নিজস্ব ক্রীড়া প্রতিবেদক »
অ্যাডহক কমিটিতে থাকা কেউ জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার নির্বাহী কমিটির নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সর্বশেষ গঠনতন্ত্রে ২৬ অনুচ্ছেদের ২ ধারায় এ ব্যাপারে উল্লেখ আছে। কিন্তু এ ধারা কার্যকর আদৌ হবে কিনা তা নিয়ে আছে সংশয়। কারণ প্রভাবশালীরা চাইলে বিভিন্ন কৌশলে আইন নিজেদের করে নিতে পারেন।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়। এরপর সব পর্যায়ে পরিবর্তনের হাওয়া লাগলে ক্রীড়াঙ্গনও বাদ যায়নি। ২১ আগস্ট এক আদেশে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রনালয় দেশের সকল জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার (পুরুষ ও মহিলা) কমিটি বাতিল করে প্রকৃত ক্রীড়াবিদ, গ্রগনযোগ্য ক্রীড়া সংগঠক ও ক্রীড়ানুরাগীদের নিয়ে অ্যাডহক কমিটি গঠনের নির্দেশনা প্রদান করে।
তবে ৬ আগস্ট থেকেই চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটি নিয়ে বিএনপি ও জমায়েত ঘরোনার ক্রীড়া সংগঠকরা তৎপরতা শুরু করে দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসন আমলে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছীরউদ্দীনের সান্নিধ্যে টানা তিন মেয়াদে থাকা সংগঠকরাই রং বদলে অ্যাডহক কমিটি গঠনে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।
নিজেদের বিএনপি ও জমায়েতের সমর্থক পরিচয়ে তারা এক হয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, নগর বিএনপির সদ্য বিদায়ী সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন, বর্তমান আহবায়ক কমিটির সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান বাবু ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক গোলরক্ষক আমিনুল ইসলামের সাথে দেখা করেছেন বলে জানা গেছে।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, ডা. শাহাদাত হোসেন তাদের উপর অসন্তোষ প্রকাশ করেন। গত ১৫ বছরে চট্টগ্রামে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচের একটি টিকেটও পাননি বলে অভিযোগ করেন তিনি। এ ব্যাপারে তাঁর কাছে যাওয়া ক্রীড়া সংগঠকরা আ জ ম নাছিরউদ্দিনকে দায়ী করেন।
আ জ ম নাছিরউদ্দিনের আপনজন এ ক্রীড়া সংগঠকদের বিরুদ্ধে ক্রীড়া সংস্থায় দীর্ঘ সময় পদ বঞ্চিত ও বিএনপি রাজনীতির সাথে সরাসরি জড়িত বেশ কয়েকজন ক্রীড়া সংগঠকও বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দের কাছে তাদের বিগত কর্মকান্ড নিয়ে অভিযোগ তুলে ধরেছেন। ২৬ আগস্ট (সোমবার) বিকেলে বঞ্চিত ক্রীড়া সংগঠকরা নগরীর এক অভিজাত ক্লাবে সভা আহবান করেছেন।
এদিকে চট্টগ্রামের সন্তান অন্তর্বর্তী সরকারের মুক্তিযুদ্ধ, দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ বিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই- আজম বীর প্রতীক একজন ক্রীড়া সংগঠক হিসেবে সবার কাছে পরিচিত। তিনি চট্টগ্রামের অন্যতম ক্রীড়া সংগঠন ফ্রেন্ডস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ছিলেন এবং দীর্ঘ সময় ধরে চট্টগ্রাম মহানগরী ক্রীড়া সংস্থার সহ সভাপতি হিসেবে আছেন। ফ্রেন্ডস ক্লাবের বেশ কয়েকজন ক্রীড়া সংগঠকও জেলা ক্রীড়া সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন। তাদের মধ্যে দুইজন ক্রিকেট বোর্ডে চট্টগ্রাম জেলার প্রতিনিধি হিসাবে পরিচালক পদ পাওয়ার জোর লবিং করবেন বলে স্টেডিয়াম পাড়ায় গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। বর্তমানে এ পদে আছেন জেলা ক্রীড়া সংস্থার সদ্য বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছীরউদ্দীন।
অ্যাডহক কমিটিতে সর্বনিম্ন ৭ জন ও সর্বোচ্চ ১৫ জন থাকতে পারবেন। পদাধিকার বলে জেলা প্রশাসক সভাপতি হিসেবে থাকবেন। বাকিদের মধ্য থেকে সাধারণ সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষসহ অন্য পদে তিনি দায়িত্ব বন্টন করবেন। চট্টগ্রামের নতুন জেলা প্রশাসক দায়িত্ব নিয়ে অ্যাডহক কমিটি গঠনের উদ্যোগে নেবেন বলে জেলা প্রশাসন সূত্র নিশ্চিত করেছে।