সুপ্রভাত ক্রীড়া ডেস্ক
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের শুরু থেকেই বেশ দাপট দেখাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। দুই সেঞ্চুরিতে প্রথম ইনিংসে তারা রানের পাহাড় গড়েছে। ভারতীয় বোলারদের নাস্তানাবুদ করে অলআউট হওয়ার আগে প্যাট কামিন্সের দলের সংগ্রহ ৪৬৯ রান। সর্বোচ্চ চার উইকেট নিয়েছেন পেসার মোহাম্মদ সিরাজ। এর আগে কয়েকটি নজির গড়ে জোড়া সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন দুই অজি ব্যাটার স্টিভ স্মিথ ও ট্র্যাভিস হেড।
বড় রানের জবাবে শুরুতেই দুই উইকেট হারিয়েছে ভারত। কিছুটা আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে আউট হয়ে যান অধিনায়ক রোহিত শর্মা। ২৬ বলে মাত্র ১৫ রান করা রোহিতকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেছেন অজি অধিনায়ক কামিন্স। তখন তাদের দলীয় রান ছিল ৩০। ওই রানেই পরের ওভারে ফিরেছেন আরেক ওপেনার শুভমান গিলও। স্কট বোলান্ডের বল বাঁ-পা বাড়িয়ে ছেড়ে দিয়ে তিনি যে ভুল করেছেন, তা টের পেতে ক্ষাণিকটা দেরি করে ফেলেছেন। ততক্ষণে তার অফ স্টাম্প উড়ে গেছে। ফর্মে থাকা গিল আউট হওয়ার আগে করেছেন ১৫ বলে ১৩ রান।
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের প্রথম দিন খেলা হয়েছিল ৮৫ ওভার। ইংল্যান্ডের কেনিংটন ওভালে প্রথম দিনের পুরোটাই ছিল অস্ট্রেলিয়ার নিয়ন্ত্রণে। স্মিথ-হেডের ২৫১ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে অস্ট্রেলিয়া ৩ উইকেটে ৩২৭ রানে দিন শেষ করে। হেড অপরাজিত ছিলেন ১৪৬ রানে। সেখান থেকে দ্বিতীয় দিন আর ১৭ রান তুলতেই ফিরে যান হেড। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে প্রথম সেঞ্চুরি হাঁকানো এই ব্যাটার ১৭৪ বলে ২৫ চার ও একটি ছয়ের সাহায্যে ১৬৩ রান করেন। এটি টেস্টে তার পঞ্চম সেঞ্চুরি।
তবে অভিজ্ঞ স্মিথই হেডকে প্রেরণা জুগিয়েছেন বলে প্রথম দিন শেষে জানিয়েছিলেন তিনি। ৩১তম টেস্ট সেঞ্চুরি করে স্মিথ ছাড়িয়ে গেছেন সাবেক অজি ওপেনার ম্যাথু হেইডেন এবং উইন্ডিজ ব্যাটার শিভনারায়ণ চন্দরপলকে। সাবেক দুই কিংবদন্তী ক্রিকেটার টেস্টে ৩০টি করে সেঞ্চুরি করেছিলেন। একইসঙ্গে স্মিথ বর্তমানে খেলছেন এমন ক্রিকেটারদের মধ্যে সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির মালিকও। তার পরের অবস্থানে থাকা ইংল্যান্ড ব্যাটার জো রুটের সেঞ্চুরি ২৯টি।
১৬টি বাউন্ডারির সাহায্যে ২২৯ বলে ব্যক্তিগত শতরান পূর্ণ করেন স্মিথ। ম্যাচের প্রথম দিনে তিনি ব্যক্তিগত হাফসেঞ্চুরির গণ্ডি টপকান ৭টি বাউন্ডারির সাহায্যে ১৪৪ বলে। শেষমেশ ১৯ বাউন্ডারিতে ২৬৮ বলে ১২১ রান করে তিনি শার্দূল ঠাকুরের বলে বোল্ড হয়ে মাঠ ছাড়েন।
এর আগে প্রথম দিন মাত্র দলীয় রান মাত্র ২ হতেই অভিজ্ঞ ওপেনার উসমান খাজা আউট হয়ে যান। প্রথম আঘাত হানা সিরাজ ইনিংস শেষে ভারতীয় বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ চারটি উইকেট নিয়েছেন। এরপর সেই চাপ ভালোভাবেই সামাল দেন ডেভিড ওয়ার্নার ও মার্নাস লাবুশেন। দুজনের ৬৯ রান জুটির পর ওয়ার্নার ফিফটি থেকে ৭ রান দূরে থাকাবস্থায় আউট হয়ে যান। উইকেটরক্ষক শ্রীকর ভারতের তালুবন্দী করে তাকে ফিরিয়েছেন শার্দূল ঠাকুর।
এর পরপরই শামির সোজা বলে ব্যাট ও প্যাডের ফাঁক গলে বোল্ড হয়ে যান টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর ব্যাটসম্যান লাবুশেন (৬২ বলে ২৬)। তখন ৭৬ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। এরপরই উইকেটে এসে পাল্টা আক্রমণ শুরু করেন টেস্ট ক্রিকেটে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের প্রতীক হয়ে ওঠা হেড। প্রথম ১৯ বলে তিনি করেন ২৮ রান। এরপর গতি কিছুটা কমে আসে। বাঁ-হাতি ব্যাটার ফিফটি পূর্ণ করেন ৬০ বলে। দিনশেষে ১৪৬ রানে হেড এবং স্মিথ ৯৫ রানে অপরাজিত ছিলেন।
দ্বিতীয় দিন দলীয় রানের সঙ্গে ৩৪ রান যোগ করতেই আউট হেড। এবারও ব্রেক থ্রু এনে দেন সিরাজ। এর মাধ্যমে স্মিথ-হেডের ২৮৫ রানের জুটি ভাঙে। শেষদিকে দ্রুত রান তোলেন অ্যালেক্স ক্যারি (৪৮)। এছাড়া আর কোনো ব্যাটার বলার মতো রান পাননি। তবে তার আগেই ৪৬৯ রানের বড় পুঁজি নিয়ে ফেলে অস্ট্রেলিয়া।
সিরাজ ছাড়া ভারতের হয়ে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন শামি ও শার্দূল। এছাড়া রবীন্দ্র জাদেজা একটি উইকেট নিয়েছেন।