আফগানিস্তানকে বিধ্বস্ত করে ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকা

দলের জয় নিশ্চিত করে হেনড্রিকস ২৯ আর মার্করাম ২৩ রানে অপরাজিত ছিলেন। ছবি: ক্রিকইনফো

সুপ্রভাত স্পোর্টস ডেস্ক »

দক্ষিণ আফ্রিকা আফগান রূপকথা প্রলম্বিত হতে দিল না। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম সেমিফাইনাল হলো ভীষণ একপেশে। প্রোটিয়া পেসারদের বিধ্বংসী বোলিংয়ে সংক্ষিপ্ততম সেমিফাইনালে ৯ উইকেটের বিশাল জয়।

আগে ব্যাটিং বেছে  টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে সবচেয়ে কম ৫৬ রানে গুটিয়ে যাওয়ার তিক্ত রেকর্ডে নাম লেখায় আফগানিস্তান।  ৬৭  বল বাকি থাকতে ওই রান তুলে আনন্দে মাতে ক্রিকেটের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী দল দক্ষিণ আফ্রিকা।

প্রথমবার বিশ্বকাপের ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকা। ওয়ানডে টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে সাতবার বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠলেও প্রতিবারই যন্ত্রণায় পুড়তে হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকাকে।  ফাইনালে উঠতে না পারায় চোকার্স তকমাও জুটেছে।

টস জিতে ব্যাটিং বেছে যেন নিজেদের মহাবিপদ ডেকে আনে আফগানিস্তান। প্রোটিয়া পেসারদের আগুনে পুড়ে ছারখার হতে থাকে তারা। ইয়ানসেনের প্রথম ওভারে লোভনীয় ড্রাইভ খেলতে গিয়ে স্লিপে ক্যাচ দেন কোন রান না করা রাহমানুল্লাহ গুরবাজ। এই বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের ওপেনাররা ব্যর্থ হলে মিডল অর্ডার সেটা সামাল দিতে পারেনি, এবার তাদের কোন অর্ডারই তাল পায়নি।

ইয়ানসেন তার পরের ওভারে ভেতরে ঢোকা বলে উড়িয়ে দেন গুলবদিন নাইবের স্টাম্প। রাবাদা বল করতে এসে পর পর দুই বলে স্টাম্প উপড়ান ইব্রাহিম জাদরান ও মোহাম্মদ নবির।

নাঙ্গিয়াল খারোতিকে আগে নামানো হয়েছিলো। ইয়ানসেনের পেস বুঝতে পারেননি তিনিও। একমাত্র যে ব্যাটার দুই চারে দুই অঙ্কে গেছেন সেই আজমতুল্লাহ ওমরজাই শিকার আনরিক নরকিয়ার তাতে ২৮ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে খাদের কিনারে চলে যায় আফগানরা।

পেসাররা ৬ উইকেট ফেলার পর আক্রমণে আসেন তাবরাইজ শামসি। এসেই তিনি এক ওভারে তুলে নেন করিম জানাত ও নূর আহমেদকে। শেষ দিকে নাবিন উল হককে এলবিডব্লিউ করে ইনিংস মুড়েও দেন তিনি। এর আগে আফগান অধিনায়ক রশিদ খানের স্টাম্প উড়িয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার পেস শক্তির ছবি দেখান নরকিয়া। আফগান ইনিংসের সর্বোচ্চ ১৩ রান আসে অতিরিক্ত খাত থেকে। ওমরজাই ছাড়া বাকি কেউ ছুঁতে পারেননি দুই অঙ্ক।

৫৭ রান তাড়ায় দ্বিতীয় ওভারে ফজলহক ফারুকির বলে কুইন্টেন ডি কক ফিরেছিলেন বটে তবে তাতে ম্যাচের প্রভাব ছিলো না। এবার বিশ্বকাপে রান না পাওয়া দুই ব্যাটার রেজা হেনড্রিকস ও অধিনায়ক মার্করাম মিলে কাজটা সারেন অনায়াসে। দলের জয় নিশ্চিত করে হেনড্রিকস ২৯ আর মার্করাম ২৩ রানে অপরাজিত ছিলেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

আফগানিস্তান: ১১.৫ ওভারে ৫৬ (গুরবাজ ০, জাদরান ২, নাইব ৯, ওমারজাই ১০, নাবি ০, খারোটে, জানাত ৮, রাশিদ ৮, নুর ০, নাভিন ২, ফারুকি ২*; ইয়ানসেন ৩-০-১৬-৩, মহারাজ ১-০-৬-০, রাবাদা ৩-১-১৪-২, নরকিয়া ৩-০-৭-২, শামসি ১.৫-০-৬-৩)।

দক্ষিণ আফ্রিকা: ৮.৫ ওভারে ৬০/১ (ডি কক ৫, হেনড্রিকস ২৯*, মারক্রাম ২৩*; নাভিন ৩-০-১৫-০, ফারুকি ২-০-১১-১, রাশিদ ১-০-৮-০, ওমারজাই ১.৫-০-১৮-০, নাইব ১-০-৮-০)।

ফল: দক্ষিণ আফ্রিকা ৯ উইকেটে জয়ী।

ম্যান অব দা ম্যাচ: মার্কো ইয়ানসেন।

দলের জয় নিশ্চিত করে হেনড্রিকস ২৯ আর মার্করাম ২৩ রানে অপরাজিত ছিলেন।