সুপ্রভাত ডেস্ক »
এক দিনের ব্যবধানে চট্টগ্রামের হালদা নদীতে আরও একটি মৃত ডলফিনের সন্ধান মিলেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে রাউজান উপজেলার পূর্ব গুজরা ইউনিয়নের আজিমের ঘাট এলাকায় মৃত ডলফিনটি ভেসে আসে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রাণীবিদ্যা বিভোগের অধ্যাপক ও হালদা রির্সাচ কেন্দ্রের সমন্বয়ক ড. মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, ‘৭ ফুট দীর্ঘ ডলফিনটির ওজন ৬০ কেজি। ডলফিনটির শরীরে আঘাত আছে কিনা, পচন শুরু হওয়ায় তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।’ খবর বিডিনিউজের।
মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, ‘এ নিয়ে গত আট দিনে মোট তিনটি মৃত ডলফিন পাওয়া গেল হালদায়। নদীতে এখন প্রচুর জাল পাতা হচ্ছে। ডলফিন কিছুক্ষণ পরপর পানির উপরে ভেসে ওঠে শ্বাস নিতে। জালে আটকা পড়ে কিছুক্ষণ শ্বাস নিতে না পারলেই ডলফিন মারা যায়। বেশির ভাগ সময় জাল ছাড়াতে ডলফিনকে আঘাত করা হয়। তাতেও ডলফিনগুলো মারা যায়। তখন নদীতে ভাসিয়ে দেয়।’
এর আগে বুধবার দুপুরের দিকে আজিমের ঘাট এলাকায় আরেকটি বড় আকারের মৃত ডলফিন ভেসে আসে। সেটির দাঁতসহ মুখের একাংশ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল।
গত ১৪ জুলাই রাউজান পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ গহিরা এলাকায় হালদার সংযোগ খাল বুড়িসর্তায় প্রায় সাড়ে ৮ ফুট দৈর্ঘ্যের ১২০ কেজি ওজনের একটি মৃত ডলফিন পাওয়া যায়।
২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত হালদায় ৩৮টি এবং কর্ণফুলীতে দুটি মৃত ডলফিন পাওয়া গেছে। অথচ হালদায় ডলফিন হত্যা বন্ধে উচ্চ আদালত থেকেও নির্দেশনা এসেছে।
হালদায় আগের মত বালুবাহী ড্রেজার না চললেও মা মাছ শিকারের জন্য জাল পাতা হয় নিয়মিত। পাশাপাশি নদীর তীর রক্ষায় বসানো ব্লকে এবং নদীতে চলাচলকারী নৌযানের সাথে ধাক্কা খেয়েও ডলফিন মরতে পারে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের।
ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার (আইইউসিএন) গাঙ্গেয় ডলফিনকে ‘বিপন্ন’ হিসেবে লাল তালিকায় রেখেছে। ২০১২ সালের বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তফসিল-১ অনুসারে এই প্রজাতিটি সংরক্ষিত।
ডলফিনের চোখ নেই। মূলত ইকো সাউন্ড দিয়ে এরা চলাফেরা ও খাবার সন্ধান করে। এদের শরীরের গঠনও নরম প্রকৃতির।
২০২০ সালে জরিপ চালিয়ে হালদায় ১২৭টির মতো ডলফিনের উপস্থিতি মিলেছিল।