নিজস্ব প্রতিনিধি, পটিয়া :
কথিত ক্রসফায়ারে পটিয়া উপজেলার কচুয়াই ইউনিয়নের ভাইয়ারদিঘী এলাকার প্রবাসী মো. জাফরকে হত্যার অভিযোগে পটিয়ার আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার হারবাং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আমিনুল ইসলাম ও চকরিয়া থানার ওসি মো. হাবিববুর রহমানকে প্রধান আসামি করে মামলাটি করা হয়। রোববার সকালে পটিয়া জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বিশ্বেশ্বর সিংহের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন প্রবাসী জাফরের মামা ও বোয়ালখালী উপজেলার বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা আহমদ নবী। শুনানি শেষে বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে চট্টগ্রামের সিআইডি পুলিশকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
৩১ জুলাই রাতে সেনাবাহনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিংহা মোহাম্মদ রাশেদ হত্যার ২ দিন আগে প্রবাসী জাফরকে ক্রসফায়ারে হত্যা করা হয় বলে পরিবারের দাবি।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কচুয়াই ইউনিয়নের কথামৌজা গ্রামের মো. আবদুল আজিজের পুত্র মো. জাফর দীর্ঘদিন ধরে ওমান প্রবাসে ছিলেন। দেশে করোনাভাইরাস শুরুর আগে ওমান থেকে জাফর দেশে ফিরেন। কিন্তু লকডাউনের কারণে জাফর আর বিদেশে যেতে পারেনি। ৩১ জুলাই রাতে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিংহা মোহাম্মদ রাশেদ খুনের ২দিন আগে ২৯ জুলাই রাতে ওমান প্রবাসীকে পটিয়ার বাড়ি থেকে সাদাপোষাকধারী কিছু ব্যক্তি তুলে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে প্রবাসীর কাছ থেকে হারবাং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আমিনুল ইসলাম ৫০ লাখ টাকা দাবি করে। কিন্তু প্রবাসীর পরিবার ওই টাকা দিতে পারেননি। ফলে ২ দিন পর প্রবাসীর পরিবারের কাছে চকরিয়া থানা পুলিশ ফোন করে লাশ নিয়ে যাওয়ার জন্য সংবাদ দেন। প্রবাসীর পরিবার ও আত্মীয়স্বজন চকরিয়া থানা থেকে লাশ গ্রহণ করে দাফন করে। প্রবাসীর পরিবারের দাবি পুলিশ তাদের দাবিতে ৫০ লাখ টাকা না পেয়ে ওমান প্রবাসীকে ইয়াবা ব্যবসায়ী সাজিয়ে ক্রসফায়ারের নামে হত্যা করেছে।
পটিয়া জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বাদির পক্ষের আইনজীবী নূর মিয়া জানিয়েছেন, ক্রসফায়ারের নামে ওমান প্রবাসীকে চকরিয়ায় নিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে পরিবারের দাবি। প্রবাসী জাফরের মামা মুক্তিযোদ্ধা আহমদ নবী বাদি হয়ে আদালতে মামলাটি করেন। বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য সিআইডিকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
পটিয়া থানার ওসি বোরহান উদ্দিন জানিয়েছেন, চকরিয়া থানা পুলিশ পটিয়ায় এসে ওমান প্রবাসীকে ধরে নিয়ে ক্রসফায়ার দেওয়ার বিষয়টি তাদের জানা নেই।
উল্লেখ্য, সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিংহা মোহাম্মদ রাশেদ খুনের ঘটনায় বর্তমানে গ্রেফতার হয়ে তদন্তের স্বার্থে র্যাবের হেফাজতে রয়েছে প্রধান আসামি পটিয়া উপজেলার বাসিন্দা পুলিশ পরিদর্শক মো. লিয়াকত ও বোয়ালখালী উপজেলার বাসিন্দা টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ দাশ।