ঈদের লম্বা ছুটি শুরু হয়েছে বৃহস্পতিবার থেকে। ঈদ উপলক্ষে এর মধ্যে পাঁচ দিন টানা ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। তবে এবার পাঁচ দিনের ঘোষিত ছুটির আগে-পরে আছে স্বাধীনতা দিবস, শবে কদর ও সাপ্তাহিক ছুটি। ফলে এবার কার্যত লম্বা ছুটির ফাঁদে পড়তে যাচ্ছে দেশ। ঈদের আগে ও পরে ১১ দিনের মধ্যে মাত্র ২ দিন অফিস খোলা থাকবে। দীর্ঘ এই ছুটিতে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কেমন হবে তা নিয়ে নাগরিকদের মধ্যে আশঙ্কা রয়েছে। ছুটির সময়ে রাজধানী ঢাকাসহ বড় বড় শহরগুলো ফাঁকা হয়ে যায়। ফলে চুরি-ডাকাতি ও ছিনতাই বেড়ে যায়। আর লম্বা ছুটিতে ঘরমুখী মানুষ নানা প্রতারণা ও অপরাধের শিকার হওয়ার আশঙ্কা থাকে। শঙ্কা আছে সারা দেশের নিরাপত্তা নিয়ে।
এমনিতেই সরকার পরিবর্তনের পর থেকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। বেড়েছে নানা ধরনের অপরাধ। এরমধ্যে চুরি-ডাকাতি অন্যতম।
দুই ঈদে বড় শহরগুলো থেকে অন্তত দু কোটি মানুষ গ্রামে যাত্রা করে। এসময় তাদের বাসাবাড়ির নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে চিন্তিত থাকেন। তারপরে রয়েছে সড়কপথে নিরাপত্তার সংকট। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির সহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, “মহাসড়কের নিরাপত্তা এবার নড়বড়ে। মহাসড়কে এমনিতেই ডাকাতি হচ্ছে। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা না থাকলে এবার ডাকাতের কবলে পড়ার আশঙ্কা আছে। আর লম্বা ছুটির কারণে ঢাকা থেকে ধাপে ধাপে মানুষ ঢাকার বাইরে যাবে। তাই শুধু তিন-চার দিনের জন্য নিরাপত্তা বাড়ালে হবে না। আরেকটি বিষয় হলো, যেভাবে ছিনতাই হচ্ছে, তাতে ঈদের ঘরমুখো মানুষ বাসা থেকে বাস, রেল বা লঞ্চ ষ্টেশন পর্যন্ত নিরাপদে যেতে পারেন কিনা তা-ও আশঙ্কার বিষয়। এর বাইরে ঈদের সময় অজ্ঞান পার্টি, প্রতারক দল, টানা পার্টি, মলম পার্টিসহ নানা ধরনের অপরাধীরা সক্রিয় থাকে।”
দুঃখজনক হলো, ডিএমপি কমিশনার বলেছেন, “পুলিশ থাকলেও বাড়ি, ফ্ল্যাট, দোকান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নিজ দায়িত্বে নিশ্চিত করতে হবে।” আমরা কমিশনারের এই বক্তব্যে প্রেক্ষিতে বলতে চাই, সাধারণ মানুষ ঈদের ছুটিতে যাবে গ্রামের বাড়ি। তিনি সেখানে থেকে নিজ বাসার নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন কীভাবে?
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে এমন বক্তব্য দিলে জনগণ ভরসা করবে কার ওপর?
তারপরও আমরা নাগরিকদের বলব, যতটুকু পারা যায় নিজ বাসাবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করুন সাধ্যমতো।
এ মুহূর্তের সংবাদ