চবি সংবাদদাতা »
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) একটি কটেজ থেকে অনিক চাকমা নামের এক ছাত্রের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার দুপুর ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহজালাল হলের বিপরীতে এস আলম কটেজ থেকে এ মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
অনিক চাকমা মেরিন সায়েন্সে ইনস্টিটিউটের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি রাঙামাটি জেলার বালুখালী ইউনিয়নের মোহন লাল চাকমার ছেলে।
এসময় তার টেবিল থেকে অগোছালোভাবে লেখা ৬ পৃষ্ঠা সম্বলিত চিরকুট উদ্ধার করা হয়। বিষয়টি সুপ্রভাতকে নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক মো. কবির হোসেন।
চিরকুট থেকে জানা গেছে, ‘নিজের জীবন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে হতাশায় ভুগছিলেন অনিক। তিনি চিরকুটে উল্লেখ করেন, আমার বন্ধুরা আমার জন্য অনেক কিছু করলেও আমি তাদের জন্য কিছুই করতে পারি নি। আমি নিজেকে অত্যন্ত ঘৃণা করি। মা-বাবা, তোমরা ভালো থেকো। তোমরা আমার জন্য অনেক কিছু করেছ। আমি তোমাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। আমি চললাম। আমাকে তোমরা ক্ষমা করে দিও।’
তিনি উল্লেখ করেন, ‘আমি যদি বন্ধুদের সঙ্গে ভালোভাবে মিশতে পারতাম, তাহলে এটা হতো না। এখন আমি অধঃপতিত হলাম। আমি আপনাদের কাছে একদম ক্ষমার অযোগ্য, তবুও সবার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।’
অন্য একটি পাতায় তিনি লিখেছেন, ‘আমি ক্লাস সিক্স থেকে ডিপ্রেশনে আছি। সেই থেকে ক্লাস টেন পর্যন্ত মোটামুটি ভালো খেলাধুলা করেছি, বন্ধুবান্ধব পেয়েছি। তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ।’
এস আলম কটেজের শিক্ষার্থীরা জানায়, রোববার রাতে অনিকের রুমমেট বাড়িতে থাকায় একাই তিনি রুমে ছিলেন। সকাল ১১টার পরও তার রুম থেকে কোন সাড়াশব্দ পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে জানালার ফাঁক দিয়ে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন তারা। পরে পুলিশ এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে। উদ্ধারের পর মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক মো. কবির হোসেন সুপ্রভাতকে বলেন, খবর পেয়ে শাহজালাল হলের বিপরীতে এস আলম কটেজ থেকে সিলিং ফ্যানে ঝুলন্ত অবস্থায় এক ছাত্রের লাশ উদ্ধার করেছি। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে।