Ι ৯ দিন অতিবাহিত
জিয়াবুল হক, টেকনাফ »
মিয়ানমারের ইয়াংগুন থেকে কক্সবাজারের টেকনাফ স্থলবন্দরে আসার পথে আটক পণ্যবাহী একটি কার্গো বোট ৯ দিন পার হলেও ছাড়েনি দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি।
গতকাল শনিবার রাত ৯টা পর্যন্ত পণ্যবাহী ওই বোটটি আরাকান আর্মির হেফাজতে রয়েছে। এর আগে গত সোমবার আরাকান আর্মির হেফাজতে থাকা দুটি কার্গো বোট টেকনাফ স্থলবন্দরে পৌঁছে।
এ ব্যাপারে টেকনাফ স্থলবন্দরের ইউনাইটেড ল্যান্ড পোর্টের ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘এর আগে দুটি পণ্যবাহী কার্গো বোট আরাকান আর্মির হেফাজত থেকে টেকনাফ স্থলবন্দরে পৌঁছে। তবে ৯ দিন পার হয়ে গেলেও তাদের কাছে আরও একটি পণ্যবাহী বোট রয়েছে। সেখানে প্রায় ৩০ হাজার বস্তা বিভিন্ন মালামাল রয়েছে।’
এর আগে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে মিয়ানমারের ইয়াংগুন থেকে কক্সবাজারের টেকনাফ স্থলবন্দরে আসার পথে নাফনদীর মোহনায় আটক করা হয় বিভিন্ন পণ্যবাহী তিনটি কার্গো বোট।
এ বিষয়ে টেকনাফ স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও ব্যবসায়ী এহতেশামুল হক বাহাদুর বলেন, ‘আমরা ব্যবসায়ীরা খুব চিন্তিত। কারণ এখনও একটি পণ্যবাহী কার্গো বোট ছাড়েনি আরাকান আর্মি। সেখানে আমাদের বহু ব্যবসায়ীর মালামাল রয়েছে। ৯ দিন অতিবাহিত হলেও বড় কার্গো বোটটি তাদের হেফাজতে রয়েছে। এ ধরনের সমস্যা সমাধানে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করা দরকার।’
স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীরা জানান, দেড় মাস পর গত শনিবার মিয়ানমারের ইয়াংগুন থেকে কয়েকজন ব্যবসায়ীর পণ্যবাহী কার্গো বোট টেকনাফ স্থলবন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় নাফনদীর মোহনায় সেদেশের জলসীমানায় নাক্ষ্যংকদিয়া এলাকায় তল্লাশির নামে পণ্যবাহী তিনটি আটকে দিয়েছিল আরাকান আর্মি। সেগুলোতে আচার, শুঁটকি, সুপারি, কফিসহ ৫০ হাজারের বেশি বস্তা পণ্য রয়েছে। এসব পণ্য স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী শওকত আলী, ওমর ফারুক, মো.আয়াছ, এমএ হাসেম, মো. ওমর ওয়াহিদ, আবদুর শুক্কুর সাদ্দামসহ অনেকের। সর্বশেষ সোমবার সকালে সাতুরু এবং এমবি হারকিউলেস নামে দুটি পণ্যবাহী বোট ফেরত আসলেও একটি এখনও আরাকান আর্মির হেফাজতে রয়েছে। ফেরত আসা বোটে ২৭ হাজার ২২২ বস্তা মালামাল রয়েছে।
বন্দরের ব্যবসায়ী মো. ফারুক বলেন, ‘আরাকান আর্মি এখনও একটি পণ্যবাহী বোট ছাড়েনি। মূলত তল্লাশির নামে বোটে থাকা অনেক মালামাল খালাস করে চেক করছে। তাদের তল্লাশি এখনও চলছে। দু-একদিনের মধ্যে ছেড়ে দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ওই কার্গো বোটটির মালিক সেদেশের শীর্ষ এক সেনা কর্মকর্তার ঘনিষ্ঠজন। সে কারণে আরাকান আর্মি চাপ প্রয়োগ করতে তল্লাশির নামে আটকে রেখেছে। পাশাপাশি আরাকান আর্মি এখন থেকে সীমান্তে বাণিজ্যে ভাগ বসাতে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।’
আমদানিকারক কায়েছ এন্টারপ্রাইজের মালিক নুরুল কায়েছ সাদ্দাম বলেন, ৯ দিন পার হলেও একটি পণ্যবাহী কার্গো বোট ছাড়েনি। সেখানে আমারসহ অনেকের বিভিন্ন পণ্য রয়েছে।’
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ‘এখনও একটি পণ্যবাহী কার্গো ছাড়েনি তারা। সেটির খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।’