সুপ্রভাত ডেস্ক :
‘ফেয়ার’ মানেই সে ‘লাভলি’ আর ‘লাভলি’ মানেই সে ‘ফেয়ার’… এই ধারণার ইতি ঘটতে চলেছে এ বার। ভারতের ইউনিলিভার কোম্পানির ‘ফেয়ার অ্যান্ড লাভলি’ ক্রিম থেকে চিরতরে বাদ যেতে চলেছে ‘ফেয়ার’ কথাটি।
তৃতীয় বিশ্বের দেশে ফর্সা হওয়ার অমোঘ আকর্ষণ আজন্মলালিত। কালো মেয়ের নাকি এ দেশে বিয়ে হয় না, এমনকি সে নাকি ভাল জায়গায় চাকরিও পায়না, তা সে যতই শিক্ষিত হোক না কেন। এই ধারণাকেই এত দিন সযতেœ লালন করেছি আমি, আপনি, আমাদের চারপাশের মানুষজন। আর তারই মুনাফা লুটেছে এ সব ‘স্কিন লাইটেনিং’ ক্রিমগুলো। সে আপনি আম আদমি হন অথবা সেলেব, চোখে আঙুল দিয়ে যোগ্যতার বিচার করা হয়েছে গায়ের রঙে। ঠিক যেমন বেশ কয়েক বছর আগে ঘটেছিল বিপাশা বসুর সঙ্গে।
‘কালো’ মেয়ে বিপাশা আজ আবেগঘন। বেশ কয়েক বছর আগে তারই সহকর্মী এক ফর্সা ত্বকের অভিনেত্রী বিপাশাকে ডেকেছিলেন ‘কালি বিল্লি’ বলে। চুপ ছিলেন বিপাশা। আজ আর চুপ থাকতে পারেননি। তিনি লিখছেন, ‘ছোট থেকে, সেই ছোট থেকে বোনের সঙ্গে আমাকে তুলনা করে বলা হত, সোনির থেকে বনি অনেক কালো না? আমার পরিজন, আত্মীয় সবার মুখেই এক কথা। বনি কালো’ বনির যেন পরিচয় হয়ে উঠেছিল তার গায়ের রং। ছোট্ট বনি মুম্বই এল। সুপারমডেল প্রতিযোগিতায় ছিনিয়ে নিল প্রথম স্থান। বিপাশা ভেবেছিলেন এ বার হয়ত তার গুণের কদর হবে। গুণের কদর হল নিঃসন্দেহে। তবে, পরের দিনই খবরের কাগজে বড় বড় করে ছাপা হল, ‘ডাস্কি গার্ল ফ্রম কলকাতা ইজ দ্য উইনার’। পরিশ্রমী নয়, সুন্দরী নয়, বিপাশার নামের আগে শোভা পেতে লাগল ডাস্কি বিশেষণ।
মেয়ে দমবার পাত্র নয়। পাড়ি দিল বিদেশে। ওখানে গিয়ে সে তো অবাক। তার রংই যেন তার পরিচয় হতে থাকল সে দেশে। দুধ সাদা ‘মেমসাহেব’দের এক টুকরো কলকাতা সহজেই জায়গা করে নিল দূর দেশে। সেটাও চাননি বিপাশা। রং নিয়ে প্রশংসা-নিন্দা কিছুই চাননি। যা স্বাভাবিক, যা নিজস্ব, তা স্বাভাবিক ভাবে গ্রহণ করাতেই বেশি খুশি ছিলেন তিনি। দেশে ফিরলেন। বলিউডে যাত্রা শুরু হল তার। একের পর এক ছবি হিট। কিন্তু কালো শব্দের যত সমার্থক হয় তার নামের সঙ্গে জুড়তে থাকল একের পর এক।
খবর : আনন্দবাজার’র।
বিনোদন