অর্থবছরের ৪ মাসে বিদেশি ঋণ পরিশোধ ১৪৪ কোটি ডলার, এসেছে ১২০ কোটি

সুপ্রভাত ডেস্ক  »

বৈদেশিক ঋণের বড় অংশই চলে যাচ্ছে ঋণ পরিশোধে। বাড়ছে সুদ—আসলসহ ঋণ পরিশোধের চাপ। চলতি ২০২৪—২৫ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই—অক্টোবরে) দেশে যে পরিমাণ বৈদেশিক ঋণ এসেছে, তার চেয়ে বেশি পরিশোধ করতে হয়েছে। তবে গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে প্রতিশ্রুতি কমেছে প্রায় ৯০ শতাংশ। কমেছে অর্থছাড়ও।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই—অক্টোবরে) বৈদেশিক ঋণ ছাড় হয়েছে ১২০ কোটি ২০ লাখ ডলার। অথচ এ সময়ে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করতে হয়েছে ১৪৩ কোটি ৭৯ লাখ ডলার।

গত অর্থবছরের জুলাই—অক্টোবরে ঋণ পরিশোধ করতে হয়েছিল ১১০ কোটি ডলার। এ অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে যা ৩৩ কোটি ৬৩ লাখ ডলার বেশি। যার মধ্যে শুধু আসল পরিশোধই বেড়েছে ২৬ কোটি ডলার। তবে চলতি অর্থবছরে কমেছে বৈদেশিক ঋণের প্রতিশ্রুতি।

ইআরডি সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরে পদ্মা রেল সংযোগ, মেট্রোরেল ও কর্ণফুলী টানেলসহ বেশকিছু বড় প্রকল্পের ঋণ পরিশোধ শুরু হয়েছে। যার ফলে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধে আলাদা চাপ তৈরি হয়েছে। অথচ মেট্রোরেল বাদে পদ্মা রেল সংযোগ ও কর্ণফুলী টানেল থেকে তেমন রিটার্ন আসছে না। যা আয় হচ্ছে তার চেয়ে বেশি মেনটেইনেন্সে খরচ হয়ে যাচ্ছে। ফলে সরকারকে নিজস্ব তহবিল থেকে এসব প্রকল্পের ঋণ পরিশোধ করতে হচ্ছে। খবর জাগোনিউজ।

গত অর্থবছরে (২০২৩—২৪) বাংলাদেশের ইতিহাসে রেকর্ড ৩৩৫ কোটি ডলার ঋণ পরিশোধ করতে হয়েছে। যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ৬৮ কোটি ডলার বেশি। এর আগে কোনো এক অর্থবছরে সরকারকে এত পরিমাণ ঋণ পরিশোধ করতে হয়নি। সর্বশেষ ২০২২—২৩ অর্থবছরে ২৬৭ কোটি ডলার ঋণ পরিশোধ করেছিল সরকার।

ইআরডি সূত্র বলছে, মূলত সুদের হার বেড়ে যাওয়ায় ঋণ পরিশোধে অতিরিক্ত চাপ তৈরি হয়েছে। গত অর্থবছরে শুধু সুদ পরিশোধ বেড়েছে ৪১ কোটি ডলার। চলতি অর্থবছরে এই ঋণ পরিশোধের পরিমাণ সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে, চলতি ২০২৪—২৫ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে ঋণের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে ২৫ কোটি ৪৫ লাখ ডলার। যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৩৬২ কোটি ৮৫ লাখ ডলার। অর্থাৎ ২০২৩—২৪ অর্থবছরের তুলনায় প্রতিশ্রুতি কমেছে ৯০ শতাংশ।

ইআরডি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিগত সরকারের সময়ে করা ঋণচুক্তির প্রস্তাবগুলো বর্তমান অন্তর্বতী সরকার নতুন করে পর্যালোচনা করছে। এ কারণে উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে ঋণচুক্তি সম্পন্ন হচ্ছে না। তবে পর্যালোচনা শেষে প্রস্তাবিত ঋণের প্রক্রিয়া শুরু হবে এবং তখন লক্ষ্য অনুযায়ী প্রতিশ্রুতি আদায় হবে বলে আশা করছেন তারা।

কর্মকর্তারা আরও বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) এবং বহুপাক্ষিক ও বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক উন্নয়ন সহযোগী বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রকল্পে ঋণ ও বাজেট সহায়তার প্রাথমিক আশ্বাস দিয়েছে। চলতি নভেম্বরেই বেশ কয়েকটি প্রকল্পে ঋণচুক্তি হয়েছে।