নিজস্ব প্রতিবেদক »
শারদীয় দুর্গাপূজায় আজ বিজয়া দশমী। পাঁচদিনব্যাপী শারদ উৎসবের শেষ দিন আজ। প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে হিন্দুধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় এ উৎসব। নগরের পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত, কালুরঘাট ও ফিরিঙ্গি বাজার/ অভয়মিত্র ঘাটে প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হবে। এ উপলক্ষে এসব এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
গতকাল (২৩ অক্টোবর) ছিল মহানবমী। এদিনে রামকৃষ্ণ মিশন সেবাশ্রম, চট্টেশ্বরী কালী মন্দির, জেএম সেন হল পূজাম-প, কৈবল্যধামসহ কয়েকটি ম-পে শাস্ত্রীয় বিধি মেনে ‘মহানবমী’ পূজা উদযাপন করা হয়। দেবীর বন্দনায় ভক্তকুলে ছিল ভিন্ন এক আবহ। ঢাকঢোল, কাঁসর-ঘণ্টাসহ বিভিন্ন বাদ্য, ধূপারতি ও দেবীর পূজা-অর্চনায় ছিল বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস। সেই সঙ্গে ছিল একটি মানবিক ও সুন্দর পৃথিবীর জন্যে প্রার্থনা। এদিন সকাল থেকে চট্টগ্রামসহ সারাদেশের ম-পে শুরু হয় আনুষ্ঠানিকতা।
পুরাণ মতে, এ তিথিতে দেবী দুর্গার আশীর্বাদ নিয়ে লঙ্কার রাজা রাবণকে বধ করেছিলেন দশরথপুত্র শ্রীরামচন্দ্র। এছাড়া ১০৮টি নীলপদ্ম দিয়ে দেবী দুর্গার পূজা করেছিলেন তিনি। তাই এ মহানবমীতে ষোড়শ উপাচারের সঙ্গে ১০৮টি নীলপদ্মে পূজিত হয়েছেন দেবী দুর্গা।
চট্টগ্রাম নগরে এবার ২৯৩টি পূজাম-পে শারদীয় দুর্গা উৎসব পালিত হচ্ছে। আজ প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হবে। বিসর্জনের প্রস্ততি নিয়ে কথা হয় চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদ-এর সাধারণ সম্পাদক হিল্লোল সেন উজ্জ্বলের সঙ্গে । তিনি বলেন, এবার চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধানে ৩টি জায়গায় বিসর্জন সম্পন্ন হবে। এর মধ্যে রয়েছে নেভাল-২/ ফিরিঙ্গি বাজার, কালুরঘাট এবং পতেঙ্গা। প্রধান বিসর্জন সম্পন্ন হবে দুপুর ১২টায় পতেঙ্গায়। প্রায় সবগুলো বিসর্জন একই সময়েই শুরু হবে। আমাদের স্বেচ্ছাসেবক আছেন। তারা সকাল ১১টা থেকে প্রস্তত থাকবেন। বিসর্জন কর্মসূচি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর সাথে আমাদের আলোচনা হয়েছে। আশা করি সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে বির্সজন কর্মসূচি শেষ হবে।
নিরাপত্তা নিয়ে কথা বলেছেন সিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (এডিসি) স্পিনা রানী প্রামাণিক। তিনি বলেন, বিজয়া দশমী সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে সকল ধরনের প্রস্ততি নিয়েছে সিএমপি। প্রধান বিসর্জনের জন্য পতেঙ্গার মূল সৈকতের বেড়িবাঁধ ও পারকির চর বিচকে নির্বাচন করা হয়েছে। প্রতিমাবহনকারী যানবাহনগুলোর আগমন ও বহির্গমন রুট নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রতিমাবহনকারী গাড়িগুলো সিমেন্ট ক্রসিংয়ের বামে মোড় নিয়ে বিমানবন্দর হয়ে সি-বিচে প্রবেশ করবে। এছাড়া আশপাশ থেকে আগত প্রতিমাবাহী গাড়িগুলো বারেক বিল্ডিং, নিমতলা মোড়, কাস্টমস মোড়, সল্টগোলা, ইপিজেড ক্রসিং, সিমেন্ট ক্রসিং, গুপ্তখাল, বিমানবন্দর ও বাটারফ্লাই ক্রসিং হয়ে পতেঙ্গা বিচে প্রবেশ করবে। সেখানে প্রতিমা বিসর্জনের পর যানবাহনগুলো কাঠগড়, স্টিল মিল বাজার ও সিমেন্ট ক্রসিং হয়ে বেরিয়ে যাবে। একই রকম ব্যবস্থা কালুরঘাট ও নেভাল-২ তেও নেয়া হয়েছে। প্রতিটি ঘাটে পর্যাপ্ত সেনাসদস্য মোতায়ন থাকবে।