স্পোর্টস ডেস্ক »
মাত্র একটি ওভার স্বপ্ন শেষ করে দিল আফগানিস্তানের। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অঘটন প্রায় ঘটিয়েই ফেলেছিল তারা। কিন্তু করিমের ১৯তম ওভারে চারটি ছয় মেরে পাকিস্তানকে জিতিয়ে দিলেন আসিফ আলি। নিউজিল্যান্ড ম্যাচেও যিনি দলকে জিতিয়েছিলেন। পাকিস্তান জিতল ৫ উইকেটে।
দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আফগানিস্তানকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে পাকিস্তান। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৪৭ রান করে আফগানরা। জবাবে ৬ বল বাকি থাকতেই জয়ের বন্দরে পৌঁছায় বাবর আজমের দল।
অথচ শোয়েব মালিক আউট হওয়ার পর ম্যাচটা কঠিন হয়ে গিয়েছিল পাকিস্তানের জন্য। শেষ দুই ওভারে (১২ বল) প্রয়োজন ছিল ২৪ রানের। তাতে হারের শঙ্কা ছিল নিশ্চিত। কিন্তু আসিফের চার ছক্কায় রক্ষা পায় পাকিস্তান।
এদিন লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা ভালো ছিল না পাকিস্তানের। দলীয় ১২ রানেই দারুণ ছন্দে থাকা ওপেনার মোহাম্মদ রিজওয়ানকে হারায় দলটি। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ফখর জামানকে নিয়ে দলের হাল ধরেন অধিনায়ক বাবর আজম। স্কোরবোর্ডে ৬৩ রান যোগ করেন এ দুই ব্যাটার। এ জুটি ভাঙেন আফগান অধিনায়ক মোহাম্মদ নবি।
তবে আগের ওভারেই বল হাতে নিয়ে বাবর আজমের উইকেটটা প্রায় গিয়েছিলেন রশিদ খান। তার এলবিডাব্লিউর আবেদনে সাড়া দিয়েছিলেন আম্পায়ার। তবে রিভিউ নিয়ে সে যাত্রা বেঁচে যান পাকিস্তানি অধিনায়ক।
এরপর অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার মোহাম্মদ হাফিজকে এগিয়ে যেতে থাকেন বাবর। ২২ রানের জুটিও গড়েন। হাফিজকে ফিরিয়ে এ জুটি ভাঙেন রশিদ খান। লংঅনে গুলবাদিন নাইবের ক্যাচে পরিণত করে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে নিজের শততম উইকেট তুলে নেন এ লেগস্পিনার।
হাফিজের বিদায়ের পর মাঠে নামেন আরেক অভিজ্ঞ ব্যাটার শোয়েব মালিক। তার সঙ্গে ২৫ রানের জুটি গড়ে রশিদ খানের বলে বোল্ড হয়ে যান অধিনায়ক বাবর। এরপর দ্রুত ফিরে যান মালিকও। নাভিন উল হকের বলে ক্যাচ তুলে দেন উইকেটরক্ষক মোহাম্মদ শাহবাজের হাতে।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫১ রানের ইনিংস খেলেন বাবর। ৪৭ বলে ৪টি চারের সাহায্যে এ রান করেন অধিনায়ক। ২৫ বলে ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ৩০ রান করেন ফখর। শেষদিকে ৭ বলে ২৫ রানের দানবীয় ইনিংস খেলেন আসিফ। আফগানিস্তানের পক্ষে ২টি উইকেট পেয়েছেন রশিদ।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নামা আফগানিস্তানের সূচনাটা ছিল বিবর্ণ। শুরু থেকেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে দলটি। তারপরও পাওয়ার পেলতে আগ্রাসী ব্যাটিং বন্ধ করেনি দলটি। ৪টি উইকেট হারালেও পাওয়ার প্লেতে ৪৯ রান তুলে দেয় দলটি।
এদিন দলীয় ১৩ রানেই দুই ওপেনার হজতরুল্লাহ জাজাই ও মোহাম্মদ শাহজাদকে হারায় আফগানিস্তান। তৃতীয় উইকেটে স্কোরবোর্ডে ২০ রান যোগ করলেও ৩ রানের ব্যবধানে সাজঘরে ফেরেন রহমানুল্লাহ গুরবাজ ও আসগর আফগান। তাতে বড় চাপে পড়ে আফগানরা।
এরপর পঞ্চম উইকেটে ২৫ রানের জুটি গড়ে কিছুটা প্রতিরোধের আভাস দেন করিম জানাত ও নজিবুল্লাহ জাদরান। কিন্তু ১২ রানের ব্যবধানে আউট হন এ দুই ব্যাটার। তাতে বড় চাপেই পড়েছিল দলটি। এমনকি একশ রানের আগেই গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় পড়ে তারা।
কিন্তু এরপর গুলবাদিন নাইবকে নিয়ে অসাধারণ এক জুটি গড়ে তোলেন অধিনায়ক মোহাম্মদ নবি। ইনিংস মেরামতের পাশাপাশি রানের চাকাও সচল রাখেন দারুণভাবে। বিশেষ করে হাসান আলীর করা ১৮তম ওভারে ২১ রান তুলে লড়াকু পুঁজির ভিত গড়ে দেন এ দুই ব্যাটার। পরের ওভারেও ১৫ রান তুলে নেয় দলটি।
শেষ পাঁচ ওভারে ৫৮ রানে তুলে নেয় আফগানরা। তাতে লড়াকু সংগ্রহই মিলে দলটির। নবি ও নাইব দুইজনই করেন ৩৫ রান করে। তবে নবির চেয়ে বেশি আগ্রাসী ছিলেন নাইব। ২৫ বলে ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি। ৩২ বলে ৫টি চারে নিজের ইনিংস সাজান অধিনায়ক। নজিবুল্লাহর ব্যাট থেকে আসে ২২ রান।
পাকিস্তানের পক্ষে ২৫ রানের খরচায় ২টি উইকেট পান ইমাদ ওয়াসিম।