নিজস্ব প্রতিনিধি, আনোয়ারা :
উপজেলাকে ঘোষণা করা হয়েছে রেড জোন। আক্রান্ত ব্যক্তি বা তার স্বজনেরা ঘুরছে এলাকায়। মানছেন না কেউ লকডাউনও। ইতিমধ্যে প্রতিদিন বাড়ছে করোনা সংক্রমণের সংখ্যা। অনেকেই শনাক্ত হচ্ছেন যার কোনো ট্রাভেল হিস্ট্রিরি নেই। তারা স্থানীয়ভাবেই আক্রান্তহচ্ছেন বলেও অনেকেইর ধারণা। এ পর্যন্তউপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে নমুনা সংগ্রহ করেছে ৫৭৯ জন। তারমধ্যে করোনা আক্রানেত্মর শনাক্ত হয়েছেন ৯৬ জন, প্রাণ হারিয়েছেন একজন ও সুস্থ হয়েছেন ২৯ জন। এদের অনেকেই চট্টগ্রাম শহরে বসবাস করেন।
প্রথম দিকে শহর থেকে আসা এক ব্যক্তির দেহে করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া গেলেও এখন উপজেলা ছেড়ে কোথাও যাননি এমন মানুষেরও করোনা শনাক্ত হচ্ছে। করোনার সংক্রমণ দিন দিন বাড়লেও মানুষের মাঝে কমছে সচেতনতা। ঘরের বাইরে লোকজন মাস্ক পরলেও অনেকেই নাক-মুখের নিচে নামিয়ে রাখছেন। সামাজিক দূরত্ব দূরে ঠেলে গাদাগাদি করে উঠছেন বিভিন্ন বিশেষ করে সিএনজি অটোরিকশা। উপজেলার হাট-বাজারগুলো এখন থাকছে লোকে-লোকারণ্য। আর গ্রামের মোড়ে মোড়ে মানুষের সচেতনতা আরও কম। মাস্ক ছাড়াই ঘুরে বেড়াচ্ছেন অনেকে। প্রশাসন প্রথম দিকে একটু কঠোর অবস্থানে থাকলেও বর্তমানে দেখা নেই প্রশাসনের মনিটরিংও।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার চাতরী চৌমুহনী বাজার, বন্দর কমিউনিটি সেন্টার, কোরিয়ান কেইপিজেড ইয়াংওয়ান গেইটে, বটতলী রুসত্মমহাট, আনোয়ারা সদর, জয়কালী বাজার, হাইলধর মালঘর বাজারসহ বিভিন্ন গ্রাম গঞ্জের কোথাও মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। যে যার মতো করে চলাফেরা করছে। উপজেলা প্রশাসন স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে অভিযান চালালেও সুফল আসছে না।
অভিযান চলাকালে স্বাস্থ্যবিধি মানলেও অভিযান শেষ হলেই যে লাউ সেই কদু। বিভিন্ন শপিংমল, হাটবাজারগুলোকে বিকাল ৪টা পর্যন্তখোলা রাখার নির্দেশনা দিলেও মানছেন না কেউ। গ্রামীণ হাট-বাজারগুলোতে স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই বললেই চলে। বিভিন্ন গ্রামগঞ্জে সন্ধ্যার পর থেকে ঝোঁপ ঝাড়ে বসে যুবকসহ বিভিন্ন বয়সের লোকেরা মেতে উঠেন জুয়ার আসর ও বিভিন্ন নেশার আসর নিয়ে। সড়ক বা মহাসড়কে পুলিশিং টহল থাকলেও এ পর্যন্তকোনোদিনও প্রশাসন গ্রাম গঞ্জের বিভিন্ন স্থানে ঘুরেও দেখেনি বলেও জানিয়েছে স্থানীয়রা। এছাড়াও একজন আরেকজনের সাথে গা ঘেঁষে কেনাকাটা করতে দেখা যায়। চায়ের দোকানে জমে উঠে আড্ডা। দেশে যে করোনাভাইরাস নামক মহামারী চলছে তা যেন কারো খবরই নেই। গত ১৫ এপ্রিল আনোয়ারা উপজেলায় প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হন। উপজেলার ওষখাইন গ্রামের ৪৮ বছরের ওই ব্যক্তি চট্টগ্রাম বন্দরের লোড-আনলোডের শ্রমিক ছিলেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জোবায়ের আহমেদ বলেন, মাস্ক না পরাসহ অন্যান্য অপরাধ নিয়ন্ত্রণে উপজেলা জুড়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত তৎপর রয়েছে। সন্ধ্যা ৬টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত জরুরি সেবা ব্যতীত দোকানপাট বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। মানুষের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে জরিমানাও করা হচ্ছে। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে প্রশাসন সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।