প্রবর্তক সংঘের সংবাদ সম্মেলন
নিজস্ব প্রতিবেদক <<
প্রবর্তক সংঘের ভূমি ব্যবহারে চুক্তিশর্ত ভঙ্গ করেছে ইসকন। প্রবর্তক কর্তৃপক্ষ মনে করেছিল ইসকন যথার্থ সততার সাথে তাদের চুক্তির শর্তাদি পালন করবেন। কিন্তু দীর্ঘসময় অতিবাহিত হওয়ার পর তাদের ভিন্নরূপ পরিলক্ষিত হয়।
গতকাল শনিবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল খালেক মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলেন লিখিত বক্তব্য পাঠে প্রবর্তক সংঘের সাধারণ সম্পাদক তিনকড়ি চক্রবর্তী এসব কথা বলেন ।
তিনি বলেন, ১৯২১ সালে মতিলাল রায় চন্দনগরে তাঁর প্রতিষ্ঠিত প্রবর্তক সংঘের ভাবাদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে একই বছর চট্টগ্রামের আরো কয়েকজন মিলে চট্টগ্রামে প্রবর্তক সংঘ প্রতিষ্ঠা করেন। আধ্যাত্মিক পরিবেশ নিশ্চিতকরণে প্রবর্তক শ্রীশ্রী কৃষ্ণ মন্দির নির্মাণের জন্য ইসকন নামক ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সাথে ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল চুক্তি সম্পাদন হয় ও ২০০৫ সালের ৩ মার্চ রেজিস্ট্রি হয়। প্রবর্তক শ্রীশ্রী কৃষ্ণ মন্দিরটি মোট ১৬,৩৭৬ বর্গফুট অর্থাৎ ১৮.৯৫ গন্ডা জায়গায় নির্মাণ করা হয়।
চুক্তি অনুযায়ী উভয়পক্ষের তিনজন করে মনোনীত ৬ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির নিয়ন্ত্রণে ইসকন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এই মন্দিরের পূজা, অর্চনা, আরতি, উৎসবাদি অনুষ্ঠান করবে। নির্ধারিত স্থান, স্থাপনা এবং অনুমোদিত যাতায়াতের পথে কোনো মালিকানা দাবি করতে পারবে না।
তিনকড়ি চক্রবর্তী জানান, চুক্তি মোতাবেক উক্ত জমি এবং সংশ্লিষ্ট সব স্থাপনার মালিকানা প্রবর্তকের নিকট সংরক্ষিত থাকবে। ইসকন কর্তৃপক্ষ বা তাদের মনোনীত কোন ব্যক্তি কোনোভাবেই প্রবর্তক সংঘের স্বার্থবিরোধী এবং সম্পত্তির নিরাপত্তা বিঘ্ন করার মত কোনো কাজে লিপ্ত থাকতে পারবে না। এই রূপ কোনো আচরণ বা কাজ পরিলক্ষিত হলে তাদের সাথে সম্পাদিত চুক্তিটি বাতিল করা যাবে।
তিনি বলেন, ইসকনের স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষের সাথে তিন দফা চিঠি প্রেরণ করে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু ব্যর্থ হয়ে প্রবর্তকের জায়গায় নির্মিত ছোট নিরাপত্তা চৌকিটি সংস্কারের জন্য গত ১৪ মার্চ ইসকনের চিহ্নিত ছয় জন এবং অজ্ঞাতনামা কয়েকজন অস্ত্রশস্ত্রসহ এগিয়ে এসে কাজে বাধা প্রদান এবং হামলা চালায়। এতে গুরুতর আহত প্রবর্তকের কর্মচারীদের চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হয়। ঘটনার দিন রাত ৯টায় পাঁচলাইশ থানায় অভিযোগ করতে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ আদালতের আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দেন। এরই প্রেক্ষিতে গত ১৬ মার্চ মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে সি আর মামলা নম্বর ১৭০/২১ দায়ের করা হয়। এছাড়াও প্রবর্তক সংঘের পক্ষ থেকে যৌক্তিকভাবে অন্যায় প্রয়োজনীয় বিধিবদ্ধ ও আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হতে পারে। আমরা চাই, যে কোনো মূল্যে প্রবর্তক সংঘের শতভাগ স্বার্থ সংরক্ষিত হোক এবং কোনোরূপ শান্তি-শৃঙ্খলা বিঘ্নিত না হয়। ’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংঘের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুভাষ চন্দ্র লালা, সহ-সভাপতি প্রফেসর রনজিৎ কুমার দে, ট্রেজারার ডা. শ্রীপ্রকাশ বিশ্বাস, সদস্য অ্যাডভোকেট স্বভূপ্রসাদ দত্ত, ইন্দু নন্দন দত্ত, চন্দর ধর, প্রফেসর রনজিত ধর, ডা. বাবুল কান্তি সেন, রূপক ভট্টাচার্য্য, সুবোধ কুমার দত্ত, ইঞ্জিনিয়ার ঝুলন কান্তি দাশ, অ্যাডভোকেট অমর প্রসাদ ধর প্রমুখ।