সুপ্রভাত ক্রীড়া ডেস্ক »
শিরোপাধারী ইংল্যান্ডকে পাত্তাই দিল না অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দল। ৩৬ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে অস্ট্রেলিয়া রীতিমত চমকে দিয়েছে সবাইকে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা উদ্ধারের জেদ চোখে পড়ছে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং ও বোলিংয়ে। বার্বাডোজে শনিবার রাতে (বাংলাদেশ সময়) দুই দল মুখোমুখি হয়েছিল। যেখানে ইংল্যান্ডের আমন্ত্রণে ব্যাটিংয়ে নেমে অস্ট্রেলিয়া ৭ উইকেটে ২০১ রান করে। ১৭তম ম্যাচে এসে প্রথমবার বিশ্বকাপে দুইশ ছাড়ানো রান হলো। বিশাল এই রান তাড়া করতে নেমে ইংল্যান্ড ৬ উইকেটে ১৬৫ রানের বেশি করতে পারেনি। প্রথম ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ায় পয়েন্ট ভাগাভাগি করেছিল ইংলিশরা। এবার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে বড় হার। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সফরের শুরুটা মনঃপূত হলো না ইংল্যান্ডের। টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে বড় সংগ্রহের ভিত পায় অস্ট্রেলিয়া। দুই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান ট্রেভিস হেড ও ডেভিড ওয়ার্নার ৫ ওভারে স্কোরবোর্ডে ৭০ রান তুলে নেন। মঈন আলীর করা প্রথম ওভারে ৩ রান পেলেও বাকি ৪ ওভারে তারা তুলে নেন ৬৭ রান। দ্বিতীয় ও চতুর্থ ওভার থেকে আসে ২২ রান করে। প্রথমটা করেছিলেন উইক জ্যাকস। পরেরটা মার্ক উড। সমান ৩টি করে ছক্কা হয় দুই ওভারেই। পঞ্চম ওভারে হেড মঈন আলীকে এক চার ও ছক্কা উড়ানোর পর সিঙ্গেল নেন। ওয়ার্নার পঞ্চম বলে চার হাঁকালেও ষষ্ঠ বলে উইকেট হারান। ১৬ বলে ৩৯ রান করে ফেরেন ওয়ার্নার। ২ চার ও ৪ ছক্কা মারেন তিনি। সঙ্গী হারানোর পর হেডও তার পথ অনুসরণ করেন। ১৮ বলে তার ব্যাট থেকে আসে ৩৪ রান। ২ চারের সঙ্গে ৩টি ছক্কা হাঁকান হেড।পাওয়ার প্লে’তে অস্ট্রেলিয়ার রান ২ উইকেটে ৭৪। যে ধারাবাহিকায় অজিরা আগাচ্ছিলেন, সেই পথ কিছুটা থমকে যায় দ্রুত উইকেট হারানোয়। ১০ ওভারে ১০২ রানের বেশি তারা পায়নি। দ্রুত রান তোলার তাগিদে যখন তারা আক্রমণে যায় তখনই হারায় উইকেট। তবে ব্যাটসম্যানরা বড় ইনিংস খেলতে না পারলেও ছোট ক্যামিও কিন্তু ছিল। অধিনায়ক মিচেল মার্শ ড্রেসিংরুমে ফেরার আগে ২৫ বলে ৩৫ রান করেন ২টি করে চার ও ছক্কায়। ম্যাক্সওয়েল ২৫ বলে খেলেন ২৮ রানের ইনিংস। শেষ দিকে অস্ট্রেলিয়ার ভরসা ছিলেন মার্কোস স্টয়নিস। ১৭ বলে ৩০ রান আসে তার ব্যাট থেকে। এছাড়া টিম ডেভিড ৮ বলে ১১ ও ওয়েড ১০ বলে ১৭ রানে অপরাজিত থাকেন। শুরুতে তেমন লড়াই করতে না পারলেও ইংল্যান্ডের বোলাররা শেষ দিকে নিজেদের ফিরে পান। ক্রিস জর্ডান ৪৪ রানে ২ উইকেট নিয়ে তাদের সেরা বোলার। ১টি করে উইকেট নেন মঈন আলী, আর্চার ও লিভিংস্টোন। লক্ষ্য তাড়ায় উদ্বোধনী জুটিতে ইংল্যান্ডও জবাব দেয়। ৭.১ ওভারে ৭৩ রানের জুটি গড়েন ফিল সল্ট ও জস বাটলার। ওভারপ্রতি ১০ করে রান তুলে দুই ডানহাতি ব্যাটসম্যান ভয় দেখাচ্ছিলেন অস্ট্রেলিয়াকে। কিন্তু তাদের জুটি ভাঙার পরই সব এলোমেলো ইংল্যান্ডের। অষ্টম ওভারে জাম্পার বলে বোল্ড হন ২৩ বলে ৩৭ রান করা সল্ট। বাটলার ২৮ বলে ৪২ রান করে জাম্বার বলেই কামিন্সের হাতে ক্যাচ দেন। এরপর শুরু হয় আসা-যাওয়ার প্রতিযোগিতা। বল হাতে বাজে দিন কাটানো জ্যাকস ব্যাটিংয়ে ১০ রানের বেশি করতে পারেনি। জনি বেয়ারস্টোর ব্যাট থেকে আসে ৭ রান। মঈন আলী ও হ্যারি ব্রুক করেন যথাক্রমে ২৫ ও ২০ রান। বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মিডল অর্ডারে প্রত্যাশিত ঝড় না আসায় ম্যাচ থেকে একটু একটু করে ছিটকে যেতে থাকে ইংল্যান্ড। শেষের ব্যাটসম্যানরা লড়াই করে পরাজয়ের ব্যবধান কমিয়েছেন মাত্র। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে জাম্পা ও কামিন্স ২টি করে উইকেট নেন।
১টি করে উইকেট পেয়েছেন হ্যাজেলউড ও স্টয়নিস। ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হন জাম্পা। টানা দুই ম্যাচে দুই জয়ে অস্ট্রেলিয়ার মুখে বিশাল হাসি। ইংল্যান্ড গতবারের চ্যাম্পিয়ন দুই ম্যাচ যাওয়ার পরও জয়ের মুখ দেখেনি। সামনে তাদের কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে বলার অপেক্ষা রাখে না। খবর রাইজিংবিডি.কম’র