নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার »
ছোট ছোট মিছিল নিয়ে এক জায়গায় জড়ো হয়ে কক্সবাজার শহরের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে মহাসমাবেশ করেছে জেলা বিএনপি। তবে পুলিশের বাধায় সেই সমাবেশ ১০ মিনিটেই শেষ হয়ে যায়।
এর আগে রাতে কক্সবাজার শহরে একই স্থানে বিএনপি ও যুবলীগের পাল্টাপাল্টি সমাবেশ ডাকায় প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে। ফলে সোমবার ভোর থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত কক্সবাজার শহরে অবস্থিত বিএনপি অফিস সংলগ্ন শহীদ সরণি সড়ক ও আশপাশের এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।
রোববার সন্ধ্যায় ১৪৪ ধারা জারির বিষয়টি নিশ্চিত করেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু সুফিয়ান। ১৪৪ ধারা জারির বিষয়টি রোববার রাতে শহরে মাইকিং করে জনগণকে জানিয়ে দেয়া হয়। সকাল থেকে জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনেসহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ছিল। পাল্টাপাল্টি সমাবেশের কারণে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থতি স্বাভাবিক রাখতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয় বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
কক্সবাজার জেলা বিএনপি সূত্র জানায়, বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য কেন্দ্রঘোষিত কর্মসূচি সোমবার কক্সবাজারে মহাসমাবেশের ডাক দেয়া হয়। কিন্তু সেই কর্মসূচি পণ্ড করতে প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে।
সোমবার ভোর থেকেই শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে ছাত্রদল, যুবদল, মহিলাদল ও বিএনপিসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা অবস্থান নেয়। সেখান থেকে ছোট ছোট মিছিল নিয়ে সকাল ১০টার পর ঈদগাহ ময়দানে জড়ো হতে শুরু করে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। তখনই পুলিশের বাধার মুখে পড়ে দলটি। পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে সকাল পৌণে ১১টার দিকে দলটি মহা সমাবেশ শুরু করে।
বিএনপির মহাসমাবেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতাদের পাশাপাশি বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান শামীম উপস্থিত থাকলেও নজরুল ইসলাম খান ও মিজানুর রহমান মিনু বক্তব্য দেন। পরে পুলিশ সমাবেশ স্থলের দিকে এগুলে দলটি মহাসমাবেশ সেখানেই শেষ করে দেয়।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বর্তমান সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। তাকে কারাগারে আবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ দেয়ার পরও তাকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হচ্ছে না।
তিনি আরো বলেন, রাষ্ট্রপতির সাথে সংলাপ প্রহসন ছাড়া আর কিছুই নয়। এর আগে এই রাষ্ট্রপতির সাথে আরো দুবার সংলাপ হয়েছিল। ওই সংলাপের পর গঠিত নির্বাচন কমিশন দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে পারেনি। এই দুটি কমিশন দেশের সবচেয়ে ঘৃণিত কমিশন।
কক্সবাজার জেলা মহিলাদলের সভানেত্রী নাছিমা আক্তার বকুল বলেন, ৫ ঘণ্টার মহা সমাবেশ ছিল। কিন্তু আমরা পুলিশের বাধায় অতটা সময় থাকতে পারিনি। তবে প্রায় ১ ঘণ্টা ধরে মিছিল নিয়ে ঈদগাহ ময়দানে জমায়েত হয়। এরপর মহাসমাবেশ হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম বলেন, ১৪৪ ধারা অমান্য করে জড়ো হওয়ার চেষ্টা করা বিএনপি নেতাকর্মীদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু সুফিয়ান বলেন, বিএনপির সমাবেশের জন্য কোনো স্থানের অনুমতি নেই। তবু সমাবেশ করার চেষ্টা করে।তাই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান জানান, অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে কক্সবাজার শহরের প্রবেশদ্বার থেকে পুরো শহরের প্রতিটি পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যরা ভোর থেকে দায়িত্ব পালন করে। শৃঙ্খলা রক্ষায় সর্বোচ্চ প্রস্তুতি ছিল।