নিজস্ব প্রতিনিধি, উখিয়া :
আসন্ন ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে কক্সবাজারের উখিয়ায় কোরবানির গরু বিক্রি নিয়ে খামারিরা যেমন শঙ্কায় আছেন, তেমনি দুশ্চিন্তায় রয়েছেন ক্রেতারাও।
চলমান লকডাউনের কারণে এই শঙ্কা আর দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা। উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, এ বছর উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে ২৫০ টি খামারে প্রায় ২১ হাজার গরু লালন পালন করে কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। আরও প্রায় ২০ মহিষ ও ছাগল, ভেড়া৷ যা আসন্ন ঈদ উপলক্ষে বিক্রয় করা হবে। তবে চলমান লকডাউনের কারণে সঠিক সময়ে ন্যায্য দামে বিক্রয় করতে পারবেন কিনা এই শঙ্কা করছেন গরুর মালিকরা। ভালুকিয়া মাতবর পাড়ার খামারিরা সুলতান মাহমুদ আরিফ বলেন, প্রতিবছর ঈদের ২০ থেকে ২৫ দিন আগে থেকেই বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা খামার ও গরু মালিকের বাড়ি বাড়ি এবং এসে দাম দর করে গরু কিনেন। এবছর সেই কেনা-বেচা নেই। কোনো ব্যবসায়ীই এ পর্যন্ত আসে নাই। বর্তমানে আমার ৮০ টি গরু খামারে আছে। উপজেলার জালিয়াপালং ইউনিয়নের সুলতানা আহমেদ বলেন, আমার খামারে সিদ্ধি, শাহীওয়াল, বার্মা ও দেশী জাতের ২১টি গরু রয়েছে। আমি গরুর ছবি ও ভিডিও সহ অনলাইনে বিক্রির বিজ্ঞাপন দিয়েছি। সেখানে এ পর্যন্ত কোনো সাড়া পাইনি।
রাজাপালং ইউনিয়নের টাইপালং গ্রামের মোহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, আমার ১৫ টি দেশি জাতের গরু আছে। বাড়িতে এসে স্থানীয় কয়েকজন দাম দর করে গেছেন। কিন্তু তারা যে দাম বলেছেন সেটি বাজার মূল্যের অর্ধেক। রাজাপালং ইউনিয়নের গয়ালমারা গ্রামের ওসমান বলেন, প্রতিবছর আমরা স্থানীয়ভাবে কোরবানির পশুর হাটে গরু নিয়ে যাই এবং সেখানে দাম দর যাচাই-বাছাই করি। তারপর বাজার বুঝে বিক্রয় করি। এবছর ওই হাট যদি না বসে তাহলে আমরা কোথায় বিক্রি করবো সেটি নিয়ে চিন্তিত আছি।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. শাহাব উদ্দিন বলেন, আমরা আজ থেকে প্রায় ২০ দিন আগে খামারিদের গরুর ছবি, নাম ঠিকানা, মোবাইল নম্বর দিয়ে উখিয়া অনলাইন কোরবানির হাট বাজার নামে ফেসবুক পেজে গরু বেচা কেনার ব্যবস্থা করেছি। অনলাইনে ২০ টিরও বেশি গরু বিক্রি হয়েছে। ইচ্ছে করলে যেকোনো ক্রেতা-বিক্রেতা এখানে চাহিদা মত কেনা-বেচা করতে পারবেন। এছাড়া স্বাস্থ্যবিধি মেনে উখিয়ায় প্রতি শনিবার এবং প্রতি মঙ্গলবার মরিচ্যা বাজারে রোববার ও বুধবার ও প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবার রুমখাঁ বাজারে পশুর হাট নিয়মিত বসবে। কাজেই কোরবানির গরু কেনা-বেচা নিয়ে আশা করি কোনো সমস্যা হবেনা।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, পরিস্থিতি বিবেচনায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ বছর সড়কে বাঁধা সৃষ্টি করে এমন কোনো অস্থায়ী পশুর হাটের অনুমতি দেওয়া হবে না। প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া কোনো অস্থায়ী পশুর হাট বসালে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।