করোনার টিকা নিতে মানুষের মনে আর কোন সংশয় নেই, তাই টিকাদান কেন্দ্রগুলিতে ভিড় বাড়ছে। বয়সের সীমা কমিয়ে আনায় লোকজন ছুটছে টিকা কেন্দ্রে। গতকাল বুধবার টিকাদান কর্মসূচির চতুর্থদিনে নগরের ১১টি টিকা কেন্দ্র ও চট্টগ্রামের ১৪টি উপজেলায় ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ টিকা নিয়েছেন। করোনার টিকা নিয়ে নানা গুজব, অপপ্রচার এখন অনভিপ্রেত বিষয়ে দাঁড়িয়েছে। বেশ কিছু টকশোওয়ালা, কলামিস্ট, ফেসবুক ব্যবহারকারী কিছু উদ্দেশ্যপরায়ন লোক টিকা আনার আগে থেকেই নানা অপপ্রচারে নেমেছে যা অতি দুঃখজনক। রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে শিথিলতার কথা বলায় এবং টিকাদান কেন্দ্রে গেলে টিকা দেওয়া যাবে-এই ঘোষণায় অনেকে সরাসরি টিকাদান কেন্দ্রে যাচ্ছেন, ফলে ভিড় বাড়ছে। কিছু অব্যবস্থাপনার খবরও পত্র-পত্রিকায় এসেছে। নির্ধারিত সময়ের অনেক আগে ওষুধ ফুরিয়ে যাওয়ার খবরে অনেকে বিফল মনোরথ হয়ে বাসায় ফিরেছেন। ভিড় বাড়ায় সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করা যাচ্ছে না। মানুষ নিজেই যদি শৃঙ্খলা মানেন, ছুটাছুটি না করে লাইনে দাঁড়ান তাহলে সমস্যা কম হয়। যারা টিকাদান কেন্দ্রে কাজ করছেন তাদের নির্বিঘেœ কাজ করার সুযোগ দেওয়া বাঞ্ছনীয়। টিকা দেওয়ার পর অস্বস্তিকর অথবা টিকাগ্রহণকারীর কোনো শারীরিক অসুবিধা দেখা দিলে তা প্রতিকারে হাসপাতাল কেন্দ্রগুলিতে টিকাদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। নগরীর লোকসংখ্যা অনুসারে এবং টিকা নিতে লোকজনের মধ্যে আগ্রহ বাড়ায় নগরীর বিভিন্ন প্রান্তে পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধাসহ আরো টিকাদান কেন্দ্র খোলা উচিত। কেন্দ্রগুলিতে বুথ আরো বাড়ানো হলে, কেন্দ্রের পরিসর বিস্তৃত হলে বিশৃঙ্খলা কমে আসবে।
টিকাদান কেন্দ্রে শৃঙ্খলা আনতে প্রয়োজনে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাহায্য নেয়া যেতে পারে। চট্টগ্রাম মহানগরে ১১টি টিকাদান কেন্দ্র খোলা হয়েছে, এই সংখ্যা অন্তত দ্বিগুণ করলে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে। সামনের দিনগুলিতে আরো ভিড় হবে। সুতরাং এখন থেকেই পর্যাপ্ত সুবিধা প্রদানে ব্যবস্থা নিতে হবে। টিকা নিতে গিয়ে অহেতুক বিড়ম্বনা কিংবা টিকা না দিতে পারার মতো পরিস্থিতি এড়ানো উচিত কর্তৃপক্ষের। অগ্রাধিকারপ্রাপ্তদের জন্য বিশেষ বুথ থাকা প্রয়োজন।
করোনা মহামারি বিশ্বব্যাপী এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি যদিও মৃত্যু এবং সংক্রমণ আগের তুলনায় কমেছে। সুতরাং সকল সময়ের জন্য আমাদের স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণে বিশেষ যতœবান হতে হবে। বাইরে গেলে অবশ্যই মাস্ক পরিধান, বাহির থেকে ঘরে এলে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, কাশি শিষ্টাচার মেনে চলা, ভিড় এড়াতে এবং ঘরে বাইরে সর্বত্র পরিষ্কারÑপরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে সচেতন হওয়া একান্ত আবশ্যক। এসব ব্যাপারে আমাদের মধ্যে অসচেতনতা ও ঢিলেঢালা ভাব রয়েছে যা পরিহার করতে হবে। সামনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার কথা চিন্তা করা হচ্ছে। সুতরাং আমাদের আরো বেশি সচেতন হতে হবে যাতে করোনা নতুন করে কোনো বিপর্যয় সৃষ্টি করতে না পারে। সরকার বিনামূল্যে করোনার টিকা দিচ্ছে জনগণকে। এই সুযোগ নিতে সকলে দ্রুত টিকা নিন।
মতামত সম্পাদকীয়