সুপ্রভাত ডেস্ক
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, বাংলাদেশের মতো বিকাশমান অর্থনীতিতে মূলধনের যোগান দিতে পারে শক্তিশালী পুঁজিবাজার। তবে পুঁজিবাজার ডমিনেন্ট হতে পারে বা ড্রাইভ দিতে পারে এমন অর্থনীতি আমাদের হয়নি। আমরা সেদিকে যাচ্ছি। উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশে যেতে হলে প্রয়োজন অর্থের। পুঁজিবাজার সেই অর্থায়নের উৎস হতে পারে। আমরা সেদিকে যাবো, পুঁজিবাজারের মাধ্যমে আমাদের অভিযাত্রা শুরু হবে।
রোববার ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ) ও বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) যৌথ উদ্যোগে সিএমজেএফ অডিটরিয়ামে বাজেট পরবর্তী আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
সিএমজেএফ সাধারণ সম্পাদক আবু আলীর সঞ্চালনায় ‘বাজেট ২০২৩-২৪: প্রেক্ষিত পুঁজিবাজার’ শীর্ষক সভায় সূচনা বক্তব্য দেন বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স এ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি মো. ছায়েদুর রহমান।
সিএমজেএফ সভাপতি জিয়াউর রহমানের সভাপতিত্বে এসময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান ড. হাফিজ মো. হাসান বাবু, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহীম, ডিবিএ প্রেসিডেন্ট রিচার্ড ডি রোজারিও। খবর বাসস।
বাংলাদেশের অর্থনীতিকে টিনেজারের সঙ্গে তুলনা করে মন্ত্রী বলেন, আমাদের অর্থনীতি অত্যন্ত শক্তিশালী, এতে কোন সন্দেহ নেই । কিন্তু টিনেজার হওয়ায় এর একটা উদ্যম রয়েছে। টিনেজারদের যেমন মা বাবাকে নজরদারি করতে হয় তেমন আমাদেরকেও গ্রোয়িং অর্থনীতিকে নজরদারি করতে হচ্ছে। আর এই ফিডের প্রধান উপকরণই হচ্ছে মূলধন। সেটা অর্জন হবে, যদি আমরা ক্যাপিটাল মাকের্টে শক্তি বৃদ্ধি করতে পারি।
তিনি বলেন, আমি মনে করি এখন আমরা অগ্রসর পর্যায়ে পৌঁছেছি। আমাদের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আগের তুলনায় অনেক দক্ষ। আমাদের বেটার টেকনোলজি, বেটার বিজনেস কমিউনিটি রয়েছে। তাই এখন আর অগ্রিম আয় কর (এআইটি) দরকার নেই, এটি তুলে দেয়া যায়।
মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলো পুঁজিবাজারে লিস্টেড হওয়া উচিৎ বলে মনে করেন এম এ মান্নান। তিনি বলেন, এই আলোচনা সাত আট বছর আগেও শুনেছি। এখনও শুনছি, কিন্তু বছরের পর বছর তারা লিস্টেড না হয়েই ব্যবসা করছে আমাদের দেশে।
বর্তমানে তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানীর কর হারের পার্থক্য ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ। তবে ব্যাংক, বীমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, টেলিকম, ট্যোবাকো ইত্যাদি খাত এর আওতার বাইরে।
বিএমবিএ সভাপতি ছায়েদুর রহমান বলেন, মাত্র ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ কর রেয়াত উদ্যোক্তাদেরকে তালিকাভুক্তি হতে উদ্বুদ্ধ করছে না। তাই প্রস্তাবিত বাজেটে তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানীর কর হারের পার্থক্য বাড়ানো প্রয়োজন।
তিনি, লভ্যাংশের উপর দ্বৈত কর প্রত্যাহার, বন্ডের উপর অগ্রীম চূড়ান্ত কর হিসেবে বিবেচনা করা, লেনদেন কর নামিয়ে ০.০১৫ শতাংশ (শূন্য দশমিক শূন্য ১৫) (যা বর্তমানে ০.০৫ শতাংশ) করার দাবি জানান। বন্ড ও মিউচুয়াল ফান্ডকে পুঁজিবাজার এক্সপোজার এর বাইরে রাখলে পুঁজিবাজার উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে বলে তিনি দাবি জানান।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সেচেঞ্জ (সিএসই) এর চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহীম বলেন, আমরা আশা করেছিলাম বাজেটে পুঁজিবাজার বিষয়ে কিছু থাকবে। কিন্তু এবারের প্রস্তাবিত বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য কিছু রাখা হয়নি। অথচ দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগের জন্য পুঁজিবাজারের বিকল্প নেই।
গত ১ জুন জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন।