মধ্যপ্রাচ্য থেকে এয়ার ফ্রেইটে আনা প্রবাসীদের মালামাল অতিসত্বর ছাড়ের দাবি জানিয়েছেন মহানগর ১৪ দলের সমন্বয়ক এবং সিটি করপোরেশনের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন।
গতকাল রোববার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এয়ার ফ্রেইটে আনা প্রবাসীদের বিভিন্ন মালামাল ছাড়ে অর্থ মন্ত্রণালয় এবং এনবিআর চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
সুজন উল্লেখ করেন, বছরের পর বছর বিদেশে অবস্থান করা প্রবাসীরা দেশে আসার সময় পরিবার পরিজনদের জন্য প্রসাধনী সামগ্রী, ওষুধ, শিশুখাদ্যসহ নানাবিধ মালামাল নিজ খরচে দেশে নিয়ে আসেন। একজন প্রবাসী একটি টিকেটে সর্বোচ্চ ৪০ কেজি পর্যন্ত মালামাল নিয়ে আসতে পারেন। অনেক ক্ষেত্রে উদ্বৃত্ত মালামালগুলো তারা এয়ার ফ্রেইটে পর্যাপ্ত ফি দিয়ে বুকিং করে আসেন। দেশে আসার পর সংশ্লিষ্ট বিমানের সাথে যোগাযোগ করে তারা মালামালগুলো গ্রহণ করে থাকেন। কিন্তু অদৃশ্য এক কারণে প্রতি শিপমেন্টে ৪০০ কেজি করে ১১৮টি শিপমেন্টের মোট ৪৭,২০০ কেজি মালামাল গত ৮ মাস ধরে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের কার্গো গুদামে ধ্বংস হতে চলেছে। ইতোমধ্যে অনেক পচনশীল মালামাল সম্পূর্ণরূপে নষ্ট হয়ে গেছে। কোন প্রকার যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়াই চট্টগ্রাম কাস্টমস উক্ত মালামালগুলো ছাড় করাচ্ছে না। এটা প্রবাসীদের উপর এক প্রকার জুলুম বলে মনে করেন তিনি।
তিনি আরো বলেন ইতিপূর্বে বছরের পর বছর এভাবে বিভিন্ন দেশ থেকে এয়ার ফ্রেইটে মালামাল আনা গেলেও বিগত ৮ মাস ধরে কোন মালামাল বিদেশ থেকে আনা যাচ্ছে না। দেশের অন্যান্য বিমানবন্দরে এ সুবিধা চালু থাকলেও শুধু চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে প্রবাসীদের আনীত মালামাল ছাড় করানো যাচ্ছে না। এটা চট্টগ্রামের প্রবাসীদের জন্য বিদ্বেষমূলক আচরণ বলে মনে করেন তিনি। প্রবাসীদের কষ্টার্জিত রেমিটেন্স দিয়ে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রয়েছে। বিদেশ বিভুঁইয়ে থাকা একেকজন প্রবাসী দেশে আসার সময় পরিবার পরিজনদের জন্য উক্ত মালামালগুলো নিয়ে আসছেন বছরের পর বছর ধরে। মালামাল ছাড় করতে না পারায় প্রবাসীগণ আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। ইতিপূর্বে প্রবাসীরা এয়ার ফ্রেইটে দেশে মালামাল আনতে কোন প্রকার সমস্যার সম্মুখীন না হলেও গত আট মাস ধরে তারা চরম হয়রানির সম্মুখীন হচ্ছেন। এভাবে প্রবাসীদের কষ্টার্জিত অর্থ তসরুফ করার অধিকার কাস্টমস কর্তৃপক্ষের নেই। তাছাড়া বিদেশে যারা এসব কার্গো বুকিংয়ের সাথে জড়িত তাদের সাথে প্রবাসীদের একটা আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সুনামের সাথে ব্যবসা পরিচালনা করলেও বর্তমানে তারা অসহায় হয়ে পড়েছেন। অনেক প্রবাসী এসব মালামালগুলোর জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা দাবি করছে। কিন্তু সে মালামালগুলো তো তার কাছে নেই, এসব মালামালতো বিমানবন্দরের গুদামে নষ্ট হতে চলেছে। এভাবে দেশে এবং বিদেশে যারা এ ব্যবসার সাথে জড়িত রয়েছে তারা সকলেই আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। অনেকেই ব্যবসা গুটিয়ে বেকারত্ব ভোগ করছেন। তাদের পরিবার পরিজন মানবেতর জীবন যাপন করছে। উল্লেখ্য, গুদামে আটকে থাকা সবগুলো মালামালই চট্টগ্রামের প্রবাসীদের। তাদেও আয়ের টাকা দিয়েই তারা পরিবার পরিজনদের জন্য মালামালাগুলো পাঠিয়েছে। এখানে কোন প্রকার অবৈধ মালামালও নেই। তারপরও কি কারণে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ এসব মালামাল ছাড় করাচ্ছে না তা আমাদের বোধগম্য নয়। এ ব্যাপারে প্রবাসীরা কারো কাছ থেকেই কোন প্রকার সহযোগিতাও পাচ্ছেন না। ফলে প্রবাসীদের মধ্যে এক প্রকার ক্ষোভ বিরাজ করছে।
কালবিলম্ব না করে অচিরেই এসব মালামাল ছাড় করার এবং যেসব মালামাল নষ্ট হয়েছে তার উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দাবি করেন তিনি। এছাড়া ভবিষ্যতে প্রবাসীদের প্রেরণকৃত মালামাল দেশে আনতে যাতে কোন প্রকার জটিলতা সৃষ্টি না হয় সে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এনবিআর চেয়ারম্যানের সহযোগিতা কামনা করেন চসিক সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন। বিজ্ঞপ্তি
