ইসকনের ভক্তিচারু স্বামী মহারাজের প্রয়াণে বিভিন্ন মহলের শোক

 

আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘের (ইসকন) জিবিসি চেয়ারম্যান ভক্তিচারু স্বামী মহারাজ আর নেই। গত ৪ জুলাই (শনিবার) যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় স্থানীয় সময় ভোর ৫টা ৪৫ মিনিটে তিনি দেহত্যাগ করেন। গত সোমবার বিশেষ বিমানে ভক্তিচারু স্বামী মহারাজের দেহ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মায়াপুরে নিয়ে আসা হয়। তাকে সেখানে সমাধিস্থ করা হয় বলে ইসকনের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

এদিকে ইসকন জিবিসির চেয়ারম্যান ভক্তিচারু স্বামী মহারাজের প্রয়ানে শোক প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, আওয়ামী লীগের বর্ষিয়ান নেতা ও সাবেক মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, সংসদ সদস্য নারায়ন চন্দ্র চন্দ, ড. বীরেন সিকদার, অসীম কুমার এমপি, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা সুজিত রায় নন্দী, আওয়ামী লীগের উপ প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত।

এছাড়াও শোক প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রাম ইসকনের রিজিওয়ানাল সেক্রেটারি চিন্ময়কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী, নন্দনকানন ইসকন মন্দিরের অধ্যক্ষ প-িত গদাধর দাস ব্রহ্মচারী, সাধারণ সম্পাদক তারণ নিত্যানন্দ দাস ব্রহ্মচারী, যুগ্ম সম্পাদক মুকুন্দ ভক্তি দাস ব্রহ্মচারী, মোহরা মন্দিরের অধ্যক্ষ সর্বমঙ্গল গৌর দাস, প্রবর্ত্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক দারুব্রহ্ম দাস ব্রহ্মচারী, বাংলাদেশ হিন্দু ফাউন্ডেশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান দিলীপ মজুমদার, শিল্পপতি সুকুমার চৌধুরী, জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের সভাপতি গৌরাঙ্গা দে, সাধারণ সম্পাদক বিমল কান্তি দে, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের মহানগর শাখার সভাপতি পরিমল চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. নিতাই প্রসাদ ঘোষ, মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট চন্দন তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক শ্রীপ্রকাশ দাশ অসিত, বিশ্ব সনাতন ঐক্যের সমন্বয়ক বিপ্লব পার্থ, গৌর পূর্ণিমা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুমন চৌধুরীসহ হিন্দু নেতৃবৃন্দ।

শ্রীল ভক্তিচারু স্বামী গুরুমহারাজের মহাপ্রয়াণ উপলক্ষে আজ ৭ জুলাই (মঙ্গলবার) নন্দনকানন শ্রীশ্রী রাধামাধব মন্দির ও শ্রীশ্রী গৌর নিতাই আশ্রমে স্মরণ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। স্মরণোৎসবে বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ ইস্কনের সাধারণ সম্পাদক চারু চন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী, ডা. পরিমল দেবনাথ, জগদানন্দ কৃষ্ণ দাস, নরহরি নিমাই দাস, ভবেশ দাস, গোবিন্দ  কুন্ড দাস, রাজেশ্বর দাসচারু চৈতন্য দাস, ক্ষমা দেবী দাসী, অপূর্ব মনোহর দাস, শেষরুপ দাস ব্রহ্মচারী, অকিনচন দাস ব্রহ্মচারী, সুবল সখা দাস ব্রহ্মচারী প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, তিনি ১৯৪৫ সালে ১৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এক সভ্রান্ত হিন্দু বাঙালি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার শৈশবকালের বাকি সময় কেটেছিল কলকাতায়। ১৯৭০ সালে পড়ালেখার জন্য জার্মানির একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে যান। সেখানে বৈদিক সাহিত্যের সম্মুখীন হওয়ার পর তিনি ভারতবর্ষেও আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যের ঐশ্বর্যের ব্যাপারে উপলব্ধি করেন। ১৯৭৫ সালে আধ্যাত্মিক প্রগতির উদ্দেশ্যে সচেষ্ট হওয়ার জন্য তিনি ভারতবর্ষে ফিরে আসেন। বৈদিক শাস্ত্র পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে অধ্যয়ন করার পর মহারাজ একজন গুরুদেবের আশ্রয় গ্রহণ করার ব্যপারে আগ্রহী হন, যিনি তাকে আধ্যাত্মিক মার্গ প্রর্দশন করতে পারেন। একবছর ধরে খোঁজেও তিনি এরকম কোনো গুরুদেব পেলেন না যার চরণে তিনি আত্মসমর্পণ করতে পারেন এবং তিনি খুবই হতাশ হয়ে গেলেন। ঠিক এরকম সময়ে তিনি শ্রীল এসি ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদের রচিত ভক্তিরসামৃতসিন্ধু গ্রন্থটি পান। সেই গ্রন্থটির জ্ঞানগর্ভ তত্ত্ব সম্বন্ধে অবগত হওয়ার পর তিনি বুঝতে পারলেন তার গুরুদেব এবং তার পছন্দসই আধ্যাত্মিক মার্গটি পেয়েছেন। শ্রীল প্রভুপাদের আরও কিছু গ্রন্থ পড়ার পর তার প্রতি নিষ্ঠা বাড়ে এবং তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার বাসনাও বেড়ে যায়। সেই সময় শ্রীল প্রভুপাদ আমেরিকায় ছিলেন। ভক্তিচারু মহারাজ তখন মায়াপুরের মন্দিরে যোগদান করেন এবং ভগবানের ভক্তিমূলক সেবায় নিযুক্ত হন। বিজ্ঞপ্তি