সুপ্রভাত ডেস্ক »
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম কোনো সাবেক প্রেসিডেন্ট হিসেবে আদালতে বিবাদীর কাঠগড়ায় দাঁড়াতে চলেছেন ডনাল্ড ট্রাম্প। অবৈধভাবে অর্থ প্রদানের একটি অভিযোগে গত ৩০ মার্চ নিউ ইয়র্কের ম্যানহ্যাটনের গ্র্যান্ড জুরি আদালত ট্রাম্পকে অভিযুক্ত করেন।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ওঠা এই অভিযোগের মূলে রয়েছেন স্টর্মি ড্যানিয়ালস নামে একজন সাবেক পর্ন তারকা। যিনি অভিযোগ করেছেন, ট্রাম্পের সঙ্গে তার যৌন সম্পর্ক ছিল এব ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ওই সম্পর্কের বিষয়ে মুখ বন্ধ রাখতে ট্রাম্প গোপনে তার আইনজীবীর মাধ্যমে তাকে মোটা অংকের অর্থ প্রদান করেন।
ড্যানিয়ালসের এই অভিযোগ যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ইতিহাসকেই নাড়িয়ে দিয়েছে বলা যায়। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের আইনে সাবেক ওই পর্ন তারকার সঙ্গে ট্রাম্পের সম্পর্ক থাকা নিয়ে কোনো বাধা নেই। কিন্তু গোল বেঁধেছে গোপনে অর্থ প্রদান নিয়ে। যদিও ট্রাম্প তার বিরুদ্ধে আনা এ অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন।
কিন্তু ট্রাম্পের সাবেক যে আইনজীবীর নাম নিয়েছেন ড্যানিয়ালস, তিনি সেই অর্থ লেনদেনের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। ট্রাম্পের সাবেক ওই আইনজীবী বর্তমানে অন্য একটি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছে সাজা পেয়েছেন।
ট্রাম্পকে অভিযুক্ত করা হলেও তার বিরুদ্ধে ঠিক কী কী অভিযোগ আনা হচ্ছে সে বিষয়ে এখনো পরিষ্কার করে কিছু জানানো হয়নি।
মঙ্গলবার এ মামলার শুনানির আগে হয়তো অভিযোগের বিষয়ে পরিষ্কার তথ্য পাওয়া যাবে। এদিন যেভাবে ট্রাম্পকে আদালতে তোলা হতে পারে সে বিষয়ে সিএনএন একটি পূর্বানুমান প্রকাশ করেছে।
সিএনএন জানায়, খুব সম্ভবত মঙ্গলবার স্থানীয় সময় বিকালে ট্রাম্প আদালতে হাজির হবেন। তারপর জেলা অ্যাটর্নি অফিস থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হবে এবং তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের শুনানির জন্য তাকে আদালতকক্ষে হাজির করা হবে। ছয়টি পয়েন্টে ট্রাম্পের আদালতে হাজির হওয়া ও আদালত ত্যাগের চিত্র তুলে ধরেছে সিএনএন।
জেলা অ্যাটর্নি কার্যালয়: গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তাদের ট্রাম্পকে জেলা অ্যাটর্নি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা। ম্যানহ্যাটনের যে ভবনে আদালত সেই একই ভবনে জেলা অ্যাটর্নির কার্যালয়। খবর বিডিনিউজ।
আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া: অ্যাটর্নির কার্যালয় থেকে ট্রাম্পকে তদন্তকর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। সেখানে তার হাতের আঙুলের ছাপ নেওয়া হতে পারে। তারপর সাধারণত (মাগশর্ট) মুখম-লের ছবি তোলা হয়। কিন্তু ট্রাম্পের বেলায় তেমনটা হবে কিনা সে বিষয়ে সিএনএনকে নিশ্চিত করে কিছু জানাতে পারেননি এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
আদালত কক্ষ: সেখান থেকে ট্রাম্পকে আদালত কক্ষে নিয়ে যাওয়া হবে। এ সময় ট্রাম্পকে হাতকড়া পরানো হবে না বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
অভিযোগ দায়ের: ট্রাম্পকে আদালত কক্ষে হাজির করার পর তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো পড়ে শোনানো হবে এবং আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ দায়ের করা হবে। আদালত শুনানি কার্যক্রম শুরু করবেন। শুনানির পর ট্রাম্পকে বাড়ি যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।
আদালত কক্ষ ত্যাগ: শুনানি শেষে ট্রাম্প পাবলিক হলওয়ে ধরে হেঁটে যাবেন এবং জেলা অ্যাটর্নির কার্যালয়ের পেছনের করিডর দিয়ে বের হয়ে যেখানে তাকে নিতে তার গাড়িবহর অপেক্ষা করছে সেখানে যাবেন।
মার-আ-লাগোতে ফিরে যাবেন: অ্যাটর্নি কার্যালয় থেকে ট্রাম্প সরাসরি বিমানবন্দরে যাবেন এবং সেখান থেকে ফ্লোরিডায় তার আবাস মার-আ-লাগো রিসোর্টে ফিরে যাবেন। সেখানে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তার জনসম্মুখে বক্তৃতা দেওয়ার কথা রয়েছে।