চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রশাসক আলহাজ খোরশেদ আলম সুজন গতকাল সকালে টাইগারপাস নগরভবনে তাঁর কার্যালয়ে ২০১৪-১৫-১৬ সালে অবসরপ্রাপ্ত মোট ৩০ জন চাকরিজীবীকে আনুতোষিক বাবদ মোট ১ কোটি ১৭ লাখ ২০ হাজার টাকার চেক হস্তান্তর করেছেন। এ সময় স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এমপি জুমের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে বলেন, আনুতোষিক একজন অবসরপ্রাপ্ত চাকরিজীবীর ন্যায্য পাওনা। চাকরিবিধি অনুযায়ী এটা তাঁদের প্রাপ্য। কিন্তু চসিকের আর্থিক সক্ষমতা দুর্বল বিধায় আনুতোষিক প্রদানে বিলম্ব হয়ে থাকে। তবে এতে কর্তৃপক্ষের দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহিতা প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার অবকাশ থাকে। তাই প্রশাসক কর্তৃক চসিকের অনিয়ম ও দুর্নীতিরোধ করে ব্যয় সংকোচনপূর্বক মানবিক দিক বিবেচনায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আনুতোষিক প্রদানের এ উদ্যোগ প্রশংসনীয়। তিনি এ জন্য প্রশাসককে ধন্যবাদ জানিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, এই মহৎ উদ্যোগের ধারাবাহিকতা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়নে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের ভূমিকা অপরিহার্য। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামবাসীর প্রতি খুবই আন্তরিক। তিনি চট্টগ্রামে একগুচ্ছ মেগা প্রকল্প উপহার দিয়েছেন। আমিও চট্টগ্রাম দরদি। এই নগরীর মানুষের জন্য ভালো কিছু করে যেতে চাই। এই নগরীর তিন-তিনবারের সফল মেয়র প্রয়াত এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, তিনি চট্টগ্রামের উন্নয়নে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে কাজ করেছেন। চট্টগ্রামের স্বার্থে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন এবং চট্টগ্রামের উন্নয়নে আমৃত্যু নিরলসভাবে নিবেদিত ছিলেন। মন্ত্রী যুবসমাজকে এদেশের চালিকাশক্তি হিসেবে অভিহিত করে বলেন, তারা যেন কোনো অবৈধ ও অনৈতিক কর্মকা-ে যুক্ত না হয়, সে ব্যাপারে সজাগ ও সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।
আনুতোষিক প্রদান অনুষ্ঠানে জুমে যুক্ত হওয়ায় স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলামকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন বলেন, প্রশাসক হিসেবে দায়িত্বগ্রহণ করার পর থেকে আনুতোষিক প্রদানের ব্যাপারে পদক্ষেপ নিই। যারা আনুতোষিকের দাবিদার তাঁরা ২০-২৫ বছর ধরে সেবা দিয়েছেন। আনুতোষিক পাওয়াটা তাদের ন্যায্য অধিকার। আমি চাই না এই অধিকার থেকে তাঁরা বঞ্চিত হোন। নিজের পাওনা আদায়ের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরে জুতার তলা ক্ষয় করাটা কাম্য হতে পারে না। কিন্তু স্বীকার করতে দ্বিধা নেই যে, চসিকের আর্থিক সক্ষমতার ঘাটতির কারণে আনুতোষিক অনাদায় থেকে যাচ্ছে। বহু হিসেব-নিকেষ করে এবং দুর্নীতি ও অনিয়ম কমিয়ে আনুতোষিক যারা পাবেন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ৩২ জনের একটি তালিকা তৈরি করেছি। এই তালিকার ৪ জন মারা গেছেন, এটা খুবই দুঃখজনক। তিনি বলেন, আনুতোষিক পাওনারদের অনেকেই অসুস্থ। কেউ কেউ মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তাই মানবিক বিবেচনায় আনুতোষিক প্রদানের উদ্যোগ নিয়েছি। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ধারাবাহিকভাবে এই উদ্যোগ চলমান থাকবে। যাদের পাওনা কম তারা এককালীন পাবেন এবং যাদের পাওনার অংক বড় তাদেরকে কিস্তিতে পরিশোধ করা হবে।
এ সময় প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মো. মোজাম্মেল হক, প্রশাসকের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম, অতিরিক্ত প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির চৌধুরী, প্রোগ্রামার মোহাম্মদ ইকবাল হাসান, পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোরশেদুল আলম চৌধুরী, সিবিএ সভাপতি প্রকৌশলী ফরিদ আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। বিজ্ঞপ্তি
এ মুহূর্তের সংবাদ