নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার
আজ সোমবার কক্সবাজার পৌরসভার নির্বাচন। কে হতে যাচ্ছেন পৌর পিতা। পৌর এলাকাসহ জেলার সবদিকে এ আলোচনাই চলছে। মেয়র পদে ৫ জন প্রার্থী অংশগ্রহণ করলেও মূলত দুজনের মধ্যেই লড়াই হবে এমনটি আশা করছেন সাধারণ ভোটাররা।
তারা হলেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মাহাবুবুর রহমান চৌধুরী ও নারিকেল গাছ প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মাসেদুল হক রাশেদ। এই দুজনের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের কথা জানালেন অধিকাংশ ভোটার। তবে নিশ্চিতভাবে মন্তব্য করতে কেউ রাজী হননি।
ইতোমধ্যে নির্বাচনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করে নির্বাচনের সরঞ্জামাদি কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে দিয়েছেন নির্বাচন কমিশন। এবারে নির্বাচনে ৫ জন মেয়র প্রার্থী, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৫৮ জন ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১৬ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বলে জানিয়েছেন জেলা রিটার্নিং ও নির্বাচন কর্মকর্তা।
এবারের নির্বাচনে পৌরসভার ১২ ওয়ার্ডের ৪৩টি ভোটকেন্দ্রের সব কটি কেন্দ্রকেই অতি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে পুলিশ প্রশাসন। নির্বাচনকে ঘিরে কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অতি ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোয় ১৮ জন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পাঁচ প্লাটুন বিজিবি, র্যাব ও পুলিশের অতিরিক্ত টহল রাখা হয়েছে।
কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শিমুল শর্মা জানান, পৌরসভার ১২ ওয়ার্ডে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে পৌরসভার ৪৩টি কেন্দ্রে ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ হবে। পৌরসভার ৪৩ কেন্দ্রের ২৩টিকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। নির্বাচনে মোট ৯৪ হাজার ৮০২ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৪৯ হাজার ৮৭৯ জন ও নারী ভোটার ৪৪ হাজার ৯২৩ জন।
তিনি আরও জানান, নির্বাচনে ১২ কেন্দ্রে ১২ জন ম্যাজিস্ট্রেট ও ৩ জন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট, ৩জন ভ্রাম্যমাণ ম্যাজিস্ট্রেট থাকবে। এছাড়া পাঁচ প্লাটুন বিজিবি সদস্যসহ র্যাব, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন।
জানা গেছে, কক্সবাজার পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড কুতুবদিয়াপাড়ার ভোটকেন্দ্র মুহিউচ্ছুন্নাহ দাখিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা ২ হাজার ৫৬১।
এ বিষয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, পৌরসভার ৪৩টি কেন্দ্রের প্রতিটিকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে সার্বক্ষণিক উপস্থিত থাকবেন পুলিশের ১ জন উপপরিদর্শক (এসআই), ৩ জন কনস্টেবল ও ১২ জন আনসার সদস্য। প্রতিটি ওয়ার্ডে একজন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে স্ট্রাইকিং ফোর্সের পাশাপাশি র্যাব, বিজিবি ও পুলিশের পৃথক টহল থাকবে।
১ নম্বর ওয়ার্ডের সমিতি পাড়ায় ইসলামিয়া রিসার্চ সেন্টার (কওমি মাদ্রাসা) কেন্দ্র, দক্ষিণ কুতুবদিয়াপাড়া ইসলামিয়া দারুসসুন্নাহ মাদ্রাসা, ২ নম্বর ওয়ার্ডের বিমানবন্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র, এয়ারপোর্ট পাবলিক হাইস্কুল কেন্দ্র, সৈকত বালিকা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রকে অতি ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
এসব কেন্দ্রে অন্তত ২২ হাজার ভোটার রয়েছেন। অন্যদিকে, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কস্তুুরাঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের পেশকারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বার্মিজ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, টেকপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডের শহীদ তিতুমীর ইনস্টিটিউট কেন্দ্রকেও অতি ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
জয়লাভের বিষয়ে শতভাগ আশাবাদী মাহাবুবুর রহমান চৌধুরী বলেন, তিনি টানা ২১ বছর ধরে পৌরসভার কাউন্সিল, প্যানেল মেয়র ও ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তা ছাড়া গত তিন বছরে পৌরসভার ৩৯ কিলোমিটার পাকা সড়ক, ড্রেনসহ অন্তত ৫০০ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে।
অপর তিনজন স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হলেন, জগদীশ বড়ুয়া (হেলমেট), জোছনা হক (মোবাইল ফোন) ও মো. জাহেদুর রহমান (হাতপাখা)।
পৌরসভা নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এস এম শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘ইভিএমের এ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। কোনো কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’