ঢাবিতে কনফারেন্স উদ্বোধনে শিক্ষামন্ত্রী
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, সুফিবাদ ইসলামের মধ্যে একটি রহস্যময় ঐতিহ্য যা আত্মসচেতনতার একটি পথ। সুফিবাদ ইসলামী চিন্তাধারা ও সংস্কৃতির বিকাশে গভীর প্রভাব ফেলেছে এবং এটি বিশ্বের মানুষের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে চলেছে।
গতকাল রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নোয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ‘সুফিবাদের সমাজ বিজ্ঞান, পূর্ণ-মানবতা এবং সামাজিক সম্প্রীতির ঐশী অন্বেষণ’ শিরোনামে চতুর্থ আন্তর্জাতিক কনফারেন্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সুফিরা বিশ্বাস করেন যে মানুষের অস্তিত্বের উদ্দেশ্য হল সম্প্রীতির বিশ্ব তৈরি করা। তারা বিশ্বাস করে যে এটি সহানুভূতি এবং বোঝার মাধ্যমে অর্জন করা যেতে পারে।
কনফারেন্সে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ভারতের কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের আশুতোষ প্রফেসর ড. অমিত দে। উদ্বোধনী বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আখতারুজ্জামান।
ঢাবি উপাচার্য ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, দারুল ইরফান রিসার্চ ইনস্টিটিউট সুফিজমকে একাডেমিক বিষয়ে পরিণত করেছে সেজন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই।
ঢাবি উপাচার্য বলেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সুফিবাদের একটি দীর্ঘ ও সমৃদ্ধ ইতিহাস রয়েছে। এটি দেশের সংস্কৃতি ও সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। সুফিবাদ অনেক বাংলাদেশী চিন্তাবিদ ও লেখকের জন্যও অনুপ্রেরণার উৎস।
মূল প্রবন্ধে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের আশুতোষ প্রফেসর ড. অমিত দে বলেন, উপমহাদেশের সুফিরা ধর্মীয় আচার পালনের মধ্যদিয়ে তরিকতের প্রচার করেছেন। সুফিরা সংস্কৃতির নানা বিষয়ের সঙ্গে ধর্মীয় আচারের মেলবন্ধন তৈরি করে মানুষকে হেদায়তের জন্য সৃষ্টিকর্তার পথ দেখিয়ে গেছেন।
কনফারেন্সের প্রথম দিন চট্টগ্রাম বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলোজির উপাচার্য এবং করফারেন্সের কনভেনর প্রফেসর ড. ওবায়দুল করিমের সভাপতিত্বে গেস্ট অব অনার ছিলেন মাইজভাণ্ডার গাউছিয়া আহমদিয়া মঞ্জিলের সাজ্জাদানশীন এবং দারুল ইরফান রিসার্চ ইনস্টিটিউট (ডিরি) এর প্রতিষ্ঠাতা মওলানা শাহ সুফি সৈয়দ এমদাদুল হক মাইজভাণ্ডারী। বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. আবদুল বাছির। বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্বধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম এবং দারুল ইরফান রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ম্যানেজিং ট্রাস্টি শাহ সুফি সৈয়দ ইরফানুল হক মাইজভাণ্ডারী।
কনফারেন্সে মাইজভাণ্ডার গাউছিয়া আহমদিয়া মঞ্জিলের সাজ্জাদানশীন মওলানা শাহ সুফি সৈয়দ এমদাদুল হক মাইজভাণ্ডারী বলেন, মাইজভাণ্ডারী তরিকার আত্মশুদ্ধির অনন্য পদ্ধতি রয়েছে যাকে বলা হয় উসূল-ই-সাবা বা আত্মশুদ্ধির সপ্ত পদ্ধতি। উসুল-ই-সাবা অনুশীলনের মাধ্যমে একজন নিজেকে একজন পরিপূর্ণ মানুষে রূপান্তরিত করতে পারে। আমরা বিশ্বাস করি যে একটি নতুন পৃথিবী প্রতিষ্ঠার জন্য আত্মশুদ্ধিকৃত মানুষ অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
দুদিনব্যাপী ৪র্থ আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, ব্রাজিল, সুইডেন, আলজেরিয়া, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের ১৬টি দেশের ৬৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকগণ তাদের মোট ১০২টি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করছেন।
এছাড়া নবাব নোয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে সুফিজমের ওপর ছবি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। কনফারেন্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে ছবি প্রদর্শনী পরিদর্শন করেন ডা. দীপু মনিসহ অতিথিরা। বিজ্ঞপ্তি