আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমেপ্লেক্সে জনবল সংকট
সুমন শাহ্, আনোয়ারা<
করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। সন্দেহজনকরাও নমুনা পরীক্ষার জন্য উপজেলা হাসপাতালে প্রতিনিয়ত ভিড় করছে। তবে হাসপাতালের মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট তিন জনের স্থানে রয়েছেন একজন। এরমধ্যে প্রতিদিন করোনা নমুনা সংগ্রহ থেকে শুরু করে সব ধরণের পরীক্ষা করছেন শুধু একজনই। আবার সেটা পাঠানোর জন্য যাচ্ছেন নিজেও। মানুষের বাড়তি চাপে হিমশিম খাচ্ছে, তবুও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে থেমে নেই প্রদীপ। এমনটায় বলছিলেন চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমেপেস্নক্স টেকনোলজিস্ট ল্যাবের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট প্রদীপ দে।
বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালে অনেকে নমুনা সংগ্রহ করতে এসেছেন। রোগীর নাম-ঠিকানা লিখে দেওয়া থেকে প্রাথমিক এসব কাজ করে দেওয়ার মতো কোনো লোক না থাকায়, তাকে একাই সব সামলাতে হয়। উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে করোনা উপসর্গ বা সন্দেহ নিয়ে হাসপাতালে ৩০ জন নমুনা সংগ্রহ করিয়েছেন। নমুনা সংগ্রহ থেকে শুরু করে সব ধরনের পরীক্ষা করছেন একজন টেকনোলজিস্ট ও তার সহকারী। মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টদের স্বল্পতা থাকায় হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদেরকে। কোনো কারণে যদি হাসপাতালে নমুনা সংগ্রহ বন্ধ হয়ে যায়, উপজেলার মানুষ চরম বিপাকে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনত্মব্য করছেন অনেকেই। এমন পরিস্থিতিতে জরম্নরি-ভিত্তিতে এ হাসপাতালে জনবল বৃদ্ধির প্রয়োজন বলে মনে করেন সেবা নিতে আসা রোগীরা। এ পর্যনত্ম তারা উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ২৩২ জন নমুনা সংগ্রহ করেছে। এদের মধ্যে ২৫ জনের করোনা পজিটিভ আসে এবং সুস’ রয়েছেন ৯জন আর একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা যায়।
আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমেপ্লেক্স ল্যাবের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট প্রদীপ দে জানান, করোনা ভাইরাসের শুরম্ন থেকে আমি নিজে একা কাজ করে যাচ্ছি। সেবা দিয়ে যাচ্ছি করোনা উপসর্গ বা সন্দেহ করে নমুনা দিতে আসা রোগীদের। করোনা নমুনা সংগ্রহ থেকে শুরু করে সব ধরণের পরীক্ষা আমি নিজেই করছি এবং ফৌজদারহাট বিআইটিআইডির ল্যাবে নমুনা নিয়ে নিজে যাচ্ছি ও পাঠাচ্ছি। আমরা সকালে আসি, রাতে বের হই। তারপরও আড়্গেপ নেই। আমাদের ল্যাবের কাজের পাশাপাশি জনবল সংকটের কারণে স্যাম্পল কালেকশনের জন্য রোগীর বাসায় কিংবা হাসপাতালে যেতে হচ্ছে। তবে জনবল সংকটের সমাধান করা খুব প্রয়োজন। সুরক্ষার জন্য নেই কোনো উন্নত মানের মাস্ক ও পিপিই।
তিনি আরো জানান, আমাদের নিরাপত্তার জন্য নেই কোনো আলাদা যানবাহন। যেতে হয় হাসপাতারের অ্যাম্বুলেন্স বা নিজের ভাড়া করা গাড়িতে করে। ঘরে আমার বৃদ্ধ মা, ক্যান্সার আক্রানত্ম বাবা, স্ত্রী ও সন্তানের সঙ্গে একই বাসায় থাক যে কতটা ঝুঁকিপূর্ণ আমার জন্য, সেটা অনত্মত আমি বুঝি। কিছুই করার নেই, জীবন যতক্ষণ রয়েছে ততক্ষণ এ সেবা দিয়ে যাব।
এবিষয়ে জানতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু জাহিদ মোহাম্মদ সাইফুদ্দীন মুঠোফোনে একাধিক বার ফোন করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।