এলিয়েনের বেলুন বই

বিচিত্র কুমার »

দূরের নীলগ্রহে ছোট্ট এলিয়েন টিঙ্কো থাকত। টিঙ্কো ছিল অদ্ভুত সাহসী আর কল্পনাশীল। সে সবসময় নতুন কিছু আবিষ্কার করতে ভালোবাসত। তার সবচেয়ে প্রিয় জিনিস ছিল বেলুন। শুধু বেলুন নয়, বেলুন নিয়ে খেলা, বেলুনের রঙ, আকৃতি আর জাদুকরী কল্পনা সবকিছুই টিঙ্কোকে আনন্দ দিত।
একদিন টিঙ্কো একটি নতুন ধারণা পেল। সে ভাবল, “কেন আমি বেলুন নিয়ে শুধু খেলব না? কেন বেলুনকে একটি বইতে সাজাই না, যেখানে প্রতিটি পাতায় থাকবে নতুন বেলুন, নতুন রঙ আর জাদু!”
পরের দিনই টিঙ্কো ছোট্ট ঘরে বসে কাজ শুরু করল। প্রথমে সে একটি বড় নীল বেলুন বেঁধে রাখল। তারপর তার গ্রহের রঙিন কালি দিয়ে প্রতিটি বেলুনের ছবি অঙ্কন করল। লাল বেলুনের পাশে হলুদ রঙের জাদুকরী ছায়া, সবুজ বেলুনের নিচে নীল বেলুনের ছোট্ট বন্ধু সবই সে অঙ্কন করল।
কিছুক্ষণ পর টিঙ্কো বুঝল, শুধু আঁকা যথেষ্ট নয়। তাই সে বেলুনের ভিতর ছোট ছোট বাতি বসাল। বইটি খুললেই বেলুনগুলো ঝলমল করে আলোর মতো জ্বলে উঠবে।
বেলুন বইয়ের প্রথম পাতা খুলতেই, একটি লাল বেলুন বাতাসে উড়ে গেল! টিঙ্কো হেসে বলল, “ওহ, তুমি সত্যিই বাঁচো!” লাল বেলুন চারপাশে ঘুরে নাচতে লাগল। তারপর সব বেলুন সাজিয়ে রাখল, যেন প্রতিটি পাতায় নতুন বেলুন উঠে আসে, নতুন আলো ছড়ায়।
একদিন, টিঙ্কো তার বেলুন বই নিয়ে গ্রহের প্রধান চত্বরের দিকে গেল। সে চেয়েছিল তার বন্ধু এলিয়েনরা বইটি দেখুক। যখন বইটি খুলল, সব বেলুন বাতাসে উড়ে উঠল আর রঙিন আলো ছড়িয়ে দিল। সবাই দুষ্টুমি করে হেসে উঠল। একজন বলল, “এলিয়েন টিঙ্কো, তুমি আসলেই জাদুকরী!”
টিঙ্কো খুশিতে লাফালাফি করল। সে বুঝল, এই বই শুধু ছবি নয়, এটি আনন্দের বই। বইটি পড়ার সঙ্গে সঙ্গে সবাই হেসে খেলাধুলা করতে লাগল। ছোট থেকে বড় সবার মুখে হাসি ফুটল।
টিঙ্কোর বেলুন বই গ্রহের সব শিশুর প্রিয় হয়ে উঠল। যারা দুঃখে থাকত, তারা বই খুলে হাসতে শুরু করত। যারা ক্লান্ত থাকত, তারা বই খুলে নতুন শক্তি পেত। টিঙ্কোও আনন্দিত থাকত, কারণ তার ছোট্ট কল্পনার মাধ্যমে সবাই খুশি হয়।
এইভাবে টিঙ্কো শিখল, ছোট্ট কিছু জিনিসও বড় আনন্দ দিতে পারে। বেলুন বই শুধু পৃষ্ঠা নয়, এটি একটি হাসির জাদুকরী পৃথিবী। আর টিঙ্কো প্রতিদিন নতুন বেলুন, নতুন রঙ আর নতুন গল্পের পাতা যোগ করতে থাকে, যেন তার গ্রহে কোনোদিন আনন্দের বাতাস থামতে না পারে।