ই-নামজারির সুফল পাচ্ছে মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক »

‘অনলাইনে নামজারির আবেদনের কিছুক্ষণ পর প্রার্থীর মোবাইল নাম্বারে ম্যাসেজ পাচ্ছেন এবং খতিয়ান চূড়ান্ত হওয়ার পর খতিয়ান ডেলিভারি নেওয়ার জন্য ম্যাসেজ পাচ্ছেন। আবেদনকারীর নামজারির নথি বা আবেদন কোন পর্যায়ে আছে,নথি এসিল্যান্ডের নিকট নাকি ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা বা সার্ভেয়ার, কানুনগো কিংবা অফিস সহকারীর কাছে কম্পিউটার বাটনে ক্লিক করলেইজানা যাচ্ছে।’ ই-নামজারিনিয়ে আলাপকালে এসব তথ্য জানালেন পতেঙ্গা সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এহসান মুরাদ।
২০১৬ সালে ই-নামজারির পাইলট প্রকল্প শুরু হয়। ‘চালু হলো ই-নামজারি, টাউট দালালদের মাথায় বাড়ি’ স্লোগান নিয়ে সারা দেশে চালু হয়েছিল শতভাগ ই-নামজারি। ক্রয়সূত্রে বা অন্য কোনো উপায়ে জমির মালিক হয়ে থাকলে হালনাগাদ রেকর্ড সংশোধন করে নতুন মালিকের নামে জমি রেকর্ড করাকে নামজারি বলে। অনলাইনের মাধ্যমে নামজারি ই-নামজারি নামে পরিচিত।সনাতন পদ্ধতিতে ৪৫ দিনের মধ্যে নামজারি করা হতো। অনলাইনে ২৮ দিনের মধ্যে এই সেবা পাচ্ছে গ্রাহকরা।
শতভাগ ই-নামজারি, ডিজিটাল ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের ডাটা এন্ট্রি এবং শতভাগ সার্টিফিকেট মামলা নিষ্পত্তিসহ সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী কমিশনার (ভূমি) এহসান মুরাদকে বলেন, ‘ইচ্ছাশক্তি এবং যথাযথ অনুকূল্য ও সমর্থন থাকলে সব সম্ভব। আমাদের কার্যালয়ে ই-সেবার সফলতার পেছনে ভূমি অফিসের কার্যকর একটি অভিজ্ঞ টিমের নিরলস প্রচেষ্টা রয়েছে। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক এবং অতিরিক্তজেলা প্রশাসক(রাজস্ব) মহোদয়ের সঠিক দিক নির্দেশনা এবং অধস্থন অভিজ্ঞ কানুনগো, সার্ভেয়ার, অফিস সহকারী, ভূমি সহকারী কর্মকর্তা এবং ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তাগণ যদি আন্তরিক না হতেন তাহলে শতভাগ ই-মিউটেশন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা সম্ভব হতো না।’
তিনি আরো জানান, ২০১৯ সালের অক্টোবরে পতেঙ্গা সার্কেল ভূমি অফিসে যোগদানের পর হতে বর্তমান পর্যন্ত ই-নামজারি কার্যক্রম শতভাগ বাস্তবায়ন করেছেন। পূর্বের সার্টিফিকেট মামলার বকেয়াসহ হাল সন পর্যন্ত বিপুল পরিমাণ সরকারি রাজস্বও আদায় করা হয়েছে।
হাটাহাজারী উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) শরীফ উল্লাহ সুপ্রভাত বলেন, ‘ই-নামজারির চালু হওয়ার পর টাউট-দালালদের দৌরাত্ম অনেক কমে গেছে। জনগণ সচেতন হলে সবকিছু অনলাইনে সমাধান সম্ভব।এখনো সাধারণ মানুষ অনলাইন সম্পর্কে অজ্ঞতার কারণে কিছু দালালের খপ্পরে পড়ে। যারা আমাদের অফিসে সেবা নিতে আসে তাদেরকে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা অনলাইন সেবা দেন। ২৮ দিনের মধ্যে এই ই-নামজারি মামলা নিষ্পত্তি করা হয়।মাঝে মাঝে সার্ভারের সমস্যা হয়। সিস্টেম ইনপুটে বিলম্ব হয়। তবে এই সমস্যা সমাধানে ও ভূমি সংক্রান্ত জটিলতা দূর করার জন্য প্রতিবছর সরকার সফটওয়্যার আপডেট করছে। ই-সেবায়ভবিষ্যতে মানুষের দুর্ভোগ আরো কমবে।’
ই-নামজারি প্রক্রিয়ার শতভাগ সুফল সাধারণ জনগণের কাছে পৌঁছছে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে বোয়ালখালী উপজেলার সহকারী কমিশনার(ভূমি) তাহমিনা আক্তার বলেন, ই-নামজারি আবেদন কোন ব্যক্তি নিজস্ব কম্পিউটার বা কোন দোকান থেকে আবেদন করার কথা কিন্তু তারা সে বিষয়ে জানে না। তাছাড়া গ্রামের মানুষ এখনো অনলাইন কার্যক্রমে অভ্যস্থ হয়ে ওঠেনি। তাই আমরা সাপোর্ট দিয়ে আসছি।’