কবিতা

আমি আবার কদম হব

সাজ্জাদ সাদিক

কদম হব, আমি আবারও কদম হব এই বর্ষায়
সুরভী-মুগ্ধমন্ত্র পড়ে শুনাব তোমায়,
মৌসুমী মোহ-মায়ায় ঘর ছেড়ে তুমি উঠে আস নির্জনে,
যেখানে একা ঠায় আমি আছি দাঁড়ায় বিজন প্রান্তরে
মধুমক্ষিকা মন যেখানে কানে কানে প্রণয়ের কথা বলে
অপেক্ষায় কুৃঁমড়ো ফুল শ্রাবণ বাতাসে দুলে।

অথবা আমি আবারও কদম হব এই বর্ষায়
অবহেলায় মলিন হয়ে ঝরে যাব অতীতের মত পুনরায়
তুমি না হয় বিগত বিকেলগুলো নিমিষে ভুলে গেলে
তুমি না হয় কদমগাছ অতিক্রম করে নিভৃতে চলে গেলে
মাড়িয়ে জীবনের সব রং,নিভিয়ে সব ঘ্রাণ বর্ষার
তবুও এমন বাদলা ব্যস্ত দিনে তোমাকে না দেখা হতাশার।
তাই আমি আবারও কদম হব।

 

মধুবালা

আহাম্মদ উল্লাহ

একদিন সমুদ্র আমায় ডেকেছিল
কাছে-ছুটি নেই যে জীবনে;
সুতোয় বাঁধা স্বপ্ন সকল-মাঘের
রাতে পূর্ণিমায় নির্জনে নোনা জলের কাছে।
মধুবালা তুমি নীল জলরাশি,
তার দুই রূপ নির্জন-গর্জন;
নীলরঙা নাবিক আমি,
গাত্রবর্ণ মিলে দুই হৃদয়ে।

একদিন অরণ্যে আমায় ডেকেছিল
কাছে ছুটি নেই যে জীবনে;
বনের ছায়ায় ফুটেছিল এক বুনোফুল
চাঁদ পূর্ণিমায় ঢালে গন্ধ-সুধা, করে আকুল।
পৃথিবীতে যত ফুল ফোটে জন্মায়
যত তরুলতা, বৃক্ষরাজি;
বন-কমলের মত রক্তিম আভা দেহ জুড়ে তার;
মোমের জোছনা রাতে।

এক মেয়ে নাম তার মধুবালা;
গায়ে তার সহস্র শতাব্দীর অন্ধকার
আষাঢ়ে চুল, সবুজের মত প্রশস্ত ললাট
বেদানার রঙে রক্তিম দেহ এক আরব্য রজনীর
পাঠে দেখা মেলে গল্পের আসরে।

মধুবালা, মধুবালা বলে কতকাল আমি ডেকে গেছি
বন-বনান্তরে, পাহাড়-সমতলে, নদী-সমুদ্রে,
চুম্বক মেরুর প্রান্ত থেকে সূর্যের অস্তাচলে।
লোক লোকান্তরে কেউ জানে না আমি জানি;
মধুবালা নাম তার।

 

 

শ্মশান পোড়া গন্ধ

রুদ্র সাজেদুল করিম

পুড়ছে বাঁশ
পুড়ছে গাছ
পুড়ছে দেখো ঘৃত

দেহ পোড়ে অহরহ
চিতা পুড়ে যত্রতত্র।
শবযাত্রায় একলা দেহ
শেয়াল কুকুর খাচ্ছে দেখো।

ঈশ্বর এখন এখানে এসো না
শ্মশান পোড়া গন্ধ তুমি সইতে পারবে না।