সুপ্রভাত ডেস্ক »
অবশেষে দেশীয় গ্যাস অনুসন্ধানে জোর দিচ্ছে সরকার। আন্তর্জাতিক বাজারে অপ্রাপ্যতার সঙ্গে অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধিই এর প্রধান কারণ বলে জানা গেছে। জ্বালানি বিভাগ বলছে, দেশের যেসব খনি ইতোমধ্যে উৎপাদনে রয়েছে তার সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে। খনিগুলোর আশেপাশের একই ধরনের ভূগঠনে গ্যাস অনুসন্ধান জোরদার করা হবে। এতে করে দৈনিক অন্তত ৬০০ থেকে ১০০০ মিলিয়ন ঘনফুট নতুন দেশীয় গ্যাসের সরবরাহ বৃদ্ধির প্রত্যাশা করা হচ্ছে। খবর বাংলাট্রিবিউনের।
যদিও সময় মতো এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে নানা ধরনের সমালোচনা রয়েছে। কিন্ত দেশীয় জ্বালানির উৎপাদন বৃদ্ধির কোনও বিকল্প নেই। সরকার এখন ভোলা এবং বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রের এক্সটেনশনকেই জ্বালানি সংস্থানের সব চাইতে বড় এলাকা বলে বিবেচনা করছে।
জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, বিবিয়ানার মজুত আরও দেড় টিসিএফ বাড়তে পারে। শেভরন বাংলাদেশকে যে নতুন এলাকা দেওয়া হয়েছিল সেখানে অনুসন্ধান চালিয়ে এই সম্ভাবনা দেখা গেছে।
যদিও এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এখনও দিতে বাকি রেখেছে সরকার। তবে প্রতিমন্ত্রী মনে করছেন শিগগিরই এ ঘোষণা দিতে পারবেন তারা।
শেভরন বিবিয়ানা ক্ষেত্র থেকে দুই বছর আগেও প্রতিদিন ১ হাজার ২০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস তোলা হতো। তবে সেই গ্যাসের উৎপাদন এখন কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৪০ মিলিয়ন ঘনফুটে। বিবিয়ানা গ্যাস ক্ষেত্রের আশেপাশের এলাকা অনুসন্ধানের জন্য চায় শেভরন। সরকার সেই অনুমোদন দেওয়ার পর নতুন এলাকায় কাজ শুরু করে শেভরন। এখন এই বর্ধিত অঞ্চলই নতুন আশা জাগাচ্ছে।
ভোলায় দুটি গ্যাস ক্ষেত্র আবিষ্কার করেছে বাপেক্স। উৎপাদন ক্ষমতা থাকলেও সেখান থেকে গ্যাস আনা সম্ভব হচ্ছে না। তবে আরও বেশি গ্যাস পাওয়া গেলে সেখানে নতুন পাইপলাইন বসাতে চায় সরকার। এই পাইপলাইন বসানোর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনের আগে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ভোলার গ্যাস দিয়ে বরিশাল এবং খুলনার শিল্প কারখানা চাঙ্গা করার লক্ষ্য হাতে নিয়েছে সরকার। নির্বাচনের পর ইতোমধ্যে ভোলা থেকে বরিশাল পর্যন্ত পাইপলাইন নির্মাণের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছে জ্বালানি বিভাগ। বাপেক্স সূত্র বলছে, ভোলাতেই আরও পাঁচটি কূপ খনন করা হবে। এই পাঁচটি কূপেই গ্যাস পাওয়া গেলে এর আশেপাশের এলাকায় অনুসন্ধান চালানো হবে। বিস্তৃর্ণ দ্বীপে নতুন করে গ্যাস পাওয়ার আশাও করছে বাপেক্স।
জ্বালানি বিভাগ বলছে, ২০২৫ থেকে ২০২৮ সালের মধ্যে স্থলভাগে আরও ৫০টি কূপ খনন করতে চায় তারা। ২০৩০ সালের মধ্যে ১০০টি কূপ খনন করবে। এতে করে দেশীয় গ্যাসের উৎপাদন ৬০০ থেকে এক হাজার মিলিয়ন ঘনফুট বাড়তে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে কূপ খনন শেষ হলেই বলা যেতে পারে কতটা গ্যাসের উৎপাদন বাড়বে। দেশের খনিগুলোর মধ্যে সিলেট গ্যাস ফিল্ড এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে নতুন কূপ খনন করা সম্ভব বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ইজাজ হোসেন বলেন, আমরা অনেক দিন থেকে বলে আসছি দেশীয় গ্যাসের উৎপাদন বাড়াতে হবে। সরকার দেরিতে হলেও বিষয়টির দিকে নজর দিয়েছে। আমরা মনে করি এর মাধ্যমে দেশের জ্বালানি সংকট সমাধান সম্ভব। এভাবে আমদানি নির্ভরতা দেশের জ্বালানি খাতকে দুর্বল করে।