বিবিসি বাংলা :
পাকিস্তানের একটি যাত্রীবাহী বিমান করাচিতে বিধ্বস্ত হয়েছে।
পিআইএর জেট বিমান এ-৩২০ লাহোর থেকে যাত্রী ও ক্রু মিলিয়ে ৯৯জনকে নিয়ে করাচি যাচ্ছিল। করাচির একটি আবাসিক এলাকায় বিমানটি ভেঙে পড়ে।
পাকিস্তানের বিমান চলাচল কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন পাকিস্তান ইন্টারন্যাশানাল এয়ারলাইন্সের (পিআইএ) বিমানটিতে ৯১ জন যাত্রী এবং আটজন বিমান কর্মী ছিলেন। লাহোর থেকে বিমানটি যাত্রা শুরু করে পাকিস্তানের অন্যতম ব্যস্ত একটি বিমানবন্দর করাচির জিন্নাহ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাচ্ছিল।
বিমানবন্দর থেকে বিমানটি মাত্র প্রায় এক মিনিটের দূরত্বে ছিল।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করা ছবিতে দেখা যাচ্ছে করাচির যে আবাসিক এলাকায় বিমানটি ভেঙে পড়েছে সেখান থেকে ধোঁয়ার কুণ্ডলি উঠছে।
করাচির আবাসিক এলাকায় যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত
উদ্ধারকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। এলাকার বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
“বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে করাচিতে, আমরা ঠিক কতজন যাত্রী বিমানে ছিল তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি। কিন্তু প্রাথমিকভাবে বিমানে ৯৯জন যাত্রী এবং আটজন ক্রু ছিলেন,” জানাচ্ছেন পাকিস্তান বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র আবদুল সাত্তার খোখার।
বিমানটি করাচির জিন্নাহ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করতে যাচ্ছিল। বিমানবন্দরের প্রায় দুই মাইল উত্তর পূর্বে করাচির মডেল কলোনি নামে একটি এলাকায় বিমানটি ভেঙে পড়ে।
সরু রাস্তার জন্য উদ্ধারকাজের জন্য যানবাহন এবং অ্যাম্বুলেন্স পৌঁছতে বেগ পেতে হচ্ছে। প্রচুর মানুষ সেখানে জড়ো হয়েছে।
পাকিস্তান সেনা বাহিনী বলেছে তাদের দ্রুত মোকাবেলা বাহিনীর সৈন্যরা দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে উদ্ধার কাজে সহায়তার জন্য।
পাকিস্তানের করাচিতে ভেঙে পড়েছে যাত্রীবাহী বিমান
স্থানীয় হাসপাতালগুলোয় জরুরিকালীন অবস্থা জারি করা হয়েছে।
করোনাভাইরাস লকডাউনে বন্ধ থাকার পর মাত্র কয়েকদিন আগে দেশটিতে বাণিজ্যিক বিমান চলাচল আবার শুরু হয়েছে।
রমজানের শেষে ঈদ উদযাপনের প্রস্তুতিতে অনেকেই এখন শহরে ও গ্রামে তাদের বাড়িতে যাচ্ছে।
দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে এখনও নিশ্চিতভাবে কিছু জানা যায়নি। পিআইএ-র প্রধান নির্বাহী এয়ার ভাইস মার্শাল আরশাদ মালিক বলছেন পাইলট ট্রাফিক কন্ট্রোলকে জানিয়েছিলেন যে বিমানে “যান্ত্রিক ত্রুটি” দেখা যাচ্ছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন তিনি দুর্ঘটনার খবরে “মর্মাহত এবং দু:খিত” এবং অবিলম্বে ঘটনার তদন্তের প্রতিশ্রুতি তিনি দিয়েছেন।
পাকিস্তানের বিমান নিরাপত্তা রেকর্ড
২০১০ সালে, বেসরকারি বিমান সংস্থা এয়ারব্লু পরিচালিত একটি বিমান বিধ্বস্ত হয় ইসলামাবাদের কাছে। ওই দুর্ঘটনায় ১৫২জন যাত্রীর সবাই মারা যায়। সেটি ছিল পাকিস্তানের বিমান চলাচলের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা।
২০১২ সালে, পাকিস্তানের ভোজা এয়ার পরিচালিত বোয়িং ৭৩৭-২০০ দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় রাওয়ালপিণ্ডিতে অবতরণ করার সময় বিধ্বস্ত হয়। ১২১জন যাত্রী এবং ছয়জন ক্রু-র সবাই প্রাণ হারান।
আর ২০১৬ সালে, পাকিস্তান ইন্টারন্যাশানাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চল থেকে ইসলামাবাদ যাবার সময় আগুন ধরে যায় ও বিমানটি বিস্ফোরিত হয়ে ৪৭জন মারা যায়।