সুপ্রভাত রিপোর্ট »
রাঙামাটি, মাটিরাঙা ও পেকুয়ায় বজ্রপাতে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ৭ জন। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর।
রাঙামাটি
পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে বৃষ্টি নেমে আসলেও এ সময় বজ্রপাতে অন্তত তিনজনের মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া যায়।
বৃহস্পতিবার রাঙামাটি শহরের সিলেটি পাড়া ও বাঘাইছড়ি উপজেলার রুপাকারী ইউনিয়ন ও সাজেক ইউনিয়নে এসব দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানা যায়। একই সময়ে আরো অন্তত ৭ জনের আহত হওয়ার ঘটনার তথ্য মিলেছে।
নিহতরা হলেন- রাঙামাটি শহরের সিলেটি পাড়ার বাসিন্দা মো. নজির (৫০) এবং বাঘাইছড়ি উপজেলাধীন রুপাকারী ইউনিয়নের মুসলিম ব্লক এলাকার বাসিন্দা বাহারজান বেগম (৫৫) এবং সাজেকের লংথিয়ান পাড়ায় তনিবালা ত্রিপুরা (৩৭)।
রূপকারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যাসমিন চাকমা জানান, ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মুসলিম ব্লক গ্রামের লাল মিয়ার স্ত্রী বাহারজান বেগম গরু আনতে গিয়ে বজ্রপাতে মারা যান। বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিরীন আক্তার জানান, অনেক দিন পর সকালে বজ্রপাতসহ বৃষ্টি হয়, এতে বাহারজান নামে একজন এবং সাজেকে তনিবালা ত্রিপুরা নামের আরেক নারী নিহত হন।
নিহতদের পরিবারকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১০ হাজার টাকা করে তাৎক্ষণিক আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
বাঘাইছড়িতে সকাল সাড়ে নয়টার দিকে একটি চায়ের দোকানে বসে আড্ডা দেয়ার সময় বজ্রপাতে ৭ জন আহত হওয়ার তথ্য জানিয়েছে স্থানীয়রা। আহতরা হলেন- তরুন চাকমা, তৃণা চাকমা, রবীন্দ্র চাকমা, সুষমলাল চাকমা, অক্ষয়মনি চাকমা, পাত্থর চাকমা এবং অমরজ্যোতি চাকমা।
অন্যদিকে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক প্রধান ডা. শওকত আকবর জানান, সকালে শহরের সিলেটি পাড়া থেকে একজনকে হাসপাতালে আনা হয়। তিনি বজ্রপাতে নিহত হয়েছেন।
মাটিরাঙা
মাটিরাঙায় বজ্রপাতে ইয়াছিন আরাফাত নামে এক স্কুল শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০ দিকে উপজেলার বড়নাল ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইব্রাহিম পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
বজ্রপাতে নিহত ইয়াছিন আরাফাত (১৩) বড়নাল ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইব্রাহিম পাড়ার বাসিন্দা ইউসুফ মিয়ার ছেলে। তার বাবা ভাড়ায় মটর সাইকেল চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন।
বড়নাল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইলিয়াছ বজ্রপাতে স্কুল শিক্ষার্থীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, সকালের দিকে উঠানের পাশে কাঁচা আম কুড়াতে যায় দুই ভাই। এ সময় আকস্মিক বজ্রপাতে ছোট ভাই প্রাণে বেঁচে গেলেও বড় ভাই ইয়াছিন আরাফাত ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করে।
বড়নাল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ইলিয়াছ হোসেন বলেন, বজ্রপাতে ইয়াছিন আরাফাতের মৃত্যুতে পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
মাটিরাঙা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ডেজী চক্রবর্তী বলেন, বৃহস্পতিবার সকালের দিকে বজ্রাঘাতে এক শিক্ষার্থী মারা গেছে। এ মৃত্যু বড়ই মর্মান্তিক। তাদের পরিবারকে প্রশাসনিক সহায়তার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
পেকুয়া
পেকুয়ার লবণ মাঠে কাজ করার সময় বজ্রপাতে দুই লবণচাষীর মৃত্যুর হয়েছে। তারা হলেন মোহাম্মদ দিদার(২৬) ও আরফাত হোছাইন (১২)।
বৃহস্পতিবার ভোরে মগনামা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কোদাইল্যাদিয়া এলাকা ও রাজাখালী ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড চরিপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত দিদার ওই এলাকার জমিরউদ্দীনের পুত্র ও এক সন্তানের পিতা। অন্যদিকে নিহত আরফাত হোছাইন রাজাখালী ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড চরিপাড়া এলাকার জামাল হোছাইনের পুত্র। মগনামা ইউপির ৭ নম্বর ওয়ার্ডের এমইউপি বদিউল আলম জানান ভোররাতে কালবৈশাখী ঝড় ও বজ্রপাত শুরু হলে সে দ্রুত লবণমাঠে গিয়ে পলিথিন তোলা কাজ করার সময় তিনি বজ্রপাতে দগ্ধ হয়ে যায়। তখনই ঘটনাস্থলে তিনি প্রাণ হারায়।
রাজাখালী ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম সিকদার বাবুল জানান, ভোররাতে কালবৈশাখী ঝড় ও বজ্রপাত শুরু হলে নিহত আরফাত তার বাবার সাথে তাদের লবণ মাঠে পলিথিন তুলতে গেলে সেখানে বজ্রপাতে আহত হয়। পরে তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়ার সময় তার মৃত্যু হয়।