সুমন শাহ ,আনোয়ারা »
ভরা মৌসুমেও ‘ইলিশ মোকাম’ হিসেবে পরিচিত আনোয়ারা উপকূলে রায়পুরের সরেঙ্গা, পূর্ব গহিরা, ফকিরহাট, গলাকাটা ঘাট, বাতিঘর, ধলঘাট, বার আউলিয়া, উঠান মাঝির ঘাট, দোভাষী ঘাট ও ছিপাতলী ঘাট, জুঁইদন্ডী সাপমারা খালের মুখ এবং বারশতের পারকী বাজারসহ ১২টির অধিক ঘাটের মিলছে না ইলিশ। সাগরে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে জেলেরা নদীতে নামলেও অনেকটা খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে তাদের। কাঙ্খিত পরিমাণ ইলিশের দেখা না পাওয়ায় দাদনের টাকা পরিশোধ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন জেলেরা। জানা গেছে, ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে জেলেরা সাগরে মাছ শিকারে যাওয়ার কথা থাকলেও উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তার কাছাকাছি এলাকায় সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে শুরুতেই কয়েকদিন ধরে সাগর উত্তাল ছিল।
এসময় উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের বার আউলিয়া, ধলঘাট, ফকিরহাট, বাইন্যার দিঘি, দক্ষিণ সরেঙ্গা, দোভাষী বাজার ও ছিপাতলী ঘাট এলাকায় মাছ ধরার ট্রলার নিয়ে সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিলেও যেতে পারেন নি জেলেরা।
কয়েকটি ট্রলার ইলিশের খোঁজে সাগরে যাত্রা করলেও বৈরি আবহাওছার কারণে আবারও ঘাটে ফিরে এসেছে।
স্থানীছ মৎস্যজীবঢ মাহমুদুল হক বলেন, এ বছর ইলিশ ধরার শুরুতেই গত বছরের মত এখনো বড় আকারের মাছ ধরা পড়েনি। গত কয়েকদিন ধরে যে পরিমাণ মাধ ধরা পড়েছে মৎস্যজীবিদের জালে মাছ গুলো মাঝারি ও ছোট আকারের।
যার কারণে এ সব মাছের বাজার দর ও চাহিদাও অনেক কম থাকে তাই মৎস্যজীবীদের লোকসানের ভয়ও বেশি। তিনি আরো বলেন, বর্তমানে মাঝারি আকারের মাছ প্রতি মণ ১৩ হাজার আর ছোট আকারের ইলিশ প্রতিমণ ৮ থেকে ৭ হাজার টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। ইলিশগুলো চট্টগ্রাম শহরের সদর ঘাট ও ঢাকার যাত্রা বাড়ির পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে। তবে করোনা আর লকডাউনের কারণে পরিবহণ ও অন্যান্য খরচ অনেক বেড়ে যাওয়ায়ও দুঃশ্চিন্তা শেষ নেই।
মধ্যম গহিরা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি সভাপতি ছালে আহমদ জানায়, আনোয়ারার উপকূলের বাসিন্দাদের জীবন জিবিকা হল নদী ও সাগরে মাছ ধরে। প্রকৃতির বৈরীতার সাথে যুদ্ধ করে মৃত্যুে ভয় এড়িয়ে সাগরে মাছ ধরেন মৎস্যজীবীরা। দীর্ঘ অপেক্ষার পর গত ২৪ জুলাই থেকে সাগরে ইলিশ মাছ ধরতে যান আনোয়ারার ২ হাজারেরও বেশি মৎস্যজীবী।
উপকূলের কাছে কিংবা দূরে মাছ ধরতে যাওয়া মৎস্যজীবীদের প্রত্যাশা ছিল বড় আকারের ও বেশি পরিমাণ মাছ ধরতে পারার কিন্তু গত ৪ দিন মাছ ধরে সে প্রত্যাশা পূরণ না হওয়ায় বেশির ভাগ মৎস্যজীবীর মাঝে হতাশা দেখা দিলেও আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহে বড় মাছ পাওয়ার আশা সকলের। আনোয়ারা উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মো.রাশিদুল হক বলেন, উপকূলে বেশি পরিমাণ ইলিশ ধরা পড়ায় এলাকায় খুশির আমেজ বিরাজ করছে। আনোয়ারায় ৩৫৮৯ জন নিবন্ধিত মৎস্যজীবী রয়েছে তাদের মধ্যে ২ হাজারের বেশি মৎস্যজীবী সাগরে ইলিশ মাছ ধরে থাকেন।