জিপার
সুহিতা সুলতানা
গ্রীস্মের খরায় ঝলসে যাচ্ছে নদী ও পথ। তৃষ্ণার্ত
জনপদে খুলে পড়েছে আর্দশের জিপার! প্রেমহীন
দৈত্যর নগরে অচেনা হাওয়ায় উড়ে যাচ্ছে
মহাকাব্যের নায়ক। অভিশাপ মাথায় নিয়ে দৌঁড়ে
যাচ্ছে ভোকাট্টা ঘুড়ি! যে দিকে চোখ যায় বৃষ্টির
জলের সাথে অদেখা আয়নায় ধূসর ও অস্পষ্ট হয়ে
ভেঙে পড়েছে করিডর! অগণিত মানুষের দেশে
ছোট হতে হতে হাতের তালুতে উঠে আসে দেশ!
নখের ডগায় স্বপ্নহীন ধ্রুপদী নকশা, প্রতিহিংসার
অনলে অচেনা হয়ে ওঠে ভূমি। ভেসে আসা মেঘ
জলে ভেজা পাথরের রূপ কতটা অচেনা হয়েছে
দ্যাখো। শ্যাওলার মত ভেসে থাকা জীবনে তোমার
কোনো মূল্য নেই! চিন্তার ভেতরে একটা নিঝুম
সন্ধ্যা জড়িয়ে ধরেছে দু‘পা! এক মাতালও ভীষণ
চিন্তিত হুল্লোড় দেখে!
তোমার শব্দ হব
অমল বড়ুয়া
এ সবাক পৃথিবীর ধুসর ধুলোয়
নিরবতার মৌনতায় শব্দ ঝঙ্কারে নৈঃশব্দে্েযর কলরবে
আমি তোমার শব্দ হব…
অবিনশ্বর শব্দের নশ্বর অবসুপ্ততায়
অনিন্দ্য অনুরণন আর
অপার আনন্দে
নিরঞ্জন মোহমুগ্ধতায়
মনহারি উচ্ছ্বল দৃষ্টিপাতে বিকীর্ণ
অন্তর গহীন…
মাংস-অস্থি-মজ্জা-হৃদ অতল
বিন্দু বিন্দু প্রেম দুঃখ পুলক অনুভবে
মাতাল কিংবা টালমাটাল।
নিস্তব্ধতার অতল মুখরতায়
আমি তোমার নৈঃশব্দ্যের শব্দ হবো।
মানুষ বদলের দৃশ্য
বজলুর রশীদ
কিছু কিছু মুহূর্তে নিপুণ আয়োজন-
একগু”ছ বৃক্ষরাজি আঁকিয়ে যায়
সুন্দরের আল্পনায়।
জেগে উঠবে নতুন গান…
ফুলেল ঘ্রাণ গিলে গিলে মৌমাছিজাত,
মৌচাকের শিরোনাম ধরে
অন্তত ফুলের নির্যাস হও
বাগানে পায়ের ফলক ফেলে
প্রজাপতি প্রেমে এগিয়ে যাও ;
ফুলে —
ভরসার সচল আঙুল রেখে
এখনও সৌরভ ছড়ায়
প্রতিটি প্রস্ফুটিত সরোবর এঁকে দাও।
ভালোবাসি,ভালোবাসি দ্যুতিময় ভুবনে
মানুষের কাছে কতটুকু ঋণশোধ ?
শূন্যতার সীমানা
আলী প্রয়াস
পাহাড়ে ছড়িয়ে পড়ে বুনো বেতসের গন্ধ
প্রাকৃতিক শূন্যতা বয়ে আনে নিশীথের নৈরাশ্য;
বৃক্ষের শাখায় গুনগুন করে হাওয়া,
বাঁশির সুরে হারায় শব্দ, জলরাশি জানায় ইতিহাস।
চোখে গভীর সায়াহ্ন গীত, হৃদয়ে যুদ্ধের দহন
হায়, পৃথিবী কি আর ফিরে পাবে তার বুকের শান্তি!
গ্লাসে লুকিয়ে থাকা বৃষ্টি, শিলাতে ভেসে যায় চিত্র,
যুদ্ধের আগুনে পুড়ে সিঁথি, রূপগুলো নিঃশেষ।
হায়, নদীজল তীরে উঁকি দেয় মানবতার ভয়
এ-যাবৎ কী হারাতে চায় তা? অতীতের দান?
জগতের শাশ্বত স্বপ্নে সে ফিরবে নাজ্জ
নীরব বাতাসে ঝরে পড়ে পূর্ণিমা রাতের প্রান্ত।