নিজস্ব প্রতিনিধি, আনোয়ারা :
আনোয়ারায় মাছের ফাঁড় দখল নিয়ে দু’গ্রুপের সংঘর্ষে আবদুল কাদের (৫০) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। রোববার উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের উপকূলীয় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, রোববার সকালে উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের উত্তর পরুয়াপাড়া এলাকার ঈদগাঁ ঘাটের জেলে আবদুল রশিদের বোটে আবদুল কাদের মাছ ধরতে যায় সাগরে। এ সময়ে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার ফাঁড় দখল নিয়ে রশিদ ও তাহেরের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত ও বাঁশের আঘাতে আহত আবদুল কাদের (৪১) পাড়ে এসে নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটে। জেলে আবদুল কাদের উত্তর পরুয়াপাড়া তাহের মাঝি বাড়ির মৃত বশির আহমদের পুত্র। ঘটনার পর আনোয়ারা থানা পুলিশ একই এলাকার উত্তর পরুয়াপাড়া পাইকের বাড়ির মৃত ছৈয়দ নুরুরের পুত্র মোহাম্মদ তাহের (৩৫) কে গ্রেফতার করে।
সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সরেজমিনে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, পরুয়াপাড়া এলাকার ঈদগাঁ ঘাট ও বাতিঘর ঘাটে বঙ্গোপসাগরের মাছ ধরার ফাঁড় দখল নিয়ে রশিদ ও তাহেরের লোকজন ছাড়াও আরো একটি সিন্ডিকেট নেতাদের সাথে দীর্ঘদিন বিরোধ চলে আসছে। সে বিরোধের জেরে রোববার সাগরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানান এলাকাবাসী।
নিহতের ছোট ভাই আবদুর রশিদ বলেন, আমার ভাই একজন প্রবাসী, কয়েক মাস আগে বিদেশ থেকে আসছে। সে আমার বোটে সাগরে মাছ ধরতে যায়। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বঙ্গোপসাগরের ইলিশ মাছের ফাঁড় নিয়ে কথা কাটাকাটি হয় তাহেরের সাথে। এক পর্যায়ে তাহের তাকে বাঁশ দিয়ে আঘাত করে। আহত অবস্থায় সে পাড়ে এসে মারা যায়। মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসি এবং চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তার ময়নাতদন্তের জন্য। তার স্ত্রী, তিন ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।
নিহতের স্ত্রী ফাতেমা বেগম (৫০) বলেন, তিনি দুই মাস হচ্ছে বিদেশ থেকে আসছে। তিনি খুবই কর্মমুখী মানুষ ছিলেন। সংসারের কারণের বোটে যান মাছ ধরার জন্য। কিন্তু এসব বিরোধ তিনি জানতেন না। আজ তাদের বিরোধের বলি হলেন তিনি। এ হত্যার বিচার চাই।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মৌলানা মোহাম্মদ ইসহাক বলেন, পরুয়াপাড়া ঘাট ও বাতিঘর ঘাটের ফাঁড় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় একে অপরে সাথে বিরোধ চলে আসছে। সেদিনও আবদুল কাদের মাছ ধরতে গেলে তাহের ও রশিদের লোকজন সাগরে ফাঁড় দখল নিয়ে মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে বলে শুনেছি। পরে জানতে পারি আবদুল কাদের মারা গিয়েছে।
রায়পুর ইউনিয়ন মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ ছমদ বলেন, জেলেদের মধ্যে মারামারি ঘটনা ঘটেছে তা সেটা জেনেছি। আবদুল কাদের স্ট্রোক করে মারা গেছে বলে শুনেছি।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী জেলে আবদুর রহিম (৩০) বলেন, পুরো ঘটনা দেখেছি কিন্তু মাঝির নির্দেশ ছাড়া কিছু বলতে পারব না। আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দুলাল মাহমুদ বলেন, এ ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কেউ অভিযোগ বা মামলা করেনি। কেউ যদি মামলা বা অভিযোগ করেন তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নিহত আবদুল কাদেরের শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসলে জানা যাবে কি কারণে মৃত্যু হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ঘটনার পর সন্দেহজনক একজনকে আটক করা হয়েছে।