সুপ্রভাত ডেস্ক »
আগামী বাজেটের আকার হতে পারে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা।
আগামী ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের বাজেট সম্প্রসারণমূলক বাজেট প্রণয়নের পরিকল্পনা থাকলেও তা থেকে সরে আসতে হচ্ছে। রাজস্ব প্রাপ্তির অনিশ্চয়তার কারণেই পরিকল্পনা বদলাতে হচ্ছে। বাজেটের আকার আট লাখ কোটি টাকার নিচে রাখতে হবে।
এখন পর্যন্ত যে হিসাব করেছে অর্থমন্ত্রণালয়- তাতে দেখা যায়, আগামী ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের বাজেটের আকার হতে পারে সাত লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। যা চলতি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে মূল বাজেটে চেয়ে মাত্র ৪ দশমিক ৬ ভাগ বেশি। আবার সংশোধিত বাজেট থেকে এর আকার বাড়বে সাড়ে ১১ ভাগ। কিন্তু এর আগে বাজেটের আকার ১৪ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি করা হতো।
উল্লেখ্য, চলতি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের মূল বাজেটের আকার রয়েছে সাত লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। গত মাসে তা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে সাত লাখ ১৪ হাজার ৪১৮ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটের আকার কমানো হয়েছে মূল বাজেটের থেকে ৬ দশমিক ২৩ শতাংশ। টাকার অঙ্কে যার পরিমাণ ৪৭ হাজার ৩৬৭ কোটি টাকা।
এদিকে, আগামী বাজেটে ঘাটতিই ধরা হয়েছে দুই লাখ ৫৫ হাজার কোটি টাকা। জিডিপি’র অংশ হিসেবে এই ঘাটতির পরিমাণ ৪ দশমিক ৬ শতাংশ। অন্যদিকে, আগামী অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনের প্রবৃদ্ধি (জিডিপি) ধরা হয়েছে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে যা ছিল ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। পরে তা কমিয়ে সাড়ে ৬ শতাংশ করা হয়। কিন্তু বিশ্বব্যাংক পূর্বাভাষ দিয়েছে চলতি অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে বড়জোড় ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। আর বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আকার ধরা হয়েছে দুই লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে যা ছিল দুই লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে ১৮ হাজার কোটি টাকা কমিয়ে এডিপি’র আকার করা হয়েছে দুই লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকা।
সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ‘আর্থিক, মুদ্রা ও মুদ্রা বিনিময় হার সংক্রান্ত কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিল’ এবং ‘বাজেট ব্যবস্থাপনা ও সম্পদ কমিটি’র বৈঠকে এই সিদ্ধান্তগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে । সভা সম্পর্কে জানতে চাইলে অর্থ বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সভায় আগামী অর্থবছরের বাজেটে প্রাক্কলিত একটি আকার নির্ধারণ করা হয়েছে। এটিই চুড়ান্ত আকার নয়। এরপর আগামী মে মাসের ৫ থেকে ৯ তারিখের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বাজেট নিয়ে অর্থমন্ত্রী আলোচনা করবেন। আর সেখানেই আগামী অর্থবছরের বাজেটের প্রকৃত আকার নির্ধারণ করা হবে। সে সময় প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনা অনুযায়ী আরও কিছু সংযোজন ও বিয়োজন করা হবে।
উল্লেখ্য, চলতি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর ২০২৩) মাত্র ২৬ শতাংশ বাজেট বাস্তবায়িত হয়েছে। বাজেট বাস্তবায়নের এ হার আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১ শতাংশ কম। গত ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের একই সময়ে বাজেট বাস্তবায়নের হার ছিল ২৭ শতাংশ।
অর্থ বিভাগের করা পরিসংখ্যানে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরে মোট সাত লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বিপরীতে অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে মোট ব্যয় হয়েছে ১ লাখ ৯৪ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর ২০২৩) ৮৪ হাজার ৬২১ কোটি টাকা (বাস্তবায়ন হার ১১ শতাংশ) এবং দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর ২০২৩) ১ লাখ ৯ হাজার ৮২৩ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে (বাস্তবায়ন হার ১৫ শতাংশ)।