কালুরঘাট সেতু পরিদর্শনে রেলমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক :
আগামী বছরের শুরুতেই হচ্ছে কালুরঘাট সেতুর নির্মাণ কাজ। আর সড়ক ও রেল উভয় যানবাহন এক সেতুতেই চলাচল করবে। সড়কপথে উভয় লেন এবং রেলপথে ডুয়েল গেজ ট্রেন চলাচলের ব্যবস্থা থাকবে সেতুতে। আগামী বছরের জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারিতে এর নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে ২০২২ সালে গিয়ে শেষ হবে।
গতকাল বুধবার কালুরঘাট রেলসেতু পরিদর্শনে রেলপথ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন একথা বলেন।
রেলপথ মন্ত্রী বলেন, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে সেতুর নির্মাণ উচ্চতা নিয়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) সাথে যে বিরোধ ছিল তা মীমাংসা হয়ে গেছে। আমরা বিদ্যমান উচ্চতা ৪ মিটারের স্থলে ৭ দশমিক ৫ মিটার রাখছি। যেহেতু এই পয়েন্টটি ঝড় থেকে মুক্ত এবং বড় জাহাজ চলাচল করে না, তাই এ উচ্চতায় সেতু নির্মাণে কোনো জটিলতা নেই। বিআইডব্লিইটিএ ১২ মিটার বললেও এখানে এর প্রয়োজনীয়তা নেই।
সেতুর ডিজাইন প্রসঙ্গে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, রেল ও সড়ক সেতু পৃথকভাবে করার যে প্রস্তাবনা ছিল, তা এখন আর নেই। প্রধানমন্ত্রী সরাসরি এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন সড়ক ও রেল একই সেতুতে হবে এবং সেভাবেই নকশা চূড়ান্ত করতে। আমরা তা করেছি। এখন দুই লেনের সড়ক এবং ডুয়েল গেজ রেল লাইন বসবে। সড়কে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার গতিতে এবং ট্রেন ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার গতিতে চলাচল করতে পারবে এই সেতু দিয়ে।
কবে নাগাদ এই সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হবে তা জানতে চাইলে রেলমন্ত্রী বলেন, আগামী জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে কিংবা মার্চে নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে ২০২২ এ শেষ হবে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এজন্য রেলওয়েতে জনবল নিয়োগের কার্যক্রমও শুরু হবে। সেতুটি কে নির্মাণ করবে জানতে চাইলে রেলমন্ত্রী বলেন, রেলপত্র মন্ত্রণালয় এই সেতু নির্মাণ করবে।
কালুরঘাট সেতু পরিদর্শনের সময় রেলপথ মন্ত্রীর সাথে স্থানীয় সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দিন আহমেদ, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানসহ রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
কালুরঘাট সেতু নির্মাণ চট্টগ্রামবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল। বর্তমান সরকার ২০০৮ সালের নির্বাচনে ক্ষমতায় আসার পর থেকে তা নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল। সেতুর কাজ শুরু করতে না পারার আক্ষেপ নিয়ে মারা গেছেন তৎকালীন সংসদ সদস্য মঈনুদ্দিন খান বাদল। বর্তমান সংসদ সদস্যও নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে তা নিয়ে সোচ্চার। অবশেষে এই সেতুর ডিজাইন চূড়ান্ত হলেও সেতুর উচ্চতা নিয়ে আপত্তি উত্থাপন করে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ। এছাড়া সেতুটি সড়ক ও রেল উভয় যানবাহন চলাচলের জন্য একইরকম হবে কিনা তা নিয়েও সমস্যা দেখা দেয়। সেতুর প্রস্তাবিত নকশায় সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে সেতুর উচ্চতা ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ২ মিটার। কিন্তু বিআইডব্লিউটিএ বলছে, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে সেতুর উচ্চতা হতে হবে ১২ দশমিক ২ মিটার। এতে সেতুর বর্তমান নকশা তৈরি নিয়ে দ্বিধায় পড়েছিল রেলওয়ের সেতু বিভাগ।
উল্লেখ্য, দোহাজারি-ঘুমদুম রেল লাইন প্রকল্পের অধীনে ২০২২ সালে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ট্রেন চলাচলের কথা। আর তা করতে গিয়ে এই রেললাইন বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। কিন্তু চট্টগ্রাম থেকে দোহাজারি পর্যন্ত রেল লাইন সংস্কারের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো কর্ণফুলী নদীর উপর কালুরঘাট সেতু।