নিজস্ব প্রতিবেদক »
আমদানি করা ফলের বাজার চড়া। এজন্য এলসি (ঋণপত্র) খোলার জটিলতার পাশাপাশি আমদানি শুল্ক বাড়িয়ে দেওয়াকে দায়ী করছেন আমদানিকারকরা। আমদানি কম হওয়ায় বিদেশি ফলের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। ক্রেতার চাহিদা পূরণ করছে দেশীয় ফল।
বন্দরের সর্বশেষ রের্কড অনুযায়ী, চলতি বছরের গত দুই মাসে ৬৪ হাজার ৩১২ মেট্রিক টন ফল আমদানি হয়েছে। যার মধ্যে তাজা ফল ৫০ হাজার ১৮১ মেট্রিক টন, শুকনো ১ হাজার ৯৪৬ মেট্রিক টন। খেজুর আমদানি হয়েছে ১২ হাজার ১৮৫ টন। ডিসেম্বরের তুলনায় জানুয়ারিতে ফল আমদানি কমেছে প্রায় ২ হাজার মেট্রিক টন।
আমদানি শুল্ক বাড়ার বিষয়ে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের উপ কমিশনার ব্যারিস্টার মো. বদরুজ্জামান মুন্সি বলেন, ‘রোজার আগে বাজার সহনীয় রাখতে চাল, চিনি, তেল ও খেজুরে শুল্ক কর কমিয়েছে সরকার। শুধু ব্যবসায়ীরা রাজস্ব ফাঁকি দিতে যে সব ফলের ক্ষেত্রে মূল্য অনেক কম দেখানো হতো, মূলত আন্ডার ইনভয়েসিংয়ে যে সুযোগটি ছিল, তা প্রতিহত করা হয়েছে।’
তবে বিদেশি ফল আমদানিকারকদের অভিযোগ, কোন ধরনের কারণ ছাড়াই বিদেশি ফলের আমদানিতে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ শুল্কহার বাড়িয়ে ফলের বাজারকে অস্থির করে তুলছে। আগে যে মানের আপেল, কমলা কিংবা মাল্টায় প্রতি কেজিতে শুল্ক দিতে হতো ৬২ টাকা, তা এখন দিতে হচ্ছে ৮৮ টাকা। আঙ্গুরে ৯৮ টাকার স্থলে দিতে হচ্ছে ১১৯ টাকা।
বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইম্পোটার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. তৌহিদুল আলম বলেন, ‘শুল্ক হার বৃদ্ধির কারণে আমদানিকারকরা বিদেশি ফল আমদানিতে আগ্রহ হারাচ্ছে।’
আঙ্গুর ফল আমদানিকারক মির্জা আহসান ভূঁইয়া বলেন, ‘আমরা যে মানের ফল ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা খরচে নিয়ে আসতে পারতাম, এখন তার জন্য শুল্ক দিতে হয় ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা।’
মাল্টা ও আপেল আমদানিকারক জামিলুর রহমান বলেন, ‘প্রতি ১২ কেজি ওজনের আপেলের প্যাকেটে কাস্টমসকে শুল্ক দিতে হয় ১ হাজার ১৭৬ টাকা। তার মধ্যে দেশভেদে ভিন্ন ভিন্ন খরচ বহন করতে হয়। এর মধ্যে রয়েছে আমদানি বুকিংয়ে মার্জিন রেট জটিলতা, অনেক সময় ব্যাংকও এলসি করাতে চায় না। অন্যান্য বছরের রমজানের চেয়ে চলতি রমজানে সকল ধরনের বিদেশি ফলের দাম বাড়তি থাকবে।’
ক্রেতা ঝুঁকছে দেশীয় ফলে
রোববার নগরীর স্টেশন রোডের ফলমন্ডি ও রেয়াজউদ্দিন বাজার ফলের আড়ত ঘুরে দেখা যায়, বর্তমানে পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি আপেল ২৪০ থেকে ২৬০ টাকা যা খুচরায় ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সেই সঙ্গে পাইকারিতে আমদানির কমলার কেজি ১৭০ টাকা হলেও খুচরায় ২০০ টাকা। পাইকারিতে মাল্টার কেজি ২৩০ টাকা, খুচরা তা ২৫০ টাকা। প্রতি কেজি আঙ্গুর পাইকারিতে ২৬৫ টাকা, খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ২৮০ টাকা।
এদিকে আমদানির ফলের দাম বাড়ায় ক্রেতা আগ্রহ বাড়ছে দেশীয় চাষের ফলের দিকে বলে জানান খুচরা ফল ব্যবসায়ীরা।
রেয়াজউদ্দিন বাজারের ময়না এন্টারপ্রাইজের খুচরা ফল বিক্রেতা জসিম উদ্দিন বলেন, অন্যান্য বছর রমজানের আগে যে মানের আপেল ১২০ টাকায় পাওয়া যেত তা এখন কিনতে হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়। আবার একটু উন্নত জাতের আপেল হলে ২৫০ টাকায় কিনতে হয়। এত দামে ক্রেতারা কিনছে না।
দেশি ফলের প্রতি ক্রেতার আগ্রহ বেশি জানিয়ে খুচরা বিক্রেতা মাসুদ বলেন, ‘বাজারে দেশি চাষের নানা ফল কম দামে পাওয়াতে ক্রেতারা বিদেশি ফল কম কিনছে।
আমদানিকৃত ফলের দাম চড়া
ক্রেতা ঝুঁকছে দেশীয় ফলে