‘নগরকে নান্দনিক, বসবাস উপযোগী, গ্রিন সিটি হিসেবে রূপান্তর করতে হলে পর্যায়ক্রমে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা ও আধুনিকায়নের উপর গুরুত্ব দিতে হবে। এক্ষেত্রে মান্ধাতার আমলের প্রক্রিয়াগুলোর পরিবর্তন করতে হবে। অর্থাৎ বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় উন্নত ও উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের মডেল অনুসরণ করে আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে।’
মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রাম সিটি কপোরেশন বাটালিহিলস্থ অস্থায়ী নগর ভবনের সম্মেলন কক্ষে ২৪ নম্বর উত্তর আগ্রাবাদ ওয়ার্ড আবাসিক এলাকার সমন্বয়ক ফোরামের সাথে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আধুনিকায়ন বিষয়ে মতবিনিময় সভায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে জাপানের জাইকা ও দক্ষিণ কোরিয়ার কোইকা কর্তৃক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সম্ভাব্যতা যাচাই বাছাই করে কিছু প্রস্তাবনা চট্টগ্রাম সিটি কপোরেশনকে দেয়া হয়েছে। এরই আলোকে মেডিক্যাল বর্জ্য অপসারণ করার জন্য হালিশহরস্থ আনন্দবাজারে টিজি পাশে ইনসিনেরেটর প্লান্ট স্থাপন করা হয়। জাইকা তাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ইনসিনেরেটর (চুল্লী) স্থাপন করছে। এ ইনসিনেরেটর প্ল্যান্টের মাধ্যমে বিষাক্ত মেডিক্যাল বর্জ্য পুড়িয়ে ফেলার মাধ্যমে পরিবেশ দূষণ থেকে রক্ষার পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আইনে উৎপন্ন বর্জ্য উৎপত্তিস্থল থেকে গৃহস্থলী, প্লাস্টিক, ধাতব এ তিন ভাগে করে অপসারণ করার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। ঢাকাসহ অন্যান্য সিটি করপোরেশন সমূহে এই নির্দেশনা পালন করা হচ্ছে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় মনে করে জনবল সংকট ও আর্থিক সাশ্রয় বিবেচনায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা ও আধুনিকীকরণে আউটসোর্সিং এর কোন বিকল্প নেই। বাস্তবতা নিরিখে বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে চট্টগ্রাম সিটি কপোরেশন ২৪ ও ০৭ নম্বর ওয়ার্ডকে পরীক্ষামূলকভাবে আউটসোর্সিং এর আওতায় আনায় প্রক্রিয়া গ্রহণ করছে। পর্যায়ক্রমে ৪১টি ওয়ার্ডে আউটসোর্সিং পদ্ধতি বাস্তবায়ন করা হবে।
চট্টগ্রাম সিটি কপোরেশনের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মো. আবুল হাশেমের সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন সমন্বয় ফোরামের সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মো. আতাউল্লাহ, জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া, মো. মহসিন, মো. এনামুল হক, এএম জহিরুল আলম, শহিদুল্লাহ পাটোয়ারী, সাবেক কাউন্সিলর মো. জাবেদ নজরুল ইসলাম, পরিচ্ছন্ন বিভাগের জোন প্রধান আলী আকবর প্রমুখ।
তিনি বলেন, সমন্বয় ফোরামের নেতৃবৃন্দের সাথে আউটসোসিং এর মাধ্যমে বর্জ্য অপসারণের বিষয়ে যে মতবিনিময় হয়েছে তা ফলপ্রসূ। তবে কোন কিছু জোর করে চাপিয়ে দেয়ার কোন অবকাশ থাকতে পারে না। কোন পরিবর্তন রাতারাতি আনা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে সকলের সহযোগিতা ছাড়া কোন পদ্ধতি বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। তিনি আরো বলেন, এ নগরের মালিক হচ্ছে নগরবাসী। নগরবাসীর মতামতের প্রতিফলন ঘটানোই মেয়রের প্রধান দায়িত্ব পাশাপাশি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনাও প্রতি পালন করা কর্তব্য।
সভায় আবাসিক এলাকা সমন্বয় ফোরামের সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম বলেন, মতবিনিময়কালে মেয়রের আন্তরিকতায় ও সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণে মুগ্ধ। আমরা মনে করি চট্টগ্রাম নগর আমাদের সকলের। তিনি আবাসিক এলাকার সমন্বয় ফোরাম বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আধুনিকায়নে ও নগর উন্নয়নে যে কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে তা স্বাগত জানান। তিনি আবাসিক এলাকায় রাস্তা, বিদ্যুৎ, কালভার্ট ও নালাসমূহ পানি চলাচলে প্রতিবন্ধকতা নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীদের তৎক্ষণিক নির্দেশনা প্রদান করায় সিটি মেয়রকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জ্ঞাপন করছেন। বিজ্ঞপ্তি