সুপ্রভাত ডেস্ক »
দিনভর নাটকের পর পাকিস্তানের পার্লামেন্টে মধ্যরাতের অনাস্থা ভোটে হেরে ইমরান খানের প্রধানমন্ত্রীত্বের অবসান ঘটল।
ইমরানকে বিদায় করতে পার্লামেন্টের ৩৪২ আইনপ্রণেতার মধ্যে অন্তত ১৭২ জনের সমর্থন প্রয়োজন ছিল বিরোধীদের। সেখানে ১৭৪ ভোট পেয়ে তাদের অনাস্থা প্রস্তাব পাস হয়ে ইমরানের বিদায় নিশ্চিত হয়।
পাকিস্তান পৃথিবীর একমাত্র গণতান্ত্রিক দেশ, যেখানে কোনো সরকারপ্রধান তার মেয়াদের পুরো সময় ক্ষমতায় থাকতে পারেননি। তবে ইমরান খানই পাকিস্তানের প্রথম প্রধানমন্ত্রী, যাকে পার্লামেন্টে আস্থা ভোটে হেরে বিদায় নিতে হল।
দক্ষিণ এশিয়ার এ দেশটির আইনসভা এখন নতুন একজন নতুন প্রধানমন্ত্রী বেছে নেবে। সেজন্য আগামী সোমবার জাতীয় পারিষদে আবার ভোটাভুটি হবে। সেজন্য রোবার বেলা ১১টার মধ্যে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে।
এতদিন বিরোধী দলের আসনে থাকা দলগুলোর জোট ইতোমধ্যে পাকিস্তান মুসলিম লীগের নেতা শাহবাজ শরিফকে তাদের প্রার্থী মনোনীত করেছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ভাই শাহবাজের তোলা অনাস্থা প্রস্তাবেই ইমরান খানের পিটিআই সরেকারের পতন ঘটল।
এই আস্থা ভোট ঠেকাতে নানা নাটকীয়তার জন্ম দিয়েছিলেন ইমরান। গত ৩ এপ্রিল অনাস্থা প্রস্তাব বাতিল করে দিয়েছিলেন ডেপুটি স্পিকার। ইমরানের আহ্বানে পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে আগাম নির্বাচন ডেকেছিলেন প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি।
কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট ওই দুই সিদ্ধান্ত অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করে শনিবার অধিবেশন পুনরুজ্জীবিত করে ভোটাভুটির নির্দেশ দিলে লজ্জানক প্রস্থান এড়ানোর পথ বন্ধ হয়ে যায় ইমরান খানের জন্য।
শনিবার সকাল থেকে দফায় দফায় অধিবেশন মুলতবি, পার্লামেন্টের বাইরে নানা জল্পনা কল্পনা, সেরাপ্রধানকে অপসারণের গুঞ্জন, ইমরানের মন্ত্রিসভার বৈঠক এবং সম্ভাব্য সামরিক শাসন ঠেকাতে গভীর রাতে আদালতে আবেদনের পরিস্থিতি আরও জটিলতার দিকে গড়ানোর ইংগিত দিচ্ছিল।
শেষ পর্যন্ত আদালতের বেঁধে দেওয়া সময় শেষ হওয়ার আগে আগে পদত্যাগ করেন স্পিকার আসাদ কাইসার। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ক্ষমতা থেকে সরাতে তিনি ‘বিদেশি ষড়যন্ত্রে’ অংশ নিতে পারবেন না।
এরপর প্যানেল স্পিকার হিসেবে পিএমএল-এনের আয়াজ সাদিকের সভাপতিত্বে পাকিস্তানের জাতীয় পারিষদে অধিবেশন শুরু হয়। রাত ১১টা ৫৮ মিনিটে শুরু হয় ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি। স্থানীয় সময় রাত ১টার দিকে তিনি ফলাফল ঘোষণা করেন।
ইমরান খানের দল পিটিআইয়ের অধিকাংশ এমপি আগেই অধিবেশ থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। ইমরান নিজেও পার্লামেন্টে ছিলেন না।
পিএমএল-এনের মুখপাত্র মরিয়ম আউরঙ্গজেব জানান, অধিবেশনের সভাপতিত্ব করায় সাদিক নিজে ভোট দিতে পারেননি। পিটিআইয়ের ভিন্নমতাবলম্বীদের ভোটের আর দরকার হয়নি।
সূত্র : বিডিনিউজ