ছিল সঞ্জীবন শব্দের সাধনা।
শেখার শক্তি আছে বলেইÑ
বিন্দু বিস্তারের রসালো স্বপ্ন।
বাংলাদেশ আর তুমি
আবু আফজাল সালেহ
সাঙ্গুর মতো ভালোবাসা নুয়ে পড়েছে আমার হৃদয়ে
কষ্টগুলি পাল তুলেছে বাঁকে বাঁকে
সবুজ বর্ণালীর মধ্যে নীল প্রবাহ
সৃষ্টি করেছে রহস্যময়ী অতলান্তিক।
আলোময় তারাদের সরিয়ে
সৃষ্টি হয়েছে যেন মোহনীয় আমাজন
কী অপূর্ব সাঙ্গু! কী অপরূপ বাংলাদেশ!
স্বর্গের দরজা সাঙ্গু
বাংলাদেশের স্বর্গ বান্দরবান
আর তুমি তো আমারই স্বর্গ।
বাংলাদেশ আর তুমি মিলেমিশে একাকার।
অনন্ত ঠিকানা
হাসান নাজমুল
একটি কবিতা আর এই মাঝরাত খুবই আপন,
অজস্র নৈঃশব্দ্য তৈরি করে
চুম্বকের মতো টানে কাছে;
এই রাত জানে আমি এক নৈঃশব্দ্য-প্রেমিক
এ কবিতা জানে আমার সমস্ত বেদনা
প্রতিটি পঙক্তির শরীরে কীভাবে নিতে হয় মেখে,
এ রাতের গভীরতা আমার স্বপ্নের ভূমি,
যে ভূমিতে দাঁড়িয়ে ফেলেছি দীর্ঘশ্বাস
যে ভূমির ভিতর রেখেছি লুকিয়ে গোপন কথা,
এ কবিতা আমার অস্তিত্ব;
কবিতাবিহীন আমি যেন এক শূন্য!
এই মাঝরাত আর এ কবিতা অনন্ত ঠিকানা।
শ্বাসরুদ্ধ স্বাধীনতা
পবিত্র মহন্ত জীবন
চোখের সামনে খুন, গুম, রক্তপাত, বর্বরতা –
পুরনো শকুনের উৎপাত,
আতঙ্ক বিষ্ময় কালো আঁধারে ঢেকে যায়
পৃথিবীর ছোট্ট শহর। আলোহীন অন্ধকারে
শিয়াল তীক্ষ্ণ চোখ শকুনেরা নখর খামচে ধরে।
এ কেমন স্বাধীনতা ? অবৈধ দৈত্যের উন্মাদ –
অশুভ, অন্ধ সমাজ, কণ্ঠে শ্বাসরুদ্ধ আবৃত্তি
ব্যর্থ, অনীহা ; ঈশ্বরবঞ্চিত বিলীন সমস্ত সুখ।
শ্যামলতা
রবিন ইসলাম
শ্যামলতা
তোমার কৃষ্ণ কেশের আবরণে মিশে আছে হৃদয়ের অমলিন ঘ্রাণ,
যেন গোধূলি আকাশে জমে থাকা অদৃশ্য সুবাস।
আমি আতরের মাদক গন্ধে ডুবে তাকিয়ে থাকি
তোমার মদির চোখের গভীরে,
আর পেলব ঠোঁটের নিঃশব্দ আহ্বানে।
সেই অমর রেখাচিত্রেই নির্ধারিত হয়েছে
আমাদের প্রেমের মেরাজ
যেখানে দেহ নয়, শুধু আত্মারই মিলন অনন্ত।
মামিফিকেশন
অমল বড়ুয়া
আগুনে উত্তাপ ছিল বলে….
তোমার চোখে বরফ জমাতে চেয়েছি
জলের সমুদ্রে ডুবে যেতে যেতে
এক নিপুন নিরাশায়
অনন্ত বাসনায়
অ্যালবাট্রসের বেদনাহত ডানা
নিরুপায়;
হমাদায়….
বিকীর্ণ বিবশ হৃদয়ে
দুঃখের দো-আঁশে ঈষের ফলায়
ফোটাতে চেয়েছি ব্রহ্মকমল
খরায় চৌচির মৃত্তিকায়
অ্যাডিপোসিয়ারে
অস্থিমজ্জায় অবিকল আমি
মামিফিকেশনে।