সরকার পতনের পর সারাদেশে কিছু অসাধু মানুষ নতুন উদ্যোমে নানা স্থান দখলের প্রতিযোগিতায় নেমেছে। এবার কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টের দক্ষিণ পাশে দুই একরের বেশি সরকারি জমি দখল করে তৈরি করা হচ্ছে ৯০টি দোকান। যে জায়গার বর্তমান মূল্য ২০০ কোটি টাকার বেশি।
একটি পত্রিকা স্থানীয় জনগণের বরাত দিয়ে লিখেছে, গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর ওবাইদুল হোছাইন নামে এক ব্যক্তি লোকজন নিয়ে সরকারি ২ একর ৩০ শতক পরিমাণের জমিটি দখল করে নেন। এরপর নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে দখলদারদের তাড়িয়ে দেওয়ায় কিছুদিন জায়গাটি খালি পড়ে ছিল। মাসখানেক আগে উচ্চ আদালতের একটি নোটিশ টাঙিয়ে জায়গাটি ফের দখল করে নেন ওই ব্যক্তি। এরপর টিনের ঘেরা দিয়ে ভেতরে দোকানপাটের নির্মাণকাজ শুরু করা হয়।
সৈকত এলাকায় অবকাঠামো নির্মাণ করতে হলে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কউক)-এর অনুমোদন লাগে। এইসব দোকানপাট নির্মাণের ক্ষেত্রে কোনো অনুমোদন নেওয়া হয়নি জানিয়ে কউকের উপ-নগর পরিকল্পনাবিদ মো. তানভীর হাসান গণমাধ্যমকে বলেন, অবৈধ স্থাপনাগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে।
অভিযুক্ত ওবাইদুল হোছাইন বলেন, সাচ্চিদানন্দ সেনগুপ্ত নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে জায়গাটি ভাড়া নিয়ে তিনি দোকান নির্মাণ করছেন। দোকান উচ্ছেদ না করতে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা রয়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা ভূমি অফিসের সিল, সই জালিয়াতির মাধ্যমে চারটি বিএস খতিয়ান সৃজন করে সরকারি খাসজমিটি দখলের জন্য উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন দায়ের করা হয়। তবে কক্সবাজার সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) গণমাধ্যমকে বলেছেন, ভূমি অফিসের মূল রেকর্ডে সাচ্চিদানন্দ সেনগুপ্ত নামের কোনো ব্যক্তির খতিয়ানের অস্তিত্বই নেই।
এমনিতেই পর্যটন নগর কক্সবাজার হোটেল-মোটেলের বস্তিতে পরিণত হয়েছে। পরিকল্পনা ও অনেক ক্ষেত্রে অনুমোদন ছাড়া গড়ে তোলা হয়েছে হোটেল-মোটেল। পানি ও পয়ঃনিষ্কাশনের আধুনিক ব্যবস্থাও নেই। আসলে কক্সবাজার শহরটি পরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠেনি। সুবিধা থাকা সত্বেও স্বাধীনতার পর শহরটি বর্ধিত হলেও তা পরিকল্পনামাফিক হয়নি। অনেক জায়গা দখলদারি করে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়েছে। এই দখলবাজি এখন বন্ধ করা দরকার। দখলবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। দখলদারির মহোৎসব থামাতে হবে।
এ মুহূর্তের সংবাদ