নিজস্ব প্রতিনিধি, নাইক্ষংছড়ি »
নাইক্ষ্যংছড়ির দৌছড়ি ইউনিয়নের সীমান্তে মিয়ানমার অভ্যন্তর থেকে একের পর এক মর্টার ও আর্টিলারি বোমা বিস্ফোরণ ও গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। শনিবার দুপুর ১টার দিকে এ শব্দ শোনা যায়।
জানা গেছে, শনিবার নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের ৪,৬,৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের চেরারমাঠ সীমান্তের ৪৪, ৪৫, ৪৬ ও দৌছড়ি ইউনিয়নের ৪৭ পিলার পুরান মাইজ্জা ক্যাম্প, অংচাফ্রি ক্যাম্প ও সালি ডং ক্যাম্পের তাদের চৌকি থেকে অগণিত মর্টার ও আর্টিলারি বোমা বিস্ফোরণের আওয়াজ শোনা যায়।
সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নুরুল আবছার ইমন বলেন, শনিবার দুপুর ১টা থেকে ওপার থেকে গোলাগুলি ও আর্টিলারি মর্টারশেল বিস্ফোরণের আওয়াজে এপারের বেশ কয়েকটা গ্রাম কেঁপে উঠেছে। যেন এপারে ভূমিকম্প হচ্ছে এমনটি মনে হয়েছে।
এদিকে জামছড়ি জামে মসজিদে যোহরের নামাজ পড়তে আসা মুসল্লি, মোয়াজ্জেম ও ইমাম জানিয়েছেন, ওপারে বিস্ফোরণের আওয়াজে যোহরের নামাজের সময় অনেকটা ভয় কাজ করেছিল।
দৌছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ইমরান জানান, শনিবার দুপুর ১টা থেকে মিয়ানমারের অভ্যন্তর থেকে ভারী অস্ত্রের বিস্ফোরণ শোনা গেছে। এতে সীমান্তবর্তী বেশ কয়েকটা গ্রাম কেঁপে ওঠেছে। এদিকে সীমান্তের কাছে না যাওয়ার জন্য স্থানীয়দের কাছে বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
বিজিবির সূত্র জানিয়েছে, সীমান্তের কাছে কাউকে যেতে দেওয়া হচ্ছে না এবং বিজিবির টহল জোরদার রয়েছে। বিজিবি সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ৪৪ পিলার নিকটবর্তী আবদুর রহমান, মো. হাশেম ওরসাহাব মিয়া জানান, প্রথমে তারা বাড়ি না ছাড়লেও বেলা ২টার পর সীমান্তের কয়েকটি গ্রাম থেকে লোকজন নিজেদের গরু-ছাগল নিয়ে আশ্রয় নিয়েছে আমতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। পরে বিভিন্ন নিরাপদ স্থানে লোকজন আশ্রয় নিচ্ছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা ফেরদৌস বলেন, ঘটনায় কিছু লোক সীমান্ত থেকে পালিয়ে আসার খবর পেয়ে তাদের নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অস্থায়ী আশ্রয় শিবির খোলা হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে লোকজনকে শিবিরে নিয়ে আনার ব্যবস্থা করছেন তারা।
এরই মধ্যে ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্ত এলাকায় স্থলমাইন বিস্ফোরণে একজনের প্রাণ গিয়েছে, অঙ্গহানি ঘটেছে দুজনের। গোলা বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছেন সীমান্তে শূন্যরেখায় অবস্থান নেওয়া এক রোহিঙ্গা যুবক।
এ সব ঘটনায় দেশটির রাষ্ট্রদূতকে বেশ কয়েকবার ডেকে কড়া প্রতিবাদ জানায় ঢাকা। এর মধ্যেই এবার দোছড়ি সীমান্ত এলাকায় গোলাগুলির আওয়াজ পাওয়া গেল।
স্থানীয় কয়েকজন জনপ্রতিনিধির সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, গত ২৮ আগস্ট থেকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে মর্টার শেল, গোলাগুলির শব্দ আর সীমান্ত ঘেঁষে যুদ্ধ বিমানের আনাগোনা দেখা গেলে সীমান্তবাসী আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টার শেল বাংলাদেশের ভূখ-ে এসে বিস্ফোরিত হয়ে হতাহতের ঘটনা ঘটলে সরকারের কড়া প্রতিবাদের মুখে তা কিছু দিন বন্ধ ছিল।