সুপ্রভাত ডেস্ক»
দেশে করোনা সংক্রমণের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা হবে কিনা সে সিদ্ধান্ত নিবে সরকার। আজ এ কথা জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার ঢাকার কেরানীগঞ্জের জাজিরা মোহাম্মদিয়া আলিয়া মাদরাসায় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধনের সময় এ কথা বলেন তিনি।
সেইসঙ্গে করোনা পরিস্থিতির কারণে সংক্ষিপ্ত সিলেবাস নিয়েও পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব না হলে সেক্ষেত্রে বিকল্প ব্যবস্থার চিন্তা ভাবনা চলছে, বলেন মন্ত্রী।
২০২১ সালের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য আমরা চেষ্টা করছি সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা নেয়ার। এখন সেটিও যদি না হয়, আমরা তার বিকল্প নিয়েও চিন্তা করছি, বলেন তিনি।
কোভিড-১৯ সংক্রমণ পরিস্থিতিতে গত বছরের ১৭ মার্চ দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। পরবর্তী সময়ে একাধিকবার এই ছুটির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় চলতি মাসের ১৩ তারিখ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার চিন্তা করলেও সেকেন্ড ওয়েভের সংক্রমণের ফলে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় আবারও ৩০ জুন পর্যন্ত ছুটির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।
গত বছর করোনা সংক্রমণ শুরুর আগেই মাধ্যমিক পরীক্ষা হয়ে যায়, তবে সংক্রমণ পরিস্থিতিতে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা নেওয়া ছাড়াই শিক্ষার্থীদের পূর্ববর্তী পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে উত্তীর্ণ করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
করোনা পরিস্থিতির ওপর চলতি বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার বিষয়টি নির্ভর করছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
এর আগে গত রবিবার (১৩ জুন) রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছিলেন, ‘২০২১ সালের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা নেওয়ার জন্য আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। এখন সেটি যদি সম্ভব না হয়, তাহলে আমরা বিকল্প নিয়েও চিন্তা করছি।’
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার জন্য এই বছরের শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে ডিসেম্বরে পরীক্ষা নিতে হলে শিক্ষার্থীদের কিছুদিন ক্লাস করানোর জন্য কয়েক মাস আগেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে হবে। সেটা সম্ভব না হলে গুরুত্বপূর্ণ চার-পাঁচটি বিষয়ে পরীক্ষা নেওয়ার বিকল্প ভাবনা আছে। বিশেষ করে বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও বিজ্ঞানের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে এই পরীক্ষা নেওয়া হতে পারে।
তবে কোনোভাবেই পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব না হলে অ্যাসাইনমেন্টভিত্তিক মূল্যায়ন হতে পারে। এরই মধ্যে ২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া শুরু হয়েছে। সেভাবেই এ বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদেরও অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হবে। এটা অনেকটাই ‘ওপেন বুক এক্সাম’ পদ্ধতির মতো। তবে এই দুই পাবলিক পরীক্ষায় অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে মূল্যায়ন করা হলে এর সঙ্গে আগের গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার নম্বর যুক্ত করা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে এসএসসির ক্ষেত্রে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) এবং এইচএসসির ক্ষেত্রে জেএসসি ও এসএসসির নম্বর এই মূল্যায়নে থাকতে পারে।
আর সর্বশেষ বিকল্প হচ্ছে আগের পরীক্ষাগুলোর ভিত্তিতে মূল্যায়ন। কিন্তু গত বছর জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার ভিত্তিতে এইচএসসি পরীক্ষার মূল্যায়ন করা হলেও তা ছিল অনেকটাই ‘অটো পাসের’ মতো। তবে কোনোভাবেই এই সব শেষ বিকল্পে যেতে চায় না শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
জানা যায়, গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে এসএসসি ও সমমান এবং ১ এপ্রিল থেকে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। এরই মধ্যে এসএসসির জন্য ৬০ কর্মদিবস ও এইচএসসির জন্য ৮৪ কর্মদিবসের সংক্ষিপ্ত সিলেবাস প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু একাধিকবার ঘোষণা দেওয়ার পরও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা যায়নি।