শুভ্রজিৎ বড়ুয়া »
পতেঙ্গা থেকে ফৌজদারহাট আউটার রিং রোডের সাগরিকা অংশে ১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে ফ্লাইওভার নির্মাণ সম্পন্ন করেছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। নগরে প্রবেশ কিংবা বর্হিগমনের জন্য এ ফ্লাইওভারটির কাজ পুরোপুরি শেষ। টানেল উদ্বোধনের আগেই এ ফ্লাইওভারটি উদ্বোধন করতে চায় সিডিএ।
জানা যায়, রাণী রাসমনি ঘাটের সমুদ্র উপকূলে খেজুরতলা এলাকা থেকে সাগরিকা জহুর আহম্মদ স্টেডিয়ামের মূল গেট পর্যন্ত নির্মাণ করা হয়েছে ফ্লাইওভারটি। এটি আউটার রিং রোড প্রকল্পের একটি অংশ হলেও রেল লাইনের উপরের ৮ দশমিক ৬ মিটার উচ্চতায় না রাখা নিয়ে জটিলতায় পড়ে এর নির্মাণকাজ। পরে কেবিনেটের সম্মতিতে ৭ দশমিক ৬ মিটারের উচ্চতা রেখেই কাজ শেষ করেছে সিডিএ।
ফ্লাইওভারের উপরে সরেজমিনে দেখা যায়, খেজুরতলার গোলচত্বর থেকে শুরু হয়ে এটি শেষ হয়েছে স্টেডিয়ামের মূল গেটের দক্ষিণ পাশ বরাবর। প্রায় ১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে এ ফ্লাইওভার ৫৪ ফুট প্রস্থে নির্মাণ করা হয়েছে। এতে চার লেন করার ব্যবস্থা রেখেছে। পশ্চিমে খেজুরতলা থেকে পূর্বে সাগরিকা স্টেডিয়াম পর্যন্ত ফ্লাইওভারটি মূল সড়কে যুক্ত হয়েছে স্টেডিয়াম গেটের উত্তর পাশে। রাস্তা আলোকায়নে বসানো হয়েছে ল্যাম্পপোস্টও।
ফ্লাইওভারের নিচের এলাকা ঘুরে দেখা যায়, স্টেডিয়াম গেটের পাশে যে ড্রেনটি ছিলো তার গতিপথ পরিবর্তন না করে ড্রেনটির উপরে ফ্লাইওভার তুলে নেওয়া হয়েছে। এজন্য নিচে বসানো হয়েছে বাড়তি অনেক পিলার ও বীম। ড্রেনটিও করা হয়েছে বেশ বড়, যেন নগরের পানি প্রবাহে কোনো বেগ না পায়। কিছুদূর যেতেই দেখা যায়, ড্রেনগুলো গিয়ে পড়েছে একটি খালে। খালের পাড়ে ফ্লাইওভার বরাবর যাতায়াতের কোনো ব্যবস্থা না থাকলেও দক্ষিণের কিছুটা দূরে রয়েছে এলাকাবাসীর যাতায়াতের একটি ছোট সেতু। খালের পশ্চিম অংশে ফ্লাইওভারের নিচের জায়গাটি এলাকাবাসী বেড়া দিয়ে রেখেছে সেখানে ঈদের জামাত আদায় বা কারো মৃত্যু পরবর্তী জানাজা পড়ার জন্য। এরপর কিছুদূর যেতেই রেললাইন। রেললাইনের অংশে কিছুটা বেঁকে গেছে ফ্লাইওভারটি। সেখানে ফ্লাইওভারটির উচ্চতা প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ ফুট। এরপর মাটির পথ চলে গেছে খেজুরতলায়, ফ্লাইওভারের নিচ দিয়ে।
এ প্রসঙ্গে কথা হলে সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বলেন, ‘ফ্লাইওভারটি পতেঙ্গা থেকে ফৌজদারহাট রিং রোড প্রকল্পের একটি অংশ। ফ্লাইওভারটির কাজ পুরোপুরি শেষ। ফ্লাইওভার বা ওদিকের কোনো সংযোগ সড়ক না থাকায় এতোদিন শহরের গাড়িগুলো রিং রোডে উঠতে বা রিং রোড থেকে শহরে বের হতে উত্তর কাট্টলী (ঈশান মহাজন সড়ক) বা ফৌজদারহাট দিয়ে চলাচল করতো। ফ্লাইওভারটি চালু হলে ওদিকের লোকাল রোডের চাপ আর থাকবে না।’
যান চলাচলের উপযোগী হতে কত সময়ের প্রয়োজন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ফ্লাইওভারটি যান চলাচলের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত। টানেল উদ্বোধন হলে আউটার রিং রোডে গাড়ির চাপ বাড়বে। তখন বিকল্প সড়ক হিসেবে ফ্লাইওভারটি ব্যবহার হবে। এতে আউটার রিং রোডে যানজট সৃষ্টি হবে না। কেননা সাগরিকা থেকে পতেঙ্গা অংশ পর্যন্ত চার লেনের রাস্তা থাকলেও সাগরিকা থেকে ফৌজদারহাট পর্যন্ত সড়কটি এখনও দুই লেনে রয়েছে। বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন হচ্ছে ২৮ অক্টোবর। তার আগেই অর্থাৎ ২০ বা ২২ অক্টোবর ফ্লাইওভারটি উদ্বোধন করা হবে।’